কবরে আযাবের কারন, পেশাব থেকে অসতর্ক ব্যক্তির কবরের আযাব, পেশাবের ছিটা থেকে অসতর্কতার পরিনতি।


আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বেশির ভাগ ক্ববরে আযাব পেশাব থেকে অসতর্কতার কারণেই হয়ে থাকে। [1]
আবদুর রহমান ইবনু হাসানাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট বেরিয়ে এলেন। তাঁর হাতে ছিল একটি ঢাল। তিনি সেটিকে (সামনে) রেখে বসেন এবং সে দিকে ফিরে পেশাব করেন। তাদের কোন এক ব্যাক্তি বললো, তাঁকে দেখ! তিনি মহিলাদের মত পেশাব করছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কথা শুনে ফেলেন এবং বলেনঃ তোমার জন্য দুঃখ হয়। তোমার কি জানা নেই যে, বানী ইসরাঈলের সেই ব্যাক্তির কী দশা হয়েছিল? তাদের শরীরের কোন অংশে পেশাব লাগলে তারা তা কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলতো। সে তাদেরকে এরূপ করতে নিষেধ করে। ফলে তাকে তার ক্ববরে শাস্তি দেয়া হয়।
আবূল হাসান ইবনু সালামাহ, আবূ হাতিম, উবাঈদুল্লাহ ইবনু মূসা আমাশ (রহঃ) থেকে এই সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। [2]
ইবনু 'আববাস (রাযি।) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা মাদ্বীনা বা মক্কার বাগানগুলোর মধ্য হতে কোন এক বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এমন দু 'ব্যক্তির আওয়ায শুনতে পেলেন যে, তাদেরকে কবরে আযাব দেয়া হচ্ছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এদের দু'জনকে আযাব দেয়া হচ্ছে, অথচ কোন গুরুতর অপরাধে তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তারপর তিনি বললেনঃ 'হ্যাঁ, এদের একজন তার পেশাব করতে গিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করত না। অপর ব্যক্তি চোগলখোরী করত। অতঃপর তিনি একটি খেজুরের ডাল আনতে বললেন, এবং তা ভেঙ্গে দু 'টুকরা করে প্রত্যেকের কবরের উপর এক টুকরা করে রাখলেন। তাঁকে বলা হল, 'হে আল্লাহর রাসূল! কেন এমন করলেন? ' তিনি বললেনঃ আশা করা যেতে পারে যতক্ষণ পর্যন্ত এ দু'টি শুকিয়ে না যায় তাদের আযাব কিছুটা হালকা করা হবে। [3]
আবূ সাঈদ আল আশাজ্জ (রহঃ), আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু'টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি বললেন, জেনে রাখ এ কবরবাসীদ্বয়কে আযাব দেয়া হচ্ছিল তবে কোন কঠিন (কাজের) দরুন তাদেরকে আযাব দেয়া হচ্ছেনা। তাদের একজন চোগলখুরী করত। আর অপরজন তার পেশাব থেকে সতর্কতা অবলম্বন করত না। তিনি [ইবনু আব্বাস (রাঃ)] বলেন, অতঃপর তিনি খেজুরের একটি কাঁচা ডাল আনিয়ে দু টুকরা করলেন। তারপর এ কবরের উপর একটি এবং অন্য কবরের উপর একটি পুতে দিলেন। এরপর বললেন, হয়ত বা এদের আযাব কিছুটা লাঘব করা হবে যতদিন পর্যন্ত এ দুটি শুকিয়ে না যাবে।
[4]
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটো কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় বললেন, '' ঐ দুই কবর-বাসীর আযাব হচ্ছে। অবশ্য ওদেরকে কোন বড় ধরনের অপরাধ [বা কোন কঠিন কাজের] জন্য আযাব দেওয়া হচ্ছে না। '' [তারপর বললেন,] '' হ্যাঁ, অপরাধ তো বড়ই ছিল। ওদের একজন [লোকের] চুগলী করে বেড়াত। আর অপরজন পেশাবের ছিটা থেকে বাঁচত না। '' (বুখারী) [5]
'ওদেরকে কোন বড় ধরনের অপরাধের জন্য আযাব দেওয়া হচ্ছে না'-এর ব্যাখ্যায় উলামাগণ বলেন, এর মানে তাদের দু'জনের ধারণা অনুপাতে তা বড় অপরাধ ছিল না। কারো মতে, এমন অপরাধ ছিল না, যা ত্যাগ করা তাদের জন্য খুব কঠিন ছিল।
[1] সুনানে ইবনে মাজাহ, 348 আহমাদ 8131, 8800। তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: ইরওয়াহ ২80
[2] সুনানে ইবনে মাজাহ 346, নাসায়ী 30, আহমাদ 17304। তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। 
[3] (সহীহ বুখারী (তাওহীদ), ২16,২18, 1361, 1378, 605২, 6055; মুসলিম ২/34, হাঃ ২9২, আহমাদ 1980) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২10, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২16)
হাদিসের মানঃ সহিহ
[4] সহীহ মুসলিম (ইফাঃ), 570
হাদিসের মানঃ সহিহ
[5] সহীহুল বুখারী ২16, ২18, 1361, 1378, 605২, 6055, মুসলিম ২9২, তিরমিযী 70, নাসায়ী 31, ২068, আবূ দাউদ ২0, ইবনু মাজাহ 347, আহমাদ 1981, দারেমী 739 হাদিসের মানঃ সহিহ
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,' 'যে ​​ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না। '' [1] [1] মুসলিম ২674, তিরমিযী ২674, আবূ দাউদ 4619, আহমাদ 8915, দারেমী 513 হাদিসের মানঃ সহিহ (সহীহ
কবরের আযাব

Post a Comment

0 Comments