মিল-কারখানা ইত্যাদির
যন্ত্রপাতিরউপর যাকাত ফরয নয়।
তবে মিল-কারখানা থেকে উৎপাদিত পণ্যের উপর যাকাত ফরয।আসবাব-পত্র ইত্যাদি তৈরির উদ্দেশ্যে যে
সব কাঁচামাল কারখানায় রাখা হয়। তারউপর যাকাত ফরয। [ফাতওয়ায়ে শামী: ২/৬৫৫]
২. এ্যাডভান্স/আগাম প্রদানকৃত টাকা :
এ্যাডভান্স/আগাম প্রদানকৃত টাকা যেহেতু
অগ্রিম ভাড়ার অন্তর্ভুক্ত এবং উক্তটাকা প্রদানকারীর মালিকানা তার উপর
রয়েছে তাই তাকেই তার যাকাত আদায় করতেহবে। তবে শর্ত হল নিসাব পরিমাণ হতে হবে। ৩. প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকার যাকাত :
প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা যা এখনোউত্তোলন করা হয়নি, তার উপর যাকাত ফরয নয়; কিন্তু চাকুরি শেষ হওয়ার পর যখনপ্রভিডেন্ট ফা-ন্ডের টাকা হস্তগত হবে, তখন সে টাকা নেসাব পরিমাণ হলে যাকাতআদায় করা ফরয। হস্তগত হওয়ার পূর্বে
প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকার যাকাত আদায়করা ফরয নয়। [কিফায়াতুল মুফতি : ৪]
শেয়ারেরবিভিন্ন অবস্থা হতে পারে। অবস্থাভেদে হুকুম পরিবর্তন হবে। যেমন, যদি কেউশেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করে লাভবান হওয়ার
উদ্দেশ্যে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করে, তাহলে পূর্ণ শেয়ারের
মূল্যের উপর যাকাত দিতে হবে। কেননা, তখন তা ব্যবসায়ীপণ্য বলে গণ্য হবে। আর যদি মুনাফা ভোগের
উদ্দেশ্যে কেউ কোম্পানির শেয়ারক্রয় করে, তখন তাকে ব্যবসায়ী
পণ্য হিসেবে গণ্য করা যায় না। [জাদিদ মায়িশাত ওতিজারাত] শেয়ারের কোন মূল্যের ভিত্তিতে
যাকাত দিবে। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণবিষয়। এ বিষয়ে সমাধান হলো, বর্তমান মূল্য হিসাবে যাকাত দিবে।
অর্থাৎএকব্যক্তি কোন
ব্যবসায়ী কোম্পানীর শেয়ার ক্রয় করে। যখন কোম্পানী শুরু হয়তখন প্রতি শেয়ারের মূল্য ছিল ৫০০/- আর
যখন সে ক্রয় করে তখন তার মূল্য ছিলো১০০০/- কিন্তু বর্তমানে প্রত্যেক
শেয়ারের মূল্য ৫০০/- টাকায় দাড়ালো। এখনতার করণীয় হলো সে বর্তমান মূল্য অনুযায়ী
৫০০/- ধরে যাকাতের হিসাব করবে। [ফতওয়া দারুল
উলূম:৬/১৪৬, রদ্দুল মুহতার: ২/৩০]
৫. হারাম মালের যাকাত বিধান: অবৈধ পন্থায় উপার্জিত সম্পদকে হারাম মাল
বলা হয়। যেমন জুয়া, লটারী, ইত্যাদি। হারাম মালের ক্ষেত্রে আসল
বিধান হচ্ছে, যদি মালিকের নিকট
উক্ত মালপৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়, তাহলে তার নিকট পৌছিয়ে দিবে। তার উপর
যাকাত ওয়াজিবনয়। অন্যথায় সাওয়াবের
নিয়ত না করে বরং হারাম সম্পদের কুফল ও শাস্তি হতেপরিত্রাণের নিয়্যতে সদকা করতে হবে।
[জাদীদ ফেকহী মাসয়িল : ৫০]
৬. হালাল ওহারাম মিশ্রিত সম্পদের উপর যাকাত ফরয।
দুররে মুখতার কিতাবে উল্লেখ করাহয়েছে যে, বাদশাহ যদি জোর
পূর্বক উসূলকৃত সম্পদ নিজস্ব সম্পদের সাথেমিশ্রিত করে ফেলে তবে সে উক্ত সম্পদের
মালিক হয়ে যাবে। অতএব, তার উপর যাকাতফরয হবে। [আদদুররুল মুখতার : ২/৯০]
৭.
অন্যের নিকট পাওয়া টাকার যাকাত : কাউকে টাকা কর্য দেয়া হয়েছে এবং
গ্রহীতাও তা স্বীকার করে আদায়েরপ্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। অথবা প্রদানকারী ব্যক্তির নিকট এমন
প্রমাণাদীরয়েছে যদ্বারা
আদালতের শরণাপন্ন হয়ে তা উসূল করা সম্ভব, এরূপ টাকা/সম্পদেরযাকাত দেয়া ওয়াজিব। এ ধরনের না হলে
পাওনা টাকা হস্তগত না হওয়া পর্যন্তযাকাত ওয়াজিব নয়। [আদ্ দুররুল মুখতার শামী : ২/২৬৭]
৮.
ফেরতযোগ্য বীমার টাকা নিসাব পরিমাণ পৌছার পর ১ বছর অতিক্রান্ত হলে যাকাত দিতে হবে। ৯. বর্তমানে আমাদের দেশে ব্যবসার
উদ্দেশ্যে হাঁস মুরগি ও গরু ইত্যাদির ফার্ম করে থাকে, তাতেও যাকাত ওয়াজিব হবে যদি নেসাব
পরিমাণ হয়।
কোন
ব্যক্তি যদি সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বাসাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মালিক হয়, চাই সে তা ব্যবহার করুক বা না করুক, ঋণমুক্ত অবস্থায় তার কাছে যদি এক বছর
থাকে তাহলে এগুলোর যাকাত দেয়া ফরয।যদি তার নিকট অন্য কোন সম্পদ না থাকে
তাহলে উক্ত স্বর্ণ বা রূপার চল্লিশভাগের এক ভাগ কিংবা সমপরিমাণ মূল্য
যাকাত হিসেবে আদায় করতে হবে। প্রয়োজনেউক্ত স্বর্ণ বা রূপার কিছু অংশ বিক্রি
করে হলেও যাকাত আদায় করা জরুরী। [আদদুররুল মুখতার: খ:২
পৃ: ২৯৫]
১১. টাকা ও স্বণ-রূপা মিলে নেসাব পরিমাণহলে তার হুকুম :
কারো যদি স্বর্ণ বা
রূপার কোন গহনা থাকে কিন্তু নেসাবপরিমাণ না হয়, তাহলে দেখতে হবে উক্ত
গহনার সাথে নগদ টাকা যা সারা বছর হাতেথাকে [চাই তা পাঁচ টাকা বা দশ টাকাই হোক
না কেন] যোগ করলে সাড়ে বায়ান্নতোলা রূপার দামের সমান হয়, তাহলে তার উপর যাকাত আদায় করা জরুরী।
[রদ্দুলমুহতার:খ:২ পৃ:২৯৬, ফতওয়া দারুল উলূম: খ:৬ পৃ:৫০]
“এই ব্লগটির সর্বস্বত্ব উন্মুক্ত। অবিকৃত রেখে এবং ব্লগের সূত্র উল্লেখ করে যে-কোনো বিষয় স্বাধীনভাবে যে-কোনো মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করে ইসলাম প্রচারে অংশ নিতে পারেন।”
0 Comments