আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ﴿ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۢبِكَ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۗ ١٩ ﴾ [محمد : ١٩]
অর্থাৎ তুমি ক্ষমা-প্রার্থনা কর তোমার এবং মুমিন নর-নারীদের ত্রুটির জন্য। (সূরা মুহাম্মাদ ১৯ আয়াত)
তিনি আরও বলেছেন, ﴿ وَٱسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١٠٦ ﴾ [النساء : ١٠٦]
অর্থাৎ আল্লাহর কাছে তুমি ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা নিসা ১০৬ আয়াত)
তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন, ﴿ فَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّكَ وَٱسۡتَغۡفِرۡهُۚ إِنَّهُۥ كَانَ تَوَّابَۢا ٣ ﴾ [النصر: ٣]
অর্থাৎ সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা
কর এবং তাঁর সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় তিনি অধিক তাওবা গ্রহণকারী।
(সূরা নাস্র ৩ আয়াত)
তিনি অন্যত্র বলেছেন,
﴿ لِلَّذِينَ ٱتَّقَوۡاْ عِندَ رَبِّهِمۡ جَنَّٰتٞ تَجۡرِي
مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَا وَأَزۡوَٰجٞ مُّطَهَّرَةٞ
وَرِضۡوَٰنٞ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ بَصِيرُۢ بِٱلۡعِبَادِ ١٥ ٱلَّذِينَ
يَقُولُونَ رَبَّنَآ إِنَّنَآ ءَامَنَّا فَٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا
وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ١٦ ٱلصَّٰبِرِينَ وَٱلصَّٰدِقِينَ
وَٱلۡقَٰنِتِينَ وَٱلۡمُنفِقِينَ وَٱلۡمُسۡتَغۡفِرِينَ بِٱلۡأَسۡحَارِ ١٧ ﴾
[ال عمران: ١٥، ١٧]
অর্থাৎ যারা সাবধান [পরহেজগার] হয়ে চলে তাদের জন্য রয়েছে
উদ্যানসমূহ যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, তাদের
জন্য পবিত্র সঙ্গিনী এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি রয়েছে। বস্তুতঃ আল্লাহ তার
দাসদের সম্বন্ধে সম্যক অবহিত। যারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয় আমরা
বিশ্বাস করেছি; অতএব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা কর এবং দোযখের শাস্তি থেকে
আমাদেরকে রক্ষা কর।’ যারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, দানশীল এবং রাত্রির
শেষাংশে ক্ষমা-প্রার্থী। (সূরা আলে ইমরান ১৫-১৭ আয়াত)
তিনি আরও বলেছেন,
﴿ وَمَن يَعۡمَلۡ سُوٓءًا أَوۡ يَظۡلِمۡ نَفۡسَهُۥ ثُمَّ
يَسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَ يَجِدِ ٱللَّهَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١١٠ ﴾ [النساء :
١١٠]
অর্থাৎ আর যে কেউ মন্দ কার্য করে অথবা নিজের প্রতি জুলুম করে,
কিন্তু পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, সে আল্লাহকে অতীব ক্ষমাশীল, পরম
দয়ালু-রূপে পাবে। (সূরা নিসা ১১০ আয়াত)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمۡ وَأَنتَ فِيهِمۡۚ
وَمَا كَانَ ٱللَّهُ مُعَذِّبَهُمۡ وَهُمۡ يَسۡتَغۡفِرُونَ ٣٣ ﴾ [الانفال:
٣٣]
অর্থাৎ আল্লাহ এরূপ নন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকা অবস্থায়
তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন এবং তিনি এরূপ নন যে, তাদের ক্ষমা প্রার্থনা করা
অবস্থায় তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন। (সূরা আনফাল ৩৩ আয়াত)
তিনি আরও বলেছেন,
﴿ وَٱلَّذِينَ إِذَا فَعَلُواْ فَٰحِشَةً أَوۡ ظَلَمُوٓاْ
أَنفُسَهُمۡ ذَكَرُواْ ٱللَّهَ فَٱسۡتَغۡفَرُواْ لِذُنُوبِهِمۡ وَمَن
يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ إِلَّا ٱللَّهُ وَلَمۡ يُصِرُّواْ عَلَىٰ مَا
فَعَلُواْ وَهُمۡ يَعۡلَمُونَ ١٣٥ ﴾ [ال عمران: ١٣٥]
অর্থাৎ যারা কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা নিজেদের প্রতি
জুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা
করে। আর আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে? এবং তারা যা [অপরাধ] করে
ফেলে তাতে জেনে-শুনে অটল থাকে না। (সূরা আলে ইমরান ১৩৫ আয়াত)
এ প্রসঙ্গে আরও বিদিত বহু আয়াতসমূহ রয়েছে।
আগার্র মুযানী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আমার অন্তর আল্লাহর স্মরণ থেকে
নিমেষভর বাধাপ্রাপ্ত হয়। সেহেতু আমি দিনে একশত বার আল্লাহর নিকট ক্ষমা
ভিক্ষা চাই।’’
মুসলিম ২৭০২, আবূ দাউদ ১৫১৫, আহমাদ ১৭৩৯১, ১৭৮২৭ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মুসলিম ২৭০২, আবূ দাউদ ১৫১৫, আহমাদ ১৭৩৯১, ১৭৮২৭ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, ‘‘আল্লাহর
শপথ! আমি প্রত্যহ আল্লাহর কাছে সত্তর বারেরও বেশি ইস্তিগফার
[ক্ষমাপ্রার্থনা] ও তাওবাহ করে থাকি।’’
সহীহুল বুখারী ৬৩০৭, তিরমিযী ৩২৫৯, ইবনু মাজাহ ৩৮৬১, আহমাদ ৭৭৩৪, ৮২৮৮, ৯৫১৫ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
সহীহুল বুখারী ৬৩০৭, তিরমিযী ৩২৫৯, ইবনু মাজাহ ৩৮৬১, আহমাদ ৭৭৩৪, ৮২৮৮, ৯৫১৫ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘সেই মহান সত্তার
কসম, যার হাতে আমার জীবন আছে! যদি তোমরা পাপ না কর, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা
তোমাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে [তোমাদের পরিবর্তে] এমন এক জাতি আনয়ন করবেন,
যারা পাপ করবে এবং আল্লাহ তা'আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করবে। আর আল্লাহ
তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’’ (মুসলিম)[1]
* [এ হাদিস দ্বারা পাপ করার পর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
করার গুরুত্ব ব্যক্ত করা হয়েছে। পাপ করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়নি। কেননা,
মানুষ মাত্রই ভুলে জড়িত। তাই ভুলে জড়িত হয়ে পড়লে আবশ্যিক-রূপে ক্ষমা চাওয়া
কর্তব্য।]
[1] মুসলিম ২৭৪৯, তিরমিযী ২৫২৬, আহমাদ ৭৯৮৩, ৮০২১ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি এ দো‘আ
পড়বে,
‘আস্তাগ্ফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যূমু অ আতূবু ইলাইহ্।’
অর্থাৎ আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি যিনি ছাড়া
কোন সত্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর। এবং আমি তাঁর কাছে তওবা
করছি।
সে ব্যক্তির পাপরাশি মার্জনা করা হবে; যদিও সে রণক্ষেত্র ছেড়ে
পালিয়ে [যাওয়ার পাপ করে] থাকে।’’ [আবূ দাঊদ, তিরমিযী, হাকেম; ইনি বলেন,
হাদিসটি বুখারী-মুসলিমের শর্তাধীনে বিশুদ্ধ] [1]
[1] আবূ দাউদ ১৫১৭, তিরমিযী ৩৫৭৭ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
0 Comments