সুরা ফাতির | বাংলা অর্থসহ সূরা ফাতির। |
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَاعِلِ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا أُولِي أَجْنِحَةٍ مَّثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاء إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা
এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক- তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার
পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টি মধ্যে যা ইচ্ছা যোগ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ
সর্ববিষয়ে সক্ষম। [ সুরা ফাতির ৩৫:১ ]
مَا يَفْتَحِ اللَّهُ لِلنَّاسِ مِن رَّحْمَةٍ فَلَا
مُمْسِكَ لَهَا وَمَا يُمْسِكْ فَلَا مُرْسِلَ لَهُ مِن بَعْدِهِ وَهُوَ
الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
আল্লাহ মানুষের জন্য অনুগ্রহের মধ্য থেকে যা খুলে দেন,
তা ফেরাবার কেউ নেই এবং তিনি যা বারণ করেন, তা কেউ প্রেরণ করতে পারে না
তিনি ব্যতিত। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। [ সুরা ফাতির ৩৫:২ ]
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ
عَلَيْكُمْ هَلْ مِنْ خَالِقٍ غَيْرُ اللَّهِ يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاء
وَالْأَرْضِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَأَنَّى تُؤْفَكُونَ
হে মানুষ, তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।
আল্লাহ ব্যতীত এমন কোন স্রষ্টা আছে কি, যে তোমাদেরকে আসমান ও যমীন থেকে
রিযিক দান করে? তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব তোমরা কোথায় ফিরে যাচ্ছ?
[ সুরা ফাতির ৩৫:৩ ]
وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ كُذِّبَتْ رُسُلٌ مِّن قَبْلِكَ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الأمُورُ
তারা যদি আপনাকে মিথ্যাবাদী বলে, তবে আপনার পূর্ববর্তী
পয়গম্বরগণকেও তো মিথ্যাবাদী বলা হয়েছিল। আল্লাহর প্রতিই যাবতীয় বিষয়
প্রত্যাবর্তিত হয়। [ সুরা ফাতির ৩৫:৪ ]
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ
فَلَا تَغُرَّنَّكُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَلَا يَغُرَّنَّكُم بِاللَّهِ
الْغَرُورُ
হে মানুষ, নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। সুতরাং,
পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে প্রতারণা না করে। এবং সেই প্রবঞ্চক যেন কিছুতেই
তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে। [ সুরা ফাতির ৩৫:৫ ]
إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا إِنَّمَا يَدْعُو حِزْبَهُ لِيَكُونُوا مِنْ أَصْحَابِ السَّعِيرِ
শয়তান তোমাদের শত্রু; অতএব তাকে শত্রু রূপেই গ্রহণ কর। সে তার দলবলকে আহবান করে যেন তারা জাহান্নামী হয়। [ সুরা ফাতির ৩৫:৬ ]
الَّذِينَ كَفَرُوا لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ
যারা কুফর করে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব। আর যারা
ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার। [ সুরা
ফাতির ৩৫:৭ ]
أَفَمَن زُيِّنَ لَهُ سُوءُ عَمَلِهِ فَرَآهُ حَسَنًا
فَإِنَّ اللَّهَ يُضِلُّ مَن يَشَاء وَيَهْدِي مَن يَشَاء فَلَا تَذْهَبْ
نَفْسُكَ عَلَيْهِمْ حَسَرَاتٍ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِمَا يَصْنَعُونَ
যাকে মন্দকর্ম শোভনীয় করে দেখানো হয়, সে তাকে উত্তম
মনে করে, সে কি সমান যে মন্দকে মন্দ মনে করে। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে ইচ্ছা
পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচছা সৎপথ প্রদর্শন করেন। সুতরাং আপনি তাদের জন্যে
অনুতাপ করে নিজেকে ধ্বংস করবেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ জানেন তারা যা করে। [ সুরা ফাতির ৩৫:৮ ]
وَاللَّهُ الَّذِي أَرْسَلَ الرِّيَاحَ فَتُثِيرُ
سَحَابًا فَسُقْنَاهُ إِلَى بَلَدٍ مَّيِّتٍ فَأَحْيَيْنَا بِهِ الْأَرْضَ
بَعْدَ مَوْتِهَا كَذَلِكَ النُّشُورُ
আল্লাহই বায়ু প্রেরণ করেন, অতঃপর সে বায়ু মেঘমালা
সঞ্চারিত করে। অতঃপর আমি তা মৃত ভূ-খন্ডের দিকে পরিচালিত করি, অতঃপর
তদ্বারা সে ভূ-খন্ডকে তার মৃত্যুর পর সঞ্জীবিত করে দেই। এমনিভাবে হবে
পুনরুত্থান। [ সুরা ফাতির ৩৫:৯ ]
مَن كَانَ يُرِيدُ الْعِزَّةَ فَلِلَّهِ الْعِزَّةُ
جَمِيعًا إِلَيْهِ يَصْعَدُ الْكَلِمُ الطَّيِّبُ وَالْعَمَلُ الصَّالِحُ
يَرْفَعُهُ وَالَّذِينَ يَمْكُرُونَ السَّيِّئَاتِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ
وَمَكْرُ أُوْلَئِكَ هُوَ يَبُورُ
কেউ সম্মান চাইলে জেনে রাখুন, সমস্ত সম্মান আল্লাহরই
জন্যে। তাঁরই দিকে আরোহণ করে সৎবাক্য এবং সৎকর্ম তাকে তুলে নেয়। যারা মন্দ
কার্যের চক্রান্তে লেগে থাকে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। তাদের
চক্রান্ত ব্যর্থ হবে। [ সুরা ফাতির ৩৫:১০ ]
وَاللَّهُ خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ
ثُمَّ جَعَلَكُمْ أَزْوَاجًا وَمَا تَحْمِلُ مِنْ أُنثَى وَلَا تَضَعُ
إِلَّا بِعِلْمِهِ وَمَا يُعَمَّرُ مِن مُّعَمَّرٍ وَلَا يُنقَصُ مِنْ
عُمُرِهِ إِلَّا فِي كِتَابٍ إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ
আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, অতঃপর
বীর্য থেকে, তারপর করেছেন তোমাদেরকে যুগল। কোন নারী গর্ভধারণ করে না এবং
সন্তান প্রসব করে না; কিন্তু তাঁর জ্ঞাতসারে। কোন বয়স্ক ব্যক্তি বয়স পায়
না। এবং তার বয়স হ্রাস পায় না; কিন্তু তা লিখিত আছে কিতাবে। নিশ্চয় এটা
আল্লাহর পক্ষে সহজ। [ সুরা ফাতির ৩৫:১১ ]
وَمَا يَسْتَوِي الْبَحْرَانِ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ
سَائِغٌ شَرَابُهُ وَهَذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَمِن كُلٍّ تَأْكُلُونَ لَحْمًا
طَرِيًّا وَتَسْتَخْرِجُونَ حِلْيَةً تَلْبَسُونَهَا وَتَرَى الْفُلْكَ
فِيهِ مَوَاخِرَ لِتَبْتَغُوا مِن فَضْلِهِ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
দু'টি সমুদ্র সমান হয় না-একটি মিঠা ও তৃষ্ণানিবারক
এবং অপরটি লোনা। ঊভয়টি থেকেই তোমরা তাজা গোশত (মৎস) আহার কর এবং পরিধানে
ব্যবহার্য গয়নাগাটি আহরণ কর। তুমি তাতে তার বুক চিরে জাহাজ চলতে দেখ, যাতে
তোমরা তার অনুগ্রহ অন্বেষণ কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। [ সুরা ফাতির ৩৫:১২ ]
يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ
النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي
لِأَجَلٍ مُّسَمًّى ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ وَالَّذِينَ
تَدْعُونَ مِن دُونِهِ مَا يَمْلِكُونَ مِن قِطْمِيرٍ
তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে
রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিয়োজিত করেছেন।
প্রত্যেকটি আবর্তন করে এক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত। ইনি আল্লাহ; তোমাদের
পালনকর্তা, সাম্রাজ্য তাঁরই। তাঁর পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা তুচ্ছ
খেজুর আঁটিরও অধিকারী নয়। [ সুরা ফাতির ৩৫:১৩ ]
إِن تَدْعُوهُمْ لَا يَسْمَعُوا دُعَاءكُمْ وَلَوْ
سَمِعُوا مَا اسْتَجَابُوا لَكُمْ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يَكْفُرُونَ
بِشِرْكِكُمْ وَلَا يُنَبِّئُكَ مِثْلُ خَبِيرٍ
তোমরা তাদেরকে ডাকলে তারা তোমাদের সে ডাক শুনে না।
শুনলেও তোমাদের ডাকে সাড়া দেয় না। কেয়ামতের দিন তারা তোমাদের শেরক
অস্বীকার করবে। বস্তুতঃ আল্লাহর ন্যায় তোমাকে কেউ অবহিত করতে পারবে না। [ সুরা ফাতির ৩৫:১৪ ]
يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَنتُمُ الْفُقَرَاء إِلَى اللَّهِ وَاللَّهُ هُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ
হে মানুষ, তোমরা আল্লাহর গলগ্রহ। আর আল্লাহ; তিনি অভাবমুক্ত, প্রশংসিত। [ সুরা ফাতির ৩৫:১৫ ]
إِن يَشَأْ يُذْهِبْكُمْ وَيَأْتِ بِخَلْقٍ جَدِيدٍ
তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে বিলুপ্ত করে এক নতুন সৃষ্টির উদ্ভব করবেন। [ সুরা ফাতির ৩৫:১৬ ]
وَمَا ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ بِعَزِيزٍ
এটা আল্লাহর পক্ষে কঠিন নয়। [ সুরা ফাতির ৩৫:১৭ ]
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى وَإِن تَدْعُ
مُثْقَلَةٌ إِلَى حِمْلِهَا لَا يُحْمَلْ مِنْهُ شَيْءٌ وَلَوْ كَانَ ذَا
قُرْبَى إِنَّمَا تُنذِرُ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِالغَيْبِ
وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَمَن تَزَكَّى فَإِنَّمَا يَتَزَكَّى لِنَفْسِهِ
وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার
বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও
হয়। আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখেও ভয়
করে এবং নামায কায়েম করে। যে কেউ নিজের সংশোধন করে, সে সংশোধন করে, স্বীয়
কল্যাণের জন্যেই আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন। [ সুরা ফাতির ৩৫:১৮ ]
وَمَا يَسْتَوِي الْأَعْمَى وَالْبَصِيرُ
দৃষ্টিমান ও দৃষ্টিহীন সমান নয়। [ সুরা ফাতির ৩৫:১৯ ]
وَلَا الظُّلُمَاتُ وَلَا النُّورُ
সমান নয় অন্ধকার ও আলো। [ সুরা ফাতির ৩৫:২০ ]
وَلَا الظِّلُّ وَلَا الْحَرُورُ
সমান নয় ছায়া ও তপ্তরোদ। [ সুরা ফাতির ৩৫:২১ ]
وَمَا يَسْتَوِي الْأَحْيَاء وَلَا الْأَمْوَاتُ إِنَّ اللَّهَ يُسْمِعُ مَن يَشَاء وَمَا أَنتَ بِمُسْمِعٍ مَّن فِي الْقُبُورِ
আরও সমান নয় জীবিত ও মৃত। আল্লাহ শ্রবণ করান যাকে ইচ্ছা। আপনি কবরে শায়িতদেরকে শুনাতে সক্ষম নন। [ সুরা ফাতির ৩৫:২২ ]
إِنْ أَنتَ إِلَّا نَذِيرٌ
আপনি তো কেবল একজন সতর্ককারী। [ সুরা ফাতির ৩৫:২৩ ]
إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَإِن مِّنْ أُمَّةٍ إِلَّا خلَا فِيهَا نَذِيرٌ
আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছি সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি। [ সুরা ফাতির ৩৫:২৪ ]
وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِن
قَبْلِهِمْ جَاءتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ وَبِالزُّبُرِ
وَبِالْكِتَابِ الْمُنِيرِ
তারা যদি আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে, তাদের
পূর্ববর্তীরাও মিথ্যারোপ করেছিল। তাদের কাছে তাদের রসূলগণ স্পষ্ট নিদর্শন,
সহীফা এবং উজ্জল কিতাবসহ এসেছিলেন। [ সুরা ফাতির ৩৫:২৫ ]
ثُمَّ أَخَذْتُ الَّذِينَ كَفَرُوا فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ
অতঃপর আমি কাফেরদেরকে ধৃত করেছিলাম। কেমন ছিল আমার আযাব! [ সুরা ফাতির ৩৫:২৬ ]
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ أَنزَلَ مِنَ السَّمَاء
مَاء فَأَخْرَجْنَا بِهِ ثَمَرَاتٍ مُّخْتَلِفًا أَلْوَانُهَا وَمِنَ
الْجِبَالِ جُدَدٌ بِيضٌ وَحُمْرٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهَا وَغَرَابِيبُ
سُودٌ
তুমি কি দেখনি আল্লাহ আকাশ থেকে বৃষ্টিবর্ষণ করেন,
অতঃপর তদ্দ্বারা আমি বিভিন্ন বর্ণের ফল-মূল উদগত করি। পর্বতসমূহের মধ্যে
রয়েছে বিভিন্ন বর্ণের গিরিপথ-সাদা , লাল ও নিকষ কালো কৃষ্ণ। [ সুরা ফাতির ৩৫:২৭ ]
وَمِنَ النَّاسِ وَالدَّوَابِّ وَالْأَنْعَامِ
مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ كَذَلِكَ إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ
الْعُلَمَاء إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ
অনুরূপ ভাবে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ, জন্তু, চতুস্পদ
প্রাণী রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে।
নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাময়। [ সুরা ফাতির ৩৫:২৮ ]
إِنَّ الَّذِينَ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ
وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَأَنفَقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا
وَعَلَانِيَةً يَرْجُونَ تِجَارَةً لَّن تَبُورَ
যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামায কায়েম করে, এবং
আমি যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা
কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না। [ সুরা ফাতির ৩৫:২৯ ]
لِيُوَفِّيَهُمْ أُجُورَهُمْ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضْلِهِ إِنَّهُ غَفُورٌ شَكُورٌ
পরিণামে তাদেরকে আল্লাহ তাদের সওয়াব পুরোপুরি দেবেন
এবং নিজ অনুগ্রহে আরও বেশী দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী। [
সুরা ফাতির ৩৫:৩০ ]
وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ هُوَ
الْحَقُّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ إِنَّ اللَّهَ بِعِبَادِهِ
لَخَبِيرٌ بَصِيرٌ
আমি আপনার প্রতি যে কিতাব প্রত্যাদেশ করেছি, তা
সত্য-পূর্বব র্তী কিতাবের সত্যায়ন কারী নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের
ব্যাপারে সব জানেন, দেখেন। [ সুরা ফাতির ৩৫:৩১ ]
ثُمَّ أَوْرَثْنَا الْكِتَابَ الَّذِينَ اصْطَفَيْنَا
مِنْ عِبَادِنَا فَمِنْهُمْ ظَالِمٌ لِّنَفْسِهِ وَمِنْهُم مُّقْتَصِدٌ
وَمِنْهُمْ سَابِقٌ بِالْخَيْرَاتِ بِإِذْنِ اللَّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَضْلُ
الْكَبِيرُ
অতঃপর আমি কিতাবের অধিকারী করেছি তাদেরকে যাদেরকে আমি
আমার বান্দাদের মধ্য থেকে মনোনীত করেছি। তাদের কেউ কেউ নিজের প্রতি
অত্যাচারী, কেউ মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর
নির্দেশক্রমে কল্যাণের পথে এগিয়ে গেছে। এটাই মহা অনুগ্রহ। [ সুরা ফাতির ৩৫:৩২ ]
جَنَّاتُ عَدْنٍ يَدْخُلُونَهَا يُحَلَّوْنَ فِيهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبٍ وَلُؤْلُؤًا وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ
তারা প্রবেশ করবে বসবাসের জান্নাতে। তথায় তারা
স্বর্ণনির্মিত, মোতি খচিত কংকন দ্বারা অলংকৃত হবে। সেখানে তাদের পোশাক হবে
রেশমের। [ সুরা ফাতির ৩৫:৩৩ ]
وَقَالُوا الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنَّا الْحَزَنَ إِنَّ رَبَّنَا لَغَفُورٌ شَكُورٌ
আর তারা বলবে-সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দূঃখ
দূর করেছেন। নিশ্চয় আমাদের পালনকর্তা ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী। [ সুরা ফাতির
৩৫:৩৪ ]
الَّذِي أَحَلَّنَا دَارَ الْمُقَامَةِ مِن فَضْلِهِ لَا يَمَسُّنَا فِيهَا نَصَبٌ وَلَا يَمَسُّنَا فِيهَا لُغُوبٌ
যিনি স্বীয় অনুগ্রহে আমাদেরকে বসবাসের গৃহে স্থান
দিয়েছেন, তথায় কষ্ট আমাদেরকে স্পর্শ করে না এবং স্পর্শ করে না ক্লান্তি। [
সুরা ফাতির ৩৫:৩৫ ]
وَالَّذِينَ كَفَرُوا لَهُمْ نَارُ جَهَنَّمَ لَا
يُقْضَى عَلَيْهِمْ فَيَمُوتُوا وَلَا يُخَفَّفُ عَنْهُم مِّنْ عَذَابِهَا
كَذَلِكَ نَجْزِي كُلَّ كَفُورٍ
আর যারা কাফের হয়েছে, তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের
আগুন। তাদেরকে মৃত্যুর আদেশও দেয়া হবে না যে, তারা মরে যাবে এবং তাদের
থেকে তার শাস্তিও লাঘব করা হবে না। আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে এভাবেই শাস্তি
দিয়ে থাকি। [ সুরা ফাতির ৩৫:৩৬ ]
وَهُمْ يَصْطَرِخُونَ فِيهَا رَبَّنَا أَخْرِجْنَا
نَعْمَلْ صَالِحًا غَيْرَ الَّذِي كُنَّا نَعْمَلُ أَوَلَمْ نُعَمِّرْكُم
مَّا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَن تَذَكَّرَ وَجَاءكُمُ النَّذِيرُ فَذُوقُوا
فَمَا لِلظَّالِمِينَ مِن نَّصِيرٍ
সেখানে তারা আর্ত চিৎকার করে বলবে, হে আমাদের
পালনকর্তা, বের করুন আমাদেরকে, আমরা সৎকাজ করব, পূর্বে যা করতাম, তা করব
না। (আল্লাহ বলবেন) আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি, যাতে যা চিন্তা করার
বিষয় চিন্তা করতে পারতে? উপরন্তু তোমাদের কাছে সতর্ককারীও আগমন করেছিল।
অতএব আস্বাদন কর। জালেমদের জন্যে কোন সাহায্যকারী নেই। [ সুরা ফাতির ৩৫:৩৭ ]
إِنَّ اللَّهَ عَالِمُ غَيْبِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
আল্লাহ আসমান ও যমীনের অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত। তিনি অন্তরের বিষয় সম্পর্কেও সবিশেষ অবহিত। [ সুরা ফাতির ৩৫:৩৮ ]
هُوَ الَّذِي جَعَلَكُمْ خَلَائِفَ فِي الْأَرْضِ
فَمَن كَفَرَ فَعَلَيْهِ كُفْرُهُ وَلَا يَزِيدُ الْكَافِرِينَ كُفْرُهُمْ
عِندَ رَبِّهِمْ إِلَّا مَقْتًا وَلَا يَزِيدُ الْكَافِرِينَ كُفْرُهُمْ
إِلَّا خَسَارًا
তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে স্বীয় প্রতিনিধি করেছেন।
অতএব যে কুফরী করবে তার কুফরী তার উপরই বর্তাবে। কাফেরদের কুফর কেবল তাদের
পালনকর্তার ক্রোধই বৃদ্ধি করে এবং কাফেরদের কুফর কেবল তাদের ক্ষতিই বৃদ্ধি
করে। [ সুরা ফাতির ৩৫:৩৯ ]
قُلْ أَرَأَيْتُمْ شُرَكَاءكُمُ الَّذِينَ تَدْعُونَ
مِن دُونِ اللَّهِ أَرُونِي مَاذَا خَلَقُوا مِنَ الْأَرْضِ أَمْ لَهُمْ
شِرْكٌ فِي السَّمَاوَاتِ أَمْ آتَيْنَاهُمْ كِتَابًا فَهُمْ عَلَى
بَيِّنَةٍ مِّنْهُ بَلْ إِن يَعِدُ الظَّالِمُونَ بَعْضُهُم بَعْضًا إِلَّا
غُرُورًا
বলুন, তোমরা কি তোমাদের সে শরীকদের কথা ভেবে দেখেছ,
যাদেরকে আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা ডাক? তারা পৃথিবীতে কিছু সৃষ্টি করে থাকলে
আমাকে দেখাও। না আসমান সৃষ্টিতে তাদের কোন অংশ আছে, না আমি তাদেরকে কোন
কিতাব দিয়েছি যে, তারা তার দলীলের উপর কায়েম রয়েছে, বরং জালেমরা একে
অপরকে কেবল প্রতারণামূলক ওয়াদা দিয়ে থাকে। [ সুরা ফাতির ৩৫:৪০ ]
إِنَّ اللَّهَ يُمْسِكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ أَن
تَزُولَا وَلَئِن زَالَتَا إِنْ أَمْسَكَهُمَا مِنْ أَحَدٍ مِّن بَعْدِهِ
إِنَّهُ كَانَ حَلِيمًا غَفُورًا
নিশ্চয় আল্লাহ আসমান ও যমীনকে স্থির রাখেন, যাতে টলে
না যায়। যদি এগুলো টলে যায় তবে তিনি ব্যতীত কে এগুলোকে স্থির রাখবে? তিনি
সহনশীল, ক্ষমাশীল। [ সুরা ফাতির ৩৫:৪১ ]
وَأَقْسَمُوا بِاللَّهِ جَهْدَ أَيْمَانِهِمْ لَئِن
جَاءهُمْ نَذِيرٌ لَّيَكُونُنَّ أَهْدَى مِنْ إِحْدَى الْأُمَمِ فَلَمَّا
جَاءهُمْ نَذِيرٌ مَّا زَادَهُمْ إِلَّا نُفُورًا
তারা জোর শপথ করে বলত, তাদের কাছে কোন সতর্ককারী আগমন
করলে তারা অন্য যে কোন সম্প্রদায় অপেক্ষা অধিকতর সৎপথে চলবে। অতঃপর যখন
তাদের কাছে সতর্ককারী আগমন করল, তখন তাদের ঘৃণাই কেবল বেড়ে গেল। [ সুরা ফাতির ৩৫:৪২ ]
اسْتِكْبَارًا فِي الْأَرْضِ وَمَكْرَ السَّيِّئِ
وَلَا يَحِيقُ الْمَكْرُ السَّيِّئُ إِلَّا بِأَهْلِهِ فَهَلْ يَنظُرُونَ
إِلَّا سُنَّتَ الْأَوَّلِينَ فَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ اللَّهِ تَبْدِيلًا
وَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ اللَّهِ تَحْوِيلًا
পৃথিবীতে ঔদ্ধত্যের কারণে এবং কুচক্রের কারণে। কুচক্র
কুচক্রীদেরকেই ঘিরে ধরে। তারা কেবল পূর্ববর্তীদের দশারই অপেক্ষা করছে। অতএব
আপনি আল্লাহর বিধানে পরিবর্তন পাবেন না এবং আল্লাহর রীতি-নীতিতে কোন রকম
বিচ্যুতিও পাবেন না। [ সুরা ফাতির ৩৫:৪৩ ]
أَوَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ
كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَكَانُوا أَشَدَّ مِنْهُمْ
قُوَّةً وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُعْجِزَهُ مِن شَيْءٍ فِي السَّمَاوَاتِ
وَلَا فِي الْأَرْضِ إِنَّهُ كَانَ عَلِيمًا قَدِيرًا
তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না? করলে দেখত তাদের
পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছে। অথচ তারা তাদের অপেক্ষা অধিকতর শক্তিশালী
ছিল। আকাশ ও পৃথিবীতে কোন কিছুই আল্লাহকে অপারগ করতে পারে না। নিশ্চয় তিনি
সর্বজ্ঞ সর্বশক্তিমান। [ সুরা ফাতির ৩৫:৪৪ ]
وَلَوْ يُؤَاخِذُ اللَّهُ النَّاسَ بِمَا كَسَبُوا مَا
تَرَكَ عَلَى ظَهْرِهَا مِن دَابَّةٍ وَلَكِن يُؤَخِّرُهُمْ إِلَى أَجَلٍ
مُّسَمًّى فَإِذَا جَاء أَجَلُهُمْ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِعِبَادِهِ
بَصِيرًا
যদি আল্লাহ মানুষকে তাদের কৃতকর্মের কারণে পাকড়াও
করতেন, তবে ভুপৃষ্ঠে চলমানকাউকে ছেড়ে দিতেন না। কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট
মেয়াদ পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দেন। অতঃপর যখন সে নির্দিষ্ট মেয়াদ এসে যাবে
তখন আল্লাহর সব বান্দা তাঁর দৃষ্টিতে থাকবে। [ সুরা ফাতির ৩৫:৪৫ ]
0 Comments