সুরা ইউনুস | বাংলা অর্থসহ সূরা আল ইউনুস। |
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ الر تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ الْحَكِيمِ
أَكَانَ لِلنَّاسِ عَجَبًا أَنْ أَوْحَيْنَا إِلَى
رَجُلٍ مِّنْهُمْ أَنْ أَنذِرِ النَّاسَ وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُواْ
أَنَّ لَهُمْ قَدَمَ صِدْقٍ عِندَ رَبِّهِمْ قَالَ الْكَافِرُونَ إِنَّ
هَـذَا لَسَاحِرٌ مُّبِينٌ
মানুষের কাছে কি আশ্চর্য লাগছে যে, আমি ওহী পাঠিয়েছি
তাদেরই মধ্য থেকে একজনের কাছে যেন তিনি মানুষকে সতর্ক করেন এবং সুসংবাদ
শুনিয়ে দেন ঈমনাদারগণকে যে, তাঁদের জন্য সত্য মর্যাদা রয়েছে তাঁদের
পালনকর্তার কাছে। কাফেররা বলতে লাগল, নিঃসন্দেহে এ লোক প্রকাশ্য যাদুকর। [ সুরা ইউনুস ১০:২ ]
إِنَّ رَبَّكُمُ اللّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ
وَالأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُدَبِّرُ
الأَمْرَ مَا مِن شَفِيعٍ إِلاَّ مِن بَعْدِ إِذْنِهِ ذَلِكُمُ اللّهُ
رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ أَفَلاَ تَذَكَّرُونَ
নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরী করেছেন
আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি
কার্য পরিচালনা করেন। কেউ সুপারিশ করতে পাবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই
আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তোমরা কি কিছুই
চিন্তা কর না ? [ সুরা ইউনুস ১০:৩ ]
إِلَيْهِ مَرْجِعُكُمْ جَمِيعًا وَعْدَ اللّهِ حَقًّا
إِنَّهُ يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ لِيَجْزِيَ الَّذِينَ آمَنُواْ
وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ بِالْقِسْطِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ لَهُمْ
شَرَابٌ مِّنْ حَمِيمٍ وَعَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُواْ يَكْفُرُونَ
তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে তোমাদের সবাইকে, আল্লাহর
ওয়াদা সত্য, তিনিই সৃষ্টি করেন প্রথমবার আবার পুনর্বার তৈরী করবেন তাদেরকে
বদলা দেয়ার জন্য যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে ইনসাফের সাথে। আর
যারা কাফের হয়েছে, তাদের পান করতে হবে ফুটন্ত পানি এবং ভোগ করতে হবে
যন্ত্রনাদায়ক আযাব এ জন্যে যে, তারা কুফরী করছিল। [ সুরা ইউনুস ১০:৪ ]
هُوَ الَّذِي جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاء وَالْقَمَرَ
نُورًا وَقَدَّرَهُ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُواْ عَدَدَ السِّنِينَ
وَالْحِسَابَ مَا خَلَقَ اللّهُ ذَلِكَ إِلاَّ بِالْحَقِّ يُفَصِّلُ
الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
তিনিই সে মহান সত্তা, যিনি বানিয়েছেন সুর্যকে উজ্জল
আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে এবং অতঃপর নির্ধারিত
করেছেন এর জন্য মনযিল সমূহ, যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও
হিসাব। আল্লাহ এই সমস্ত কিছু এমনিতেই সৃষ্টি করেননি, কিন্তু যথার্থতার
সাথে। তিনি প্রকাশ করেন লক্ষণসমূহ সে সমস্ত লোকের জন্য যাদের জ্ঞান আছে। [ সুরা ইউনুস ১০:৫ ]
إِنَّ فِي اخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَمَا خَلَقَ اللّهُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ لآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَّقُونَ
নিশ্চয়ই রাত-দিনের পরিবর্তনের মাঝে এবং যা কিছু তিনি
সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীনে, সবই হল নিদর্শন সেসব লোকের জন্য যারা ভয়
করে। [ সুরা ইউনুস ১০:৬ ]
إَنَّ الَّذِينَ لاَ يَرْجُونَ لِقَاءنَا وَرَضُواْ
بِالْحَياةِ الدُّنْيَا وَاطْمَأَنُّواْ بِهَا وَالَّذِينَ هُمْ عَنْ
آيَاتِنَا غَافِلُونَ
অবশ্যই যেসব লোক আমার সাক্ষাৎ লাভের আশা রাখে না এবং
পার্থিব জীবন নিয়েই উৎফুল্ল রয়েছে, তাতেই প্রশান্তি অনুভব করেছে এবং যারা
আমার নির্দশনসমূহ সম্পর্কে বেখবর। [ সুরা ইউনুস ১০:৭ ]
أُوْلَـئِكَ مَأْوَاهُمُ النُّارُ بِمَا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
এমন লোকদের ঠিকানা হল আগুন সেসবের বদলা হিসাবে যা তারা অর্জন করছিল। [ সুরা ইউনুস ১০:৮ ]
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَعَمِلُواْ الصَّالِحَاتِ
يَهْدِيهِمْ رَبُّهُمْ بِإِيمَانِهِمْ تَجْرِي مِن تَحْتِهِمُ الأَنْهَارُ
فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ
অবশ্য যেসব লোক ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদেরকে
হেদায়েত দান করবেন তাদের পালনকর্তা, তাদের ঈমানের মাধ্যমে। এমন সুসময়
কানন-কুঞ্জে র প্রতি যার তলদেশে প্রবাহিত হয় প্রস্রবণসমূহ। [ সুরা ইউনুস ১০:৯ ]
دَعْوَاهُمْ فِيهَا سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ
وَتَحِيَّتُهُمْ فِيهَا سَلاَمٌ وَآخِرُ دَعْوَاهُمْ أَنِ الْحَمْدُ لِلّهِ
رَبِّ الْعَالَمِينَ
সেখানে তাদের প্রার্থনা হল `পবিত্র তোমার সত্তা হে
আল্লাহ'। আর শুভেচ্ছা হল সালাম আর তাদের প্রার্থনার সমাপ্তি হয়, `সমস্ত
প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর জন্য' বলে। [ সুরা ইউনুস ১০:১০ ]
وَلَوْ يُعَجِّلُ اللّهُ لِلنَّاسِ الشَّرَّ
اسْتِعْجَالَهُم بِالْخَيْرِ لَقُضِيَ إِلَيْهِمْ أَجَلُهُمْ فَنَذَرُ
الَّذِينَ لاَ يَرْجُونَ لِقَاءنَا فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ
আর যদি আল্লাহ তা'আলা মানুষকে যথাশীঘ্র অকল্যাণ পৌঁছে
দেন যতশীঘ্র তার কামনা করে, তাহলে তাদের আশাই শেষ করে দিতে হত। সুতরাং
যাদের মনে আমার সাক্ষাতের আশা নেই, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টুমিতে
ব্যতিব্যস্ত ছেড়ে দিয়ে রাখি। [ সুরা ইউনুস ১০:১১ ]
وَإِذَا مَسَّ الإِنسَانَ الضُّرُّ دَعَانَا لِجَنبِهِ
أَوْ قَاعِدًا أَوْ قَآئِمًا فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُ ضُرَّهُ مَرَّ
كَأَن لَّمْ يَدْعُنَا إِلَى ضُرٍّ مَّسَّهُ كَذَلِكَ زُيِّنَ
لِلْمُسْرِفِينَ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ
আর যখন মানুষ কষ্টের সম্মুখীন হয়, শুয়ে বসে,
দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকতে থাকে। তারপর আমি যখন তা থেকে মুক্ত করে দেই, সে কষ্ট
যখন চলে যায় তখন মনে হয় কখনো কোন কষ্টেরই সম্মুখীন হয়ে যেন আমাকে
ডাকেইনি। এমনিভাবে মনঃপুত হয়েছে নির্ভয় লোকদের যা তারা করেছে। [ সুরা ইউনুস ১০:১২ ]
وَلَقَدْ أَهْلَكْنَا الْقُرُونَ مِن قَبْلِكُمْ
لَمَّا ظَلَمُواْ وَجَاءتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ وَمَا كَانُواْ
لِيُؤْمِنُواْ كَذَلِكَ نَجْزِي الْقَوْمَ الْمُجْرِمِينَ
অবশ্য তোমাদের পূর্বে বহু দলকে ধ্বংস করে দিয়েছি, তখন
তারা জালেম হয়ে গেছে। অথচ রসূল তাদের কাছেও এসব বিষয়ের প্রকৃষ্ট নির্দেশ
নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু কিছুতেই তারা ঈমান আনল না। এমনিভাবে আমি শাস্তি
দিয়ে থাকি পাপি সম্প্রদায়কে। [ সুরা ইউনুস ১০:১৩ ]
ثُمَّ جَعَلْنَاكُمْ خَلاَئِفَ فِي الأَرْضِ مِن بَعْدِهِم لِنَنظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُونَ
অতঃপর আমি তোমাদেরকে যমীনে তাদের পর প্রতিনিধি বানিয়েছি যাতে দেখতে পারি তোমরা কি কর। [ সুরা ইউনুস ১০:১৪ ]
وَإِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ
قَالَ الَّذِينَ لاَ يَرْجُونَ لِقَاءنَا ائْتِ بِقُرْآنٍ غَيْرِ هَـذَا
أَوْ بَدِّلْهُ قُلْ مَا يَكُونُ لِي أَنْ أُبَدِّلَهُ مِن تِلْقَاء
نَفْسِي إِنْ أَتَّبِعُ إِلاَّ مَا يُوحَى إِلَيَّ إِنِّي أَخَافُ إِنْ
عَصَيْتُ رَبِّي عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
আর যখন তাদের কাছে আমার প্রকৃষ্ট আয়াত সমূহ পাঠ করা
হয়, তখন সে সমস্ত লোক বলে, যাদের আশা নেই আমার সাক্ষাতের, নিয়ে এসো কোন
কোরআন এটি ছাড়া, অথবা একে পরিবর্তিত করে দাও। তাহলে বলে দাও, একে নিজের
পক্ষ থেকে পরিবর্তিত করা আমার কাজ নয়। আমি সে নির্দেশেরই আনুগত্য করি, যা
আমার কাছে আসে। আমি যদি স্বীয় পরওয়ারদেগারের নাফরমানী করি, তবে কঠিন
দিবসের আযাবের ভয় করি। [ সুরা ইউনুস ১০:১৫ ]
قُل لَّوْ شَاء اللّهُ مَا تَلَوْتُهُ عَلَيْكُمْ
وَلاَ أَدْرَاكُم بِهِ فَقَدْ لَبِثْتُ فِيكُمْ عُمُرًا مِّن قَبْلِهِ
أَفَلاَ تَعْقِلُونَ
বলে দাও, যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে আমি এটি তোমাদের
সামনে পড়তাম না, আর নাইবা তিনি তোমাদেরেকে অবহিত করতেন এ সম্পর্কে। কারণ
আমি তোমাদের মাঝে ইতিপূর্বেও একটা বয়স অতিবাহিত করেছি। তারপরেও কি তোমরা
চিন্তা করবে না? [ সুরা ইউনুস ১০:১৬ ]
فَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِآيَاتِهِ إِنَّهُ لاَ يُفْلِحُ الْمُجْرِمُونَ
অতঃপর তার চেয়ে বড় জালেম, কে হবে, যে আল্লাহর প্রতি
অপবাদ আরোপ করেছে কিংবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে অভিহিত করছে?
কস্মিনকালেও পাপীদের কোন কল্যাণ হয় না। [ সুরা ইউনুস ১০:১৭ ]
وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللّهِ مَا لاَ يَضُرُّهُمْ
وَلاَ يَنفَعُهُمْ وَيَقُولُونَ هَـؤُلاء شُفَعَاؤُنَا عِندَ اللّهِ قُلْ
أَتُنَبِّئُونَ اللّهَ بِمَا لاَ يَعْلَمُ فِي السَّمَاوَاتِ وَلاَ فِي
الأَرْضِ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
আর উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্তুর, যা না
তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারে, না লাভ এবং বলে, এরা তো আল্লাহর কাছে
আমাদের সুপারিশকারী। তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ে অবহিত করছ, যে
সম্পর্কে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে ? তিনি পুতঃপবিত্র ও মহান সে
সমস্ত থেকে যাকে তোমরা শরীক করছ। [ সুরা ইউনুস ১০:১৮ ]
وَمَا كَانَ النَّاسُ إِلاَّ أُمَّةً وَاحِدَةً
فَاخْتَلَفُواْ وَلَوْلاَ كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَقُضِيَ
بَيْنَهُمْ فِيمَا فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
আর সমস্ত মানুষ একই উম্মতভুক্ত ছিল, পরে পৃথক হয়ে
গেছে। আর একটি কথা যদি তোমার পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে পূর্ব নির্ধারিত না
হয়ে যেত; তবে তারা যে বিষয়ে বিরোধ করছে তার মীমাংসা হয়ে যেত। [ সুরা ইউনুস ১০:১৯ ]
وَيَقُولُونَ لَوْلاَ أُنزِلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِّن
رَّبِّهِ فَقُلْ إِنَّمَا الْغَيْبُ لِلّهِ فَانْتَظِرُواْ إِنِّي مَعَكُم
مِّنَ الْمُنتَظِرِينَ
বস্তুতঃ তারা বলে, তাঁর কাছে তাঁর পরওয়ারদেগারের পক্ষ
থেকে কোন নির্দেশ এল না কেন? বলে দাও গায়েবের কথা আল্লাহই জানেন। আমি ও
তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম। [ সুরা ইউনুস ১০:২০ ]
وَإِذَا أَذَقْنَا النَّاسَ رَحْمَةً مِّن بَعْدِ
ضَرَّاء مَسَّتْهُمْ إِذَا لَهُم مَّكْرٌ فِي آيَاتِنَا قُلِ اللّهُ
أَسْرَعُ مَكْرًا إِنَّ رُسُلَنَا يَكْتُبُونَ مَا تَمْكُرُونَ
আর যখন আমি আস্বাদন করাই স্বীয় রহমত সে কষ্টের পর, যা
তাদের ভোগ করতে হয়েছিল, তখনই তারা আমার শক্তিমত্তার মাঝে নানা রকম ছলনা
তৈরী করতে আরম্ভ করবে। আপনি বলে দিন, আল্লাহ সবচেয়ে দ্রুত কলা-কৌশল তৈরী
করতে পারেন। নিশ্চয়ই আমাদের ফেরেশতারা লিখে রাখে তোমাদের ছল-চাতুরী। [ সুরা ইউনুস ১০:২১ ]
هُوَ الَّذِي يُسَيِّرُكُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ
حَتَّى إِذَا كُنتُمْ فِي الْفُلْكِ وَجَرَيْنَ بِهِم بِرِيحٍ طَيِّبَةٍ
وَفَرِحُواْ بِهَا جَاءتْهَا رِيحٌ عَاصِفٌ وَجَاءهُمُ الْمَوْجُ مِن كُلِّ
مَكَانٍ وَظَنُّواْ أَنَّهُمْ أُحِيطَ بِهِمْ دَعَوُاْ اللّهَ مُخْلِصِينَ
لَهُ الدِّينَ لَئِنْ أَنجَيْتَنَا مِنْ هَـذِهِ لَنَكُونَنِّ مِنَ
الشَّاكِرِينَ
তিনিই তোমাদের ভ্রমন করান স্থলে ও সাগরে। এমনকি যখন
তোমরা নৌকাসমূহে আরোহণ করলে আর তা লোকজনকে অনুকূল হাওয়ায় বয়ে নিয়ে চলল
এবং তাতে তারা আনন্দিত হল, নৌকাগুলোর উপর এল তীব্র বাতাস, আর সর্বদিক থেকে
সেগুলোর উপর ঢেউ আসতে লাগল এবং তারা জানতে পারল যে, তারা অবরুদ্ধ হয়ে
পড়েছে, তখন ডাকতে লাগল আল্লাহকে তাঁর এবাদতে নিঃস্বার্থ হয়ে যদি তুমি
আমাদেরকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার করে তোল, তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব। [
সুরা ইউনুস ১০:২২ ]
فَلَمَّا أَنجَاهُمْ إِذَا هُمْ يَبْغُونَ فِي
الأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا بَغْيُكُمْ
عَلَى أَنفُسِكُم مَّتَاعَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ثُمَّ إِلَينَا
مَرْجِعُكُمْ فَنُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
তারপর যখন তাদেরকে আল্লাহ বাঁচিয়ে দিলেন, তখনই তারা
পৃথিবীতে অনাচার করতে লাগল অন্যায় ভাবে। হে মানুষ! শোন, তোমাদের অনাচার
তোমাদেরই উপর পড়বে। পার্থিব জীবনের সুফল ভোগ করে নাও-অতঃপর আমার নিকট
প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন আমি বাতলে দেব, যা কিছু তোমরা করতে। [ সুরা ইউনুস ১০:২৩ ]
إِنَّمَا مَثَلُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا كَمَاء
أَنزَلْنَاهُ مِنَ السَّمَاء فَاخْتَلَطَ بِهِ نَبَاتُ الأَرْضِ مِمَّا
يَأْكُلُ النَّاسُ وَالأَنْعَامُ حَتَّىَ إِذَا أَخَذَتِ الأَرْضُ
زُخْرُفَهَا وَازَّيَّنَتْ وَظَنَّ أَهْلُهَا أَنَّهُمْ قَادِرُونَ
عَلَيْهَا أَتَاهَا أَمْرُنَا لَيْلاً أَوْ نَهَارًا فَجَعَلْنَاهَا
حَصِيدًا كَأَن لَّمْ تَغْنَ بِالأَمْسِ كَذَلِكَ نُفَصِّلُ الآيَاتِ
لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
পার্থিব জীবনের উদাহরণ তেমনি, যেমনি আমি আসমান থেকে
পানি বর্ষন করলাম, পরে তা মিলিত সংমিশ্রিত হয়ে তা থেকে যমীনের শ্যামল
উদ্ভিদ বেরিয়ে এল যা মানুষ ও জীব-জন্তুরা খেয়ে থাকে। এমনকি যমীন যখন
সৌন্দর্য সুষমায় ভরে উঠলো আর যমীনের অধিকর্তারা ভাবতে লাগল, এগুলো আমাদের
হাতে আসবে, হঠাৎ করে তার উপর আমার নির্দেশ এল রাত্রে কিংবা দিনে, তখন
সেগুলোকে কেটে স্তুপাকার করে দিল যেন কাল ও এখানে কোন আবাদ ছিল না।
এমনিভাবে আমি খোলাখুলি বর্ণনা করে থাকি নিদর্শণসমূহ সে সমস্ত লোকদের জন্য
যারা লক্ষ্য করে। [ সুরা ইউনুস ১০:২৪ ]
وَاللّهُ يَدْعُو إِلَى دَارِ السَّلاَمِ وَيَهْدِي مَن يَشَاء إِلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
আর আল্লাহ শান্তি-নিরা পত্তার আলয়ের প্রতি আহবান জানান এবং যাকে ইচ্ছা সরলপথ প্রদর্শন করেন। [ সুরা ইউনুস ১০:২৫ ]
لِّلَّذِينَ أَحْسَنُواْ الْحُسْنَى وَزِيَادَةٌ وَلاَ
يَرْهَقُ وُجُوهَهُمْ قَتَرٌ وَلاَ ذِلَّةٌ أُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ
الْجَنَّةِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
যারা সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং তারও
চেয়ে বেশী। আর তাদের মুখমন্ডলকে আবৃত করবে না মলিনতা কিংবা অপমান। তারাই
হল জান্নাতবাসী, এতেই তারা বসবাস করতে থাকবে অনন্তকাল। [ সুরা ইউনুস ১০:২৬ ]
وَالَّذِينَ كَسَبُواْ السَّيِّئَاتِ جَزَاء سَيِّئَةٍ
بِمِثْلِهَا وَتَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ مَّا لَهُم مِّنَ اللّهِ مِنْ عَاصِمٍ
كَأَنَّمَا أُغْشِيَتْ وُجُوهُهُمْ قِطَعًا مِّنَ اللَّيْلِ مُظْلِمًا
أُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
আর যারা সঞ্চয় করেছে অকল্যাণ অসৎ কর্মের বদলায় সে
পরিমাণ অপমান তাদের চেহারাকে আবৃত করে ফেলবে। কেউ নেই তাদেরকে বাঁচাতে পারে
আল্লাহর হাত থেকে। তাদের মুখমন্ডল যেন ঢেকে দেয়া হয়েছে আধাঁর রাতের
টুকরো দিয়ে। এরা হল দোযখবাসী। এরা এতেই থাকবে অনন্তকাল। [ সুরা ইউনুস ১০:২৭ ]
وَيَوْمَ نَحْشُرُهُمْ جَمِيعًا ثُمَّ نَقُولُ
لِلَّذِينَ أَشْرَكُواْ مَكَانَكُمْ أَنتُمْ وَشُرَكَآؤُكُمْ فَزَيَّلْنَا
بَيْنَهُمْ وَقَالَ شُرَكَآؤُهُم مَّا كُنتُمْ إِيَّانَا تَعْبُدُونَ
আর যেদিন আমি তাদের সবাইকে সমবেত করব; আর যারা শেরক
করত তাদেরকে বলবঃ তোমরা এবং তোমাদের শরীকরা নিজ নিজ জায়গায় দাঁড়িয়ে
যাও-অতঃপর তাদেরকে পারস্পরিক বিচ্ছিন্ন করে দেব, তখন তাদের শরীকরা বলবে,
তোমরা তো আমাদের উপাসনা-বন্দ েগী করনি। [ সুরা ইউনুস ১০:২৮ ]
فَكَفَى بِاللّهِ شَهِيدًا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ إِن كُنَّا عَنْ عِبَادَتِكُمْ لَغَافِلِينَ
বস্তুতঃ আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট। আমরা তোমাদের বন্দেগী সম্পর্কে জানতাম না। [ সুরা ইউনুস ১০:২৯ ]
هُنَالِكَ تَبْلُو كُلُّ نَفْسٍ مَّا أَسْلَفَتْ
وَرُدُّواْ إِلَى اللّهِ مَوْلاَهُمُ الْحَقِّ وَضَلَّ عَنْهُم مَّا
كَانُواْ يَفْتَرُونَ
সেখানে প্রত্যেকে যাচাই করে নিতে পারবে যা কিছু সে
ইতিপূর্বে করেছিল এবং আল্লাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করবে যিনি তাদের প্রকৃত
মালিক, আর তাদের কাছ থেকে দূরে যেতে থাকবে যারা মিথ্যা বলত। [ সুরা ইউনুস ১০:৩০ ]
قُلْ مَن يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ
أَمَّن يَمْلِكُ السَّمْعَ والأَبْصَارَ وَمَن يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ
الْمَيِّتِ وَيُخْرِجُ الْمَيَّتَ مِنَ الْحَيِّ وَمَن يُدَبِّرُ الأَمْرَ
فَسَيَقُولُونَ اللّهُ فَقُلْ أَفَلاَ تَتَّقُونَ
তুমি জিজ্ঞেস কর, কে রুযী দান করে তোমাদেরকে আসমান
থেকে ও যমীন থেকে, কিংবা কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক? তাছাড়া কে জীবিতকে
মৃতের ভেতর থেকে বের করেন এবং কেইবা মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন? কে
করেন কর্ম সম্পাদনের ব্যবস্থাপনা? তখন তারা বলে উঠবে, আল্লাহ! তখন তুমি
বলো তারপরেও ভয় করছ না? [ সুরা ইউনুস ১০:৩১ ]
فَذَلِكُمُ اللّهُ رَبُّكُمُ الْحَقُّ فَمَاذَا بَعْدَ الْحَقِّ إِلاَّ الضَّلاَلُ فَأَنَّى تُصْرَفُونَ
অতএব, এ আল্লাহই তোমাদের প্রকৃত পালনকর্তা। আর সত্য
প্রকাশের পরে (উদভ্রান্ত ঘুরার মাঝে) কি রয়েছে গোমরাহী ছাড়া? সুতরাং
কোথায় ঘুরছ? [ সুরা ইউনুস ১০:৩২ ]
كَذَلِكَ حَقَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ عَلَى الَّذِينَ فَسَقُواْ أَنَّهُمْ لاَ يُؤْمِنُونَ
এমনিভাবে সপ্রমাণিত হয়ে গেছে তোমার পরওয়ারদেগারের বাণী সেসব নাফরমানের ব্যাপারে যে, এরা ঈমান আনবে না। [ সুরা ইউনুস ১০:৩৩ ]
قُلْ هَلْ مِن شُرَكَآئِكُم مَّن يَبْدَأُ الْخَلْقَ
ثُمَّ يُعِيدُهُ قُلِ اللّهُ يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ فَأَنَّى
تُؤْفَكُونَ
বল, আছে কি কেউ তোমাদের শরীকদের মাঝে যে সৃষ্টি কে
পয়দা করতে পারে এবং আবার জীবিত করতে পারে? বল, আল্লাহই প্রথমবার সৃষ্টি
করেন এবং অতঃপর তার পুনরুদ্ভব করবেন। অতএব, কোথায় ঘুরপাক খাচ্ছে? [ সুরা ইউনুস ১০:৩৪ ]
قُلْ هَلْ مِن شُرَكَآئِكُم مَّن يَهْدِي إِلَى
الْحَقِّ قُلِ اللّهُ يَهْدِي لِلْحَقِّ أَفَمَن يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ
أَحَقُّ أَن يُتَّبَعَ أَمَّن لاَّ يَهِدِّيَ إِلاَّ أَن يُهْدَى فَمَا
لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ
জিজ্ঞেস কর, আছে কি কেউ তোমাদের শরীকদের মধ্যে যে
সত্য-সঠিক পথ প্রদর্শন করবে? বল, আল্লাহই সত্য-সঠিক পথ প্রদর্শন করেন,
সুতরাং এমন যে লোক সঠিক পথ দেখাবে তার কথা মান্য করা কিংবা যে লোক নিজে
নিজে পথ খুঁজে পায় না, তাকে পথ দেখানো কর্তব্য। অতএব, তোমাদের কি হল, কেমন
তোমাদের বিচার? [ সুরা ইউনুস ১০:৩৫ ]
وَمَا يَتَّبِعُ أَكْثَرُهُمْ إِلاَّ ظَنًّا إَنَّ
الظَّنَّ لاَ يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا إِنَّ اللّهَ عَلَيمٌ بِمَا
يَفْعَلُونَ
বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই শুধু আন্দাজ-অনুম ানের উপর
চলে, অথচ আন্দাজ-অনুম ান সত্যের বেলায় কোন কাজেই আসে না। আল্লাহ ভাল করেই
জানেন, তারা যা কিছু করে। [ সুরা ইউনুস ১০:৩৬ ]
وَمَا كَانَ هَـذَا الْقُرْآنُ أَن يُفْتَرَى مِن
دُونِ اللّهِ وَلَـكِن تَصْدِيقَ الَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَتَفْصِيلَ
الْكِتَابِ لاَ رَيْبَ فِيهِ مِن رَّبِّ الْعَالَمِينَ
আর কোরআন সে জিনিস নয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কেউ তা
বানিয়ে নেবে। অবশ্য এটি পূর্ববর্তী কালামের সত্যায়ন করে এবং সে সমস্ত
বিষয়ের বিশ্লেষণ দান করে যা তোমার প্রতি দেয়া হয়েছে, যাতে কোন সন্দেহ
নেই-তোমার বিশ্বপালনকর্তার পক্ষ থেকে। [ সুরা ইউনুস ১০:৩৭ ]
أَمْ يَقُولُونَ افْتَرَاهُ قُلْ فَأْتُواْ بِسُورَةٍ
مِّثْلِهِ وَادْعُواْ مَنِ اسْتَطَعْتُم مِّن دُونِ اللّهِ إِن كُنتُمْ
صَادِقِينَ
মানুষ কি বলে যে, এটি বানিয়ে এনেছ? বলে দাও, তোমরা
নিয়ে এসো একটিই সূরা, আর ডেকে নাও, যাদেরকে নিতে সক্ষম হও আল্লাহ ব্যতীত,
যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক। [ সুরা ইউনুস ১০:৩৮ ]
بَلْ كَذَّبُواْ بِمَا لَمْ يُحِيطُواْ بِعِلْمِهِ
وَلَمَّا يَأْتِهِمْ تَأْوِيلُهُ كَذَلِكَ كَذَّبَ الَّذِينَ مِن
قَبْلِهِمْ فَانظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الظَّالِمِينَ
কিন্তু কথা হল এই যে, তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে
আরম্ভ করেছে যাকে বুঝতে, তারা অক্ষম। অথচ এখনো এর বিশ্লেষণ আসেনি। এমনিভাবে
মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদের পূর্ববর্তীরা। অতএব, লক্ষ্য করে দেখ, কেমন
হয়েছে পরিণতি। [ সুরা ইউনুস ১০:৩৯ ]
وَمِنهُم مَّن يُؤْمِنُ بِهِ وَمِنْهُم مَّن لاَّ يُؤْمِنُ بِهِ وَرَبُّكَ أَعْلَمُ بِالْمُفْسِدِينَ
আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ কোরআনকে বিশ্বাস করবে এবং কেউ
কেউ বিশ্বাস করবে না। বস্তুতঃ তোমার পরওয়ারদেগার যথার্থই জানেন
দুরাচারদিগকে। [ সুরা ইউনুস ১০:৪০ ]
وَإِن كَذَّبُوكَ فَقُل لِّي عَمَلِي وَلَكُمْ عَمَلُكُمْ أَنتُمْ بَرِيئُونَ مِمَّا أَعْمَلُ وَأَنَاْ بَرِيءٌ مِّمَّا تَعْمَلُونَ
আর যদি তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তবে বল, আমার
জন্য আমার কর্ম, আর তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম। তোমাদের দায়-দায়িত ্ব নেই
আমার কর্মের উপর এবং আমারও দায়-দায়িত ্ব নেই তোমরা যা কর সেজন্য। [ সুরা ইউনুস ১০:৪১ ]
وَمِنْهُم مَّن يَسْتَمِعُونَ إِلَيْكَ أَفَأَنتَ تُسْمِعُ الصُّمَّ وَلَوْ كَانُواْ لاَ يَعْقِلُونَ
তাদের কেউ কেউ কান রাখে তোমাদের প্রতি; তুমি বধিরদেরকে কি শোনাবে যদি তাদের বিবেক-বুদ্ধ ি না থাকে! [ সুরা ইউনুস ১০:৪২ ]
وَمِنهُم مَّن يَنظُرُ إِلَيْكَ أَفَأَنتَ تَهْدِي الْعُمْيَ وَلَوْ كَانُواْ لاَ يُبْصِرُونَ
আবার তাদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের প্রতি দৃষ্টিনিবদ্ধ
রাখে; তুমি অন্ধদেরকে কি পথ দেখাবে যদি তারা মোটেও দেখতে না পারে। [ সুরা
ইউনুস ১০:৪৩ ]
إِنَّ اللّهَ لاَ يَظْلِمُ النَّاسَ شَيْئًا وَلَـكِنَّ النَّاسَ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
আল্লাহ জুলুম করেন না মানুষের উপর, বরং মানুষ নিজেই নিজের উপর জুলুম করে। [ সুরা ইউনুস ১০:৪৪ ]
وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ كَأَن لَّمْ يَلْبَثُواْ إِلاَّ
سَاعَةً مِّنَ النَّهَارِ يَتَعَارَفُونَ بَيْنَهُمْ قَدْ خَسِرَ
الَّذِينَ كَذَّبُواْ بِلِقَاء اللّهِ وَمَا كَانُواْ مُهْتَدِينَ
আর যেদিন তাদেরকে সমবেত করা হবে, যেন তারা অবস্থান
করেনি, তবে দিনের একদন্ড একজন অপরজনকে চিনবে। নিঃসন্দেহে ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতকে এবং সরলপথে
আসেনি। [ সুরা ইউনুস ১০:৪৫ ]
وَإِمَّا نُرِيَنَّكَ بَعْضَ الَّذِي نَعِدُهُمْ أَوْ
نَتَوَفَّيَنَّكَ فَإِلَيْنَا مَرْجِعُهُمْ ثُمَّ اللّهُ شَهِيدٌ عَلَى مَا
يَفْعَلُونَ
আর যদি আমি দেখাই তোমাকে সে ওয়াদাসমূহের মধ্য থেকে
কোন কিছু যা আমি তাদের সাথে করেছি, অথবা তোমাকে মৃত্যুদান করি, যাহোক, আমার
কাছেই তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। বস্তুতঃ আল্লাহ সে সমস্ত কর্মের
সাক্ষী যা তারা করে। [ সুরা ইউনুস ১০:৪৬ ]
وَلِكُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولٌ فَإِذَا جَاء رَسُولُهُمْ قُضِيَ بَيْنَهُم بِالْقِسْطِ وَهُمْ لاَ يُظْلَمُونَ
আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একেকজন রসূল রয়েছে। যখন
তাদের কাছে তাদের রসূল ন্যায়দন্ডসহ উপস্থিত হল, তখন আর তাদের উপর জুলুম
হয় না। [ সুরা ইউনুস ১০:৪৭ ]
وَيَقُولُونَ مَتَى هَـذَا الْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
তারা আরো বলে, এ ওয়াদা কবে আসবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক? [ সুরা ইউনুস ১০:৪৮ ]
قُل لاَّ أَمْلِكُ لِنَفْسِي ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا
إِلاَّ مَا شَاء اللّهُ لِكُلِّ أُمَّةٍ أَجَلٌ إِذَا جَاء أَجَلُهُمْ
فَلاَ يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلاَ يَسْتَقْدِمُونَ
তুমি বল, আমি আমার নিজের ক্ষতি কিংবা লাভেরও মালিক নই,
কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যই একেকটি ওয়াদা
রয়েছে, যখন তাদের সে ওয়াদা এসে পৌঁছে যাবে, তখন না একদন্ড পেছনে সরতে
পারবে, না সামনে ফসকাতে পারবে,। [ সুরা ইউনুস ১০:৪৯ ]
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَتَاكُمْ عَذَابُهُ بَيَاتًا أَوْ نَهَارًا مَّاذَا يَسْتَعْجِلُ مِنْهُ الْمُجْرِمُونَ
তুমি বল, আচ্ছা দেখ তো দেখি, যদি তোমাদের উপর তার আযাব
রাতারাতি অথবা দিনের বেলায় এসে পৌঁছে যায়, তবে এর আগে পাপীরা কি করবে? [
সুরা ইউনুস ১০:৫০ ]
أَثُمَّ إِذَا مَا وَقَعَ آمَنْتُم بِهِ آلآنَ وَقَدْ كُنتُم بِهِ تَسْتَعْجِلُونَ
তাহলে কি আযাব সংঘটিত হয়ে যাবার পর এর প্রতি বিশ্বাস করবে? এখন স্বীকার করলে? অথচ তোমরা এরই তাকাদা করতে? [ সুরা ইউনুস ১০:৫১ ]
ثُمَّ قِيلَ لِلَّذِينَ ظَلَمُواْ ذُوقُواْ عَذَابَ الْخُلْدِ هَلْ تُجْزَوْنَ إِلاَّ بِمَا كُنتُمْ تَكْسِبُونَ
অতঃপর বলা হবে, গোনাহগারদিগকে, ভোগ করতে থাক অনন্ত আযাব-তোমরা যা কিছু করতে তার তাই প্রতিফল। [ সুরা ইউনুস ১০:৫২ ]
وَيَسْتَنبِئُونَكَ أَحَقٌّ هُوَ قُلْ إِي وَرَبِّي إِنَّهُ لَحَقٌّ وَمَا أَنتُمْ بِمُعْجِزِينَ
আর তোমার কাছে সংবাদ জিজ্ঞেস করে, এটা কি সত্য ? বলে
দাও, অবশ্যই আমার পরওয়ারদেগারের কসম এটা সত্য। আর তোমরা পরিশ্রান্ত করে
দিতে পারবে না। [ সুরা ইউনুস ১০:৫৩ ]
وَلَوْ أَنَّ لِكُلِّ نَفْسٍ ظَلَمَتْ مَا فِي
الأَرْضِ لاَفْتَدَتْ بِهِ وَأَسَرُّواْ النَّدَامَةَ لَمَّا رَأَوُاْ
الْعَذَابَ وَقُضِيَ بَيْنَهُم بِالْقِسْطِ وَهُمْ لاَ يُظْلَمُونَ
বস্তুতঃ যদি প্রত্যেক গোনাহগারের কাছে এত পরিমাণ থাকে
যা আছে সমগ্র যমীনের মাঝে, আর অবশ্যই যদি সেগুলো নিজের মুক্তির বিনিময়ে
দিতে চাইবে আর গোপনে গোপনে অনুতাপ করবে, যখন আযাব দেখবে। বস্তুতঃ তাদের
জন্য সিদ্ধান্ত হবে ন্যায়সঙ্গত এবং তাদের উপর জুলম হবে না। [ সুরা ইউনুস ১০:৫৪ ]
أَلا إِنَّ لِلّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ أَلاَ إِنَّ وَعْدَ اللّهِ حَقٌّ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لاَ يَعْلَمُونَ
শুনে রাখ, যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে ও যমীনে সবই
আল্লাহর। শুনে রাখ, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। তবে অনেকেই জানে না। [ সুরা
ইউনুস ১০:৫৫ ]
هُوَ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
তিনিই জীবন ও মরণ দান করেন এবং তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। [ সুরা ইউনুস ১০:৫৬ ]
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءتْكُم مَّوْعِظَةٌ
مِّن رَّبِّكُمْ وَشِفَاء لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ
لِّلْمُؤْمِنِينَ
হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের
পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত
মুসলমানদের জন্য। [ সুরা ইউনুস ১০:৫৭ ]
قُلْ بِفَضْلِ اللّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُواْ هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
বল, আল্লাহর দয়া ও মেহেরবাণীতে। সুতরাং এরই প্রতি
তাদের সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ। এটিই উত্তম সে সমুদয় থেকে যা সঞ্চয় করছ। [
সুরা ইউনুস ১০:৫৮ ]
قُلْ أَرَأَيْتُم مَّا أَنزَلَ اللّهُ لَكُم مِّن
رِّزْقٍ فَجَعَلْتُم مِّنْهُ حَرَامًا وَحَلاَلاً قُلْ آللّهُ أَذِنَ
لَكُمْ أَمْ عَلَى اللّهِ تَفْتَرُونَ
বল, আচ্ছা নিজেই লক্ষ্য করে দেখ, যা কিছু আল্লাহ
তোমাদের জন্য রিযিক হিসাবে অবতীর্ণ করেছেন, তোমরা সেগুলোর মধ্য থেকে
কোনটাকে হারাম আর কোনটাকে হালাল সাব্যস্ত করেছ? বল, তোমাদের কি আল্লাহ
নির্দেশ দিয়েছেন, নাকি আল্লাহর উপর অপবাদ আরোপ করছ? [ সুরা ইউনুস ১০:৫৯ ]
وَمَا ظَنُّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللّهِ
الْكَذِبَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّ اللّهَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ
وَلَـكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لاَ يَشْكُرُونَ
আর আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপকারীদের কি ধারণা
কেয়ামত সম্পর্কে? আল্লাহ তো মানুষের প্রতি অনুগ্রহই করেন, কিন্তু অনেকেই
কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না। [ সুরা ইউনুস ১০:৬০ ]
وَمَا تَكُونُ فِي شَأْنٍ وَمَا تَتْلُو مِنْهُ مِن
قُرْآنٍ وَلاَ تَعْمَلُونَ مِنْ عَمَلٍ إِلاَّ كُنَّا عَلَيْكُمْ شُهُودًا
إِذْ تُفِيضُونَ فِيهِ وَمَا يَعْزُبُ عَن رَّبِّكَ مِن مِّثْقَالِ ذَرَّةٍ
فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاء وَلاَ أَصْغَرَ مِن ذَلِكَ وَلا
أَكْبَرَ إِلاَّ فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ
বস্তুতঃ যে কোন অবস্থাতেই তুমি থাক এবং কোরআনের যে কোন
অংশ থেকেই পাঠ করা কিংবা যে কোন কাজই তোমরা কর অথচ আমি তোমাদের নিকটে
উপস্থিত থাকি যখন তোমরা তাতে আত্ননিয়োগ কর। আর তোমার পরওয়ারদেগার থেকে
গোপন থাকে না একটি কনাও, না যমীনের এবং না আসমানের। না এর চেয়ে ক্ষুদ্র
কোন কিছু আছে, না বড় যা এই প্রকৃষ্ট কিতাবে নেই। [ সুরা ইউনুস ১০:৬১ ]
أَلا إِنَّ أَوْلِيَاء اللّهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
মনে রেখো যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে। [ সুরা ইউনুস ১০:৬২ ]
الَّذِينَ آمَنُواْ وَكَانُواْ يَتَّقُونَ
যারা ঈমান এনেছে এবং ভয় করতে রয়েছে। [ সুরা ইউনুস ১০:৬৩ ]
لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَياةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ لاَ تَبْدِيلَ لِكَلِمَاتِ اللّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথার কখনো হের-ফের হয় না। এটাই হল মহা সফলতা। [ সুরা ইউনুস ১০:৬৪ ]
وَلاَ يَحْزُنكَ قَوْلُهُمْ إِنَّ الْعِزَّةَ لِلّهِ جَمِيعًا هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
আর তাদের কথায় দুঃখ নিয়ো না। আসলে সমস্ত ক্ষমতা আল্লাহর। তিনিই শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ। [ সুরা ইউনুস ১০:৬৫ ]
أَلا إِنَّ لِلّهِ مَن فِي السَّمَاوَات وَمَن فِي
الأَرْضِ وَمَا يَتَّبِعُ الَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِ اللّهِ شُرَكَاء
إِن يَتَّبِعُونَ إِلاَّ الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَخْرُصُونَ
শুনছ, আসমানসমূহে ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহর।
আর এরা যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে শরীকদের উপাসনার পেছনে পড়ে আছে-তা আসলে
কিছুই নয়। এরা নিজেরই কল্পনার পেছনে পড়ে রয়েছে এবং এছাড়া আর কিছু নয়
যে, এরা বুদ্ধি খাটাচ্ছে। [ সুরা ইউনুস ১০:৬৬ ]
هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِتَسْكُنُواْ فِيهِ وَالنَّهَارَ مُبْصِرًا إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَسْمَعُونَ
তিনি তোমাদের জন্য তৈরী করেছেন রাত, যাতে করে তোমরা
তাতে প্রশান্তি লাভ করতে পার, আর দিন দিয়েছেন দর্শন করার জন্য। নিঃসন্দেহে
এতে নিদর্শন রয়েছে সে সব লোকের জন্য যারা শ্রবণ করে। [ সুরা ইউনুস ১০:৬৭ ]
قَالُواْ اتَّخَذَ اللّهُ وَلَدًا سُبْحَانَهُ هُوَ
الْغَنِيُّ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَات وَمَا فِي الأَرْضِ إِنْ عِندَكُم
مِّن سُلْطَانٍ بِهَـذَا أَتقُولُونَ عَلَى اللّهِ مَا لاَ تَعْلَمُونَ
তারা বলে, আল্লাহ পুত্র সাব্যস্ত করে নিয়েছেন-তি নি
পবিত্র, তিনি অমুখাপেক্ষী। যাকিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও যমীনে সবই তাঁর।
তোমাদের কাছে তার কোন সনদ নেই। কেন তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ কর-যার
কোন সনদই তোমাদের কাছে নেই? [ সুরা ইউনুস ১০:৬৮ ]
قُلْ إِنَّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللّهِ الْكَذِبَ لاَ يُفْلِحُونَ
বলে দাও, যারা এরূপ করে তারা অব্যাহতি পায় না। [ সুরা ইউনুস ১০:৬৯ ]
مَتَاعٌ فِي الدُّنْيَا ثُمَّ إِلَيْنَا مَرْجِعُهُمْ ثُمَّ نُذِيقُهُمُ الْعَذَابَ الشَّدِيدَ بِمَا كَانُواْ يَكْفُرُونَ
পার্থিবজীবনে সামান্যই লাভ, অতঃপর আমার নিকট
প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন আমি তাদেরকে আস্বাদন করাব কঠিন আযাব-তাদেরই কৃত
কুফরীর বদলাতে। [ সুরা ইউনুস ১০:৭০ ]
وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ نُوحٍ إِذْ قَالَ
لِقَوْمِهِ يَا قَوْمِ إِن كَانَ كَبُرَ عَلَيْكُم مَّقَامِي وَتَذْكِيرِي
بِآيَاتِ اللّهِ فَعَلَى اللّهِ تَوَكَّلْتُ فَأَجْمِعُواْ أَمْرَكُمْ
وَشُرَكَاءكُمْ ثُمَّ لاَ يَكُنْ أَمْرُكُمْ عَلَيْكُمْ غُمَّةً ثُمَّ
اقْضُواْ إِلَيَّ وَلاَ تُنظِرُونِ
আর তাদেরকে শুনিয়ে দাও নূহের অবস্থা যখন সে স্বীয়
সম্প্রদায়কে বলল, হে আমার সম্প্রদায়, যদি তোমাদের মাঝে আমার অবস্থিতি এবং
আল্লাহর আয়াতসমূহের মাধ্যমে নসীহত করা ভারী বলে মনে হয়ে থাকে, তবে আমি
আল্লাহর উপর ভরসা করছি। এখন তোমরা সবাই মিলে নিজেরদের কর্ম সাব্যস্ত কর এবং
এতে তোমাদের শরীকদেরকে সমবেত করে নাও, যাতে তোমাদের মাঝে নিজেদের কাজের
ব্যাপারে কোন সন্দেহ-সংশয ় না থাকে। অতঃপর আমার সম্পর্কে যা কিছু করার করে
ফেল এবং আমাকে অব্যাহতি দিও না। [ সুরা ইউনুস ১০:৭১ ]
فَإِن تَوَلَّيْتُمْ فَمَا سَأَلْتُكُم مِّنْ أَجْرٍ إِنْ أَجْرِيَ إِلاَّ عَلَى اللّهِ وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ
তারপরও যদি বিমুখতা অবলম্বন কর, তবে আমি তোমাদের কাছে
কোন রকম বিনিময় কামনা করি না। আমার বিনিময় হল আল্লাহর দায়িত্বে। আর আমার
প্রতি নির্দেশ রয়েছে যেন আমি আনুগত্য অবলম্বন করি। [ সুরা ইউনুস ১০:৭২ ]
فَكَذَّبُوهُ فَنَجَّيْنَاهُ وَمَن مَّعَهُ فِي
الْفُلْكِ وَجَعَلْنَاهُمْ خَلاَئِفَ وَأَغْرَقْنَا الَّذِينَ كَذَّبُواْ
بِآيَاتِنَا فَانظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُنذَرِينَ
তারপরও এরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। সুতরাং তাকে এবং তার
সাথে নৌকায় যারা ছিল তাদের কে বাঁচিয়ে নিয়েছি এবং যথাস্থানে আবাদ
করেছি। আর তাদেরকে ডুবিয়ে দিয়েছি যারা আমার কথাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন
করেছে। সুতরাং লক্ষ্য কর, কেমন পরিণতি ঘটেছে তাদের যাদেরকে ভীতি প্রদর্শন
করা হয়েছিল। [ সুরা ইউনুস ১০:৭৩ ]
ثُمَّ بَعَثْنَا مِن بَعْدِهِ رُسُلاً إِلَى
قَوْمِهِمْ فَجَآؤُوهُم بِالْبَيِّنَاتِ فَمَا كَانُواْ لِيُؤْمِنُواْ
بِمَا كَذَّبُواْ بِهِ مِن قَبْلُ كَذَلِكَ نَطْبَعُ عَلَى قُلوبِ
الْمُعْتَدِينَ
অনন্তর আমি নূহের পরে বহু নবী-রসূল পাঠিয়েছি তাদের
সম্প্রদায়ের প্রতি। তারপর তাদের কাছে তারা প্রকাশ্য দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন
করেছে, কিন্তু তাদের দ্বারা এমনটি হয়নি যে, ঈমান আনবে সে ব্যাপারে, যাকে
তারা ইতিপূর্বে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল। এভাবেই আমি মোহর এঁটে দেই
সীমালংঘনকারীদের অন্তরসমূহের উপর। [ সুরা ইউনুস ১০:৭৪ ]
ثُمَّ بَعَثْنَا مِن بَعْدِهِم مُّوسَى وَهَارُونَ
إِلَى فِرْعَوْنَ وَمَلَئِهِ بِآيَاتِنَا فَاسْتَكْبَرُواْ وَكَانُواْ
قَوْمًا مُّجْرِمِينَ
অতঃপর তাদের পেছনে পাঠিয়েছি আমি মূসা ও হারুনকে,
ফেরাউন ও তার সর্দারের প্রতি স্বীয় নির্দেশাবলী সহকারে। অথচ তারা অহংকার
করতে আরম্ভ করেছে। [ সুরা ইউনুস ১০:৭৫ ]
فَلَمَّا جَاءهُمُ الْحَقُّ مِنْ عِندِنَا قَالُواْ إِنَّ هَـذَا لَسِحْرٌ مُّبِينٌ
বস্তুতঃ তারা ছিল গোনাহগার। তারপর আমার পক্ষ থেকে যখন
তাদের কাছে সত্য বিষয় উপস্থিত হল, তখন বলতে লাগলো, এগুলো তো প্রকাশ্য
যাদু। [ সুরা ইউনুস ১০:৭৬ ]
قَالَ مُوسَى أَتقُولُونَ لِلْحَقِّ لَمَّا جَاءكُمْ أَسِحْرٌ هَـذَا وَلاَ يُفْلِحُ السَّاحِرُونَ
মূসা বলল, সত্যের ব্যাপারে একথা বলছ, তা তোমাদের কাছে
পৌঁছার পর? একি যাদু? অথচ যারা যাদুকর, তারা সফল হতে পারে না। [ সুরা ইউনুস
১০:৭৭ ]
قَالُواْ أَجِئْتَنَا لِتَلْفِتَنَا عَمَّا وَجَدْنَا
عَلَيْهِ آبَاءنَا وَتَكُونَ لَكُمَا الْكِبْرِيَاء فِي الأَرْضِ وَمَا
نَحْنُ لَكُمَا بِمُؤْمِنِينَ
তারা বলল, তুমি কি আমাদেরকে সে পথ থেকে ফিরিয়ে দিতে
এসেছ যাতে আমরা পেয়েছি আমাদের বাপ-দাদাদের কে? আর যাতে তোমরা দুইজন এদেশের
সর্দারী পেয়ে যেতে পার? আমরা তোমাদেরকে কিছুতেই মানব না। [ সুরা ইউনুস ১০:৭৮ ]
وَقَالَ فِرْعَوْنُ ائْتُونِي بِكُلِّ سَاحِرٍ عَلِيمٍ
আর ফেরাউন বলল, আমার কাছে নিয়ে এস সুদক্ষ যাদুকরদিগকে। [ সুরা ইউনুস ১০:৭৯ ]
فَلَمَّا جَاء السَّحَرَةُ قَالَ لَهُم مُّوسَى أَلْقُواْ مَا أَنتُم مُّلْقُونَ
তারপর যখন যাদুকররা এল, মূসা তাদেরকে বলল, নিক্ষেপ কর, তোমরা যা কিছু নিক্ষেপ করে থাক। [ সুরা ইউনুস ১০:৮০ ]
فَلَمَّا أَلْقَواْ قَالَ مُوسَى مَا جِئْتُم بِهِ
السِّحْرُ إِنَّ اللّهَ سَيُبْطِلُهُ إِنَّ اللّهَ لاَ يُصْلِحُ عَمَلَ
الْمُفْسِدِينَ
অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করল, মূসা বলল, যা কিছু তোমরা
এনেছ তা সবই যাদু-এবার আল্লাহ এসব ভন্ডুল করে দিচ্ছেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ
দুস্কর্মীদের কর্মকে সুষ্ঠুতা দান করেন না। [ সুরা ইউনুস ১০:৮১ ]
وَيُحِقُّ اللّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ
আল্লাহ সত্যকে সত্যে পরিণত করেন স্বীয় নির্দেশে যদিও পাপীদের তা মনঃপুত নয়। [ সুরা ইউনুস ১০:৮২ ]
فَمَا آمَنَ لِمُوسَى إِلاَّ ذُرِّيَّةٌ مِّن قَوْمِهِ
عَلَى خَوْفٍ مِّن فِرْعَوْنَ وَمَلَئِهِمْ أَن يَفْتِنَهُمْ وَإِنَّ
فِرْعَوْنَ لَعَالٍ فِي الأَرْضِ وَإِنَّهُ لَمِنَ الْمُسْرِفِينَ
আর কেউ ঈমান আনল না মূসার প্রতি তাঁর কওমের কতিপয়
বালক ছাড়া-ফেরাউ ন ও তার সর্দারদের ভয়ে যে, এরা না আবার কোন বিপদে ফেলে
দেয়। ফেরাউন দেশময় কর্ত�ৃত্বের শিখরে আরোহণ করেছিল। আর সে তার হাত ছেড়ে
রেখেছিল। [ সুরা ইউনুস ১০:৮৩ ]
وَقَالَ مُوسَى يَا قَوْمِ إِن كُنتُمْ آمَنتُم بِاللّهِ فَعَلَيْهِ تَوَكَّلُواْ إِن كُنتُم مُّسْلِمِينَ
আর মূসা বলল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা যদি আল্লাহর
উপর ঈমান এনে থাক, তবে তারই উপর ভরসা কর যদি তোমরা ফরমাবরদার হয়ে থাক। [
সুরা ইউনুস ১০:৮৪ ]
فَقَالُواْ عَلَى اللّهِ تَوَكَّلْنَا رَبَّنَا لاَ تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
তখন তারা বলল, আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করেছি। হে আমাদের
পালনকর্তা, আমাদের উপর এ জালেম কওমের শক্তি পরীক্ষা করিও না। [ সুরা ইউনুস
১০:৮৫ ]
وَنَجِّنَا بِرَحْمَتِكَ مِنَ الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
আর আমাদেরকে অনুগ্রহ করে ছাড়িয়ে দাও এই কাফেরদের কবল থেকে। [ সুরা ইউনুস ১০:৮৬ ]
وَأَوْحَيْنَا إِلَى مُوسَى وَأَخِيهِ أَن تَبَوَّءَا
لِقَوْمِكُمَا بِمِصْرَ بُيُوتًا وَاجْعَلُواْ بُيُوتَكُمْ قِبْلَةً
وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
আর আমি নির্দেশ পাঠালাম মূসা এবং তার ভাইয়ের প্রতি
যে, তোমরা তোমাদের জাতির জন্য মিসরের মাটিতে বাস স্থান নির্ধারণ কর। আর
তোমাদের ঘরগুলো বানাবে কেবলামুখী করে এবং নামায কায়েম কর আর যারা ঈমানদার
তাদেরকে সুসংবাদ দান কর। [ সুরা ইউনুস ১০:৮৭ ]
وَقَالَ مُوسَى رَبَّنَا إِنَّكَ آتَيْتَ فِرْعَوْنَ
وَمَلأهُ زِينَةً وَأَمْوَالاً فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا رَبَّنَا
لِيُضِلُّواْ عَن سَبِيلِكَ رَبَّنَا اطْمِسْ عَلَى أَمْوَالِهِمْ
وَاشْدُدْ عَلَى قُلُوبِهِمْ فَلاَ يُؤْمِنُواْ حَتَّى يَرَوُاْ الْعَذَابَ
الأَلِيمَ
মূসা বলল, হে আমার পরওয়ারদেগার, তুমি ফেরাউনকে এবং
তার সর্দারদেরকে পার্থব জীবনের আড়ম্বর দান করেছ, এবং সম্পদ দান করেছ-হে
আমার পরওয়ারদেগার, এ জন্যই যে তারা তোমার পথ থেকে বিপথগামী করব! হে আমার
পরওয়ারদেগার, তাদের ধন-সম্পদ ধ্বংস করে দাও এবং তাদের অন্তরগুলোকে কাঠোর
করে দাও যাতে করে তারা ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান না আনে যতক্ষণ না বেদনাদায়ক
আযাব প্রত্যক্ষ করে নেয়। [ সুরা ইউনুস ১০:৮৮ ]
قَالَ قَدْ أُجِيبَت دَّعْوَتُكُمَا فَاسْتَقِيمَا وَلاَ تَتَّبِعَآنِّ سَبِيلَ الَّذِينَ لاَ يَعْلَمُونَ
বললেন, তোমাদের দোয়া মঞ্জুর হয়েছে। অতএব তোমরা দুজন অটল থাকো এবং তাদের পথে চলো না যারা অজ্ঞ। [ সুরা ইউনুস ১০:৮৯ ]
وَجَاوَزْنَا بِبَنِي إِسْرَائِيلَ الْبَحْرَ
فَأَتْبَعَهُمْ فِرْعَوْنُ وَجُنُودُهُ بَغْيًا وَعَدْوًا حَتَّى إِذَا
أَدْرَكَهُ الْغَرَقُ قَالَ آمَنتُ أَنَّهُ لا إِلِـهَ إِلاَّ الَّذِي
آمَنَتْ بِهِ بَنُو إِسْرَائِيلَ وَأَنَاْ مِنَ الْمُسْلِمِينَ
আর বনী-ইসরাঈলক ে আমি পার করে দিয়েছি নদী। তারপর
তাদের পশ্চাদ্ধাবন করেছে ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী, দুরাচার ও বাড়াবাড়ির
উদ্দেশে। এমনকি যখন তারা ডুবতে আরম্ভ করল, তখন বলল, এবার বিশ্বাস করে
নিচ্ছি যে, কোন মা'বুদ নেই তাঁকে ছাড়া যাঁর উপর ঈমান এনেছে বনী-ইসরাঈলর া।
বস্তুতঃ আমিও তাঁরই অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত। [ সুরা ইউনুস ১০:৯০ ]
آلآنَ وَقَدْ عَصَيْتَ قَبْلُ وَكُنتَ مِنَ الْمُفْسِدِينَ
এখন একথা বলছ! অথচ তুমি ইতিপূর্বে না-ফরমানী করছিলে। এবং পথভ্রষ্টদেরই অন্তর্ভুক্ত ছিলে। [ সুরা ইউনুস ১০:৯১ ]
فَالْيَوْمَ نُنَجِّيكَ بِبَدَنِكَ لِتَكُونَ لِمَنْ خَلْفَكَ آيَةً وَإِنَّ كَثِيراً مِّنَ النَّاسِ عَنْ آيَاتِنَا لَغَافِلُونَ
অতএব আজকের দিনে বাঁচিয়ে দিচ্ছি আমি তোমার দেহকে যাতে
তোমার পশ্চাদবর্তীদের জন্য নিদর্শন হতে পারে। আর নিঃসন্দেহে বহু লোক আমার
মহাশক্তির প্রতি লক্ষ্য করে না। [ সুরা ইউনুস ১০:৯২ ]
وَلَقَدْ بَوَّأْنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ مُبَوَّأَ
صِدْقٍ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ فَمَا اخْتَلَفُواْ حَتَّى
جَاءهُمُ الْعِلْمُ إِنَّ رَبَّكَ يَقْضِي بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
فِيمَا كَانُواْ فِيهِ يَخْتَلِفُونَ
আর আমি বনী-ইসরাঈলদ িগকে দান করেছি উত্তম স্থান এবং
তাদেরকে আহার্য দিয়েছি পবিত্র-পরিচ ্ছন্ন বস্তু-সামগ্ রী। বস্তুতঃ তাদের
মধ্যে মতবিরোধ হয়নি যতক্ষণ না তাদের কাছে এসে পৌছেছে সংবাদ। নিঃসন্দেহে
তোমার পরওয়ারদেগার তাদের মাঝে মীমাংসা করে দেবেন কেয়ামতের দিন; যে
ব্যাপারে তাদের মাঝে মতবিরোধ হয়েছিল [ সুরা ইউনুস ১০:৯৩ ]
فَإِن كُنتَ فِي شَكٍّ مِّمَّا أَنزَلْنَا إِلَيْكَ
فَاسْأَلِ الَّذِينَ يَقْرَؤُونَ الْكِتَابَ مِن قَبْلِكَ لَقَدْ جَاءكَ
الْحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَلاَ تَكُونَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِينَ
সুতরাং তুমি যদি সে বস্তু সম্পর্কে কোন সন্দেহের
সম্মুখীন হয়ে থাক যা তোমার প্রতি আমি নাযিল করেছি, তবে তাদেরকে জিজ্ঞেস
করো যারা তোমার পূর্ব থেকে কিতাব পাঠ করছে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, তোমার
পরওয়ারদেগারের নিকট থেকে তোমার নিকট সত্য বিষয় এসেছে। কাজেই তুমি
কস্মিনকালেও সন্দেহকারী হয়ো না। [ সুরা ইউনুস ১০:৯৪ ]
وَلاَ تَكُونَنَّ مِنَ الَّذِينَ كَذَّبُواْ بِآيَاتِ اللّهِ فَتَكُونَ مِنَ الْخَاسِرِينَ
এবং তাদের অন্তর্ভুক্তও হয়ো না যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন
করেছে আল্লাহর বাণীকে। তাহলে তুমিও অকল্যাণে পতিত হয়ে যাবে। [ সুরা ইউনুস
১০:৯৫ ]
إِنَّ الَّذِينَ حَقَّتْ عَلَيْهِمْ كَلِمَتُ رَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ
যাদের ব্যাপারে তোমার পরওয়ারদেগারের সিদ্ধান্ত নির্ধারিত হয়ে গেছে তারা ঈমান আনবে না। [ সুরা ইউনুস ১০:৯৬ ]
وَلَوْ جَاءتْهُمْ كُلُّ آيَةٍ حَتَّى يَرَوُاْ الْعَذَابَ الأَلِيمَ
যদি তাদের সামনে সমস্ত নিদর্শনাবলী এসে উপস্থিত হয় তবুও যতক্ষণ না তারা দেখতে পায় বেদনাদায়ক আযাব। [ সুরা ইউনুস ১০:৯৭ ]
فَلَوْلاَ كَانَتْ قَرْيَةٌ آمَنَتْ فَنَفَعَهَا
إِيمَانُهَا إِلاَّ قَوْمَ يُونُسَ لَمَّا آمَنُواْ كَشَفْنَا عَنْهُمْ
عَذَابَ الخِزْيِ فِي الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَمَتَّعْنَاهُمْ إِلَى حِينٍ
সুতরাং কোন জনপদ কেন এমন হল না যা ঈমান এনেছে অতঃপর
তার সে ঈমান গ্রহণ হয়েছে কল্যাণকর? অবশ্য ইউনুসের সম্প্রদায়ের কথা আলাদা।
তারা যখন ঈমান আনে তখন আমি তুলে নেই তাদের উপর থেকে অপমানজনক আযাব-পার্থি ব
জীবনে এবং তাদের কে কল্যাণ পৌছাই এক নিধারিত সময় পর্যন্ত। [ সুরা ইউনুস ১০:৯৮ ]
وَلَوْ شَاء رَبُّكَ لآمَنَ مَن فِي الأَرْضِ كُلُّهُمْ جَمِيعًا أَفَأَنتَ تُكْرِهُ النَّاسَ حَتَّى يَكُونُواْ مُؤْمِنِينَ
আর তোমার পরওয়ারদেগার যদি চাইতেন, তবে পৃথিবীর বুকে
যারা রয়েছে, তাদের সবাই ঈমান নিয়ে আসতে সমবেতভাবে। তুমি কি মানুষের উপর
জবরদস্তী করবে ঈমান আনার জন্য? [ সুরা ইউনুস ১০:৯৯ ]
وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ أَن تُؤْمِنَ إِلاَّ بِإِذْنِ اللّهِ وَيَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِينَ لاَ يَعْقِلُونَ
আর কারো ঈমান আনা হতে পারে না, যতক্ষণ না আল্লাহর
হুকুম হয়। পক্ষান্তরে তিনি অপবিত্রতা আরোপ করেন যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে
না তাদের উপর। [ সুরা ইউনুস ১০:১০০ ]
قُلِ انظُرُواْ مَاذَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَا تُغْنِي الآيَاتُ وَالنُّذُرُ عَن قَوْمٍ لاَّ يُؤْمِنُونَ
তাহলে আপনি বলে দিন, চেয়ে দেখ তো আসমানসমুহে ও যমীনে
কি রয়েছে। আর কোন নিদর্শন এবং কোন ভীতিপ্রর্দশনই কোন কাজে আসে না সেসব
লোকের জন্য যারা মান্য করে না। [ সুরা ইউনুস ১০:১০১ ]
فَهَلْ يَنتَظِرُونَ إِلاَّ مِثْلَ أَيَّامِ الَّذِينَ
خَلَوْاْ مِن قَبْلِهِمْ قُلْ فَانتَظِرُواْ إِنِّي مَعَكُم مِّنَ
الْمُنتَظِرِينَ
সুতরাং এখন আর এমন কিছু নেই, যার অপেক্ষা করবে, কিন্তু
সেসব দিনের মতই দিন, যা অতীত হয়ে গেছে এর পূর্বে। আপনি বলুন; এখন পথ দেখ;
আমিও তোমাদের সাথে পথ চেয়ে রইলাম। [ সুরা ইউনুস ১০:১০২ ]
ثُمَّ نُنَجِّي رُسُلَنَا وَالَّذِينَ آمَنُواْ كَذَلِكَ حَقًّا عَلَيْنَا نُنجِ الْمُؤْمِنِينَ
অতঃপর আমি বাঁচিয়ে নেই নিজের রসূলগণকে এবং তাদেরকে
যারা ঈমান এনেছে এমনিভাবে। ঈমানদারদের বাঁচিয়ে নেয়া আমার দায়িত্বও বটে। [
সুরা ইউনুস ১০:১০৩ ]
قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِن كُنتُمْ فِي شَكٍّ
مِّن دِينِي فَلاَ أَعْبُدُ الَّذِينَ تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللّهِ
وَلَـكِنْ أَعْبُدُ اللّهَ الَّذِي يَتَوَفَّاكُمْ وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ
مِنَ الْمُؤْمِنِينَ
বলে দাও-হে মানবকুল, তোমরা যদি আমার দ্বীনের ব্যাপারে
সন্দিহান হয়ে থাক, তবে (জেনো) আমি তাদের এবাদত করি না যাদের এবাদত তোমরা
কর আল্লাহ ব্যতীত। কিন্তু আমি এবাদত করি আল্লাহ ত'য়ালার, যিনি তুলে নেন
তোমাদেরকে। আর আমার প্রতি নির্দেশ হয়েছে যাতে আমি ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত
থাকি। [ সুরা ইউনুস ১০:১০৪ ]
وَأَنْ أَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا وَلاَ تَكُونَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
আর যেন সোজা দ্বীনের প্রতি মুখ করি সরল হয়ে এবং যেন মুশরেকদের অন্তর্ভুক্ত না হই। [ সুরা ইউনুস ১০:১০৫ ]
وَلاَ تَدْعُ مِن دُونِ اللّهِ مَا لاَ يَنفَعُكَ وَلاَ يَضُرُّكَ فَإِن فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِّنَ الظَّالِمِينَ
আর নির্দেশ হয়েছে আল্লাহ ব্যতীত এমন কাউকে ডাকবে না,
যে তোমার ভাল করবে না মন্দও করবে না। বস্তুতঃ তুমি যদি এমন কাজ কর, তাহলে
তখন তুমিও জালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। [ সুরা ইউনুস ১০:১০৬ ]
وَإِن يَمْسَسْكَ اللّهُ بِضُرٍّ فَلاَ كَاشِفَ لَهُ
إِلاَّ هُوَ وَإِن يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلاَ رَآدَّ لِفَضْلِهِ يُصَيبُ بِهِ
مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
আর আল্লাহ যদি তোমার উপর কোন কষ্ট আরোপ করেন তাহলে কেউ
নেই তা খন্ডাবার মত তাঁকে ছাড়া। পক্ষান্তরে যদি তিনি কিছু কল্যাণ দান
করেন, তবে তার মেহেরবানীকে রহিত করার মতও কেউ নেই। তিনি যার প্রতি অনুগ্রহ
দান করতে চান স্বীয় বান্দাদের মধ্যে তাকেই দান করেন; বস্তুত; তিনিই
ক্ষমাশীল দয়ালু। [ সুরা ইউনুস ১০:১০৭ ]
قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءكُمُ الْحَقُّ
مِن رَّبِّكُمْ فَمَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَن
ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا وَمَا أَنَاْ عَلَيْكُم بِوَكِيلٍ
বলে দাও, হে মানবকুল, সত্য তোমাদের কাছে পৌঁছে গেছে
তোমাদের পরওয়ারদেগারের তরফ থেকে। এমন যে কেউ পথে আসে সেপথ প্রাপ্ত হয়
স্বীয় মঙ্গলের জন্য। আর যে বিভ্রান্ত ঘুরতে থাকে, সে স্বীয় অমঙ্গলের জন্য
বিভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকবে। অনন্তর আমি তোমাদের উপর অধিকারী নই। [ সুরা ইউনুস ১০:১০৮ ]
وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ وَاصْبِرْ حَتَّىَ يَحْكُمَ اللّهُ وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ
আর তুমি চল সে অনুযায়ী যেমন নির্দেশ আসে তোমার প্রতি
এবং সবর কর, যতক্ষণ না ফয়সালা করেন আল্লাহ। বস্তুতঃ তিনি হচ্ছেন সর্বোত্তম
ফয়সালাকারী। [ সুরা ইউনুস ১০:১০৯ ]
0 Comments