২৯। প্রশ্ন : সূফী ত্বত্তের ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান কি?
২৯। উত্তর : সূফীবাদ রাসূল, সাহাবা ও তাবিয়ীদের যুগে ছিল না। পরবর্তী যুগে ইউনান তথা গ্রীক দর্শন আরবী ভাষায় অনুবাদ হওয়ার পর তা প্রকাশ পায়।
ইসলামের সাথে সূফীবাদের বহুক্ষেত্রে বিরোধ রয়েছে। যেমন :
১।
আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যের নিকট প্রার্থনা : অধিকাংশ সূফীগণ আল্লাহ্ ব্যতীত
মৃত ব্যক্তির নিকট প্রার্থনা করে, অথচ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহ্ আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন : "দুআই হলো ইবাদত।" (তিরমিজী) কারণ, আল্লাহ্ ব্যতীত
অন্যের নিকট প্রার্থনা করা বড় শিরকের অন্তর্ভুক্ত যা সমস্ত সৎকর্ম নষ্ট
করে দেয়।
২। অধিকাংশ সূফীগণ বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ্ তাআলা স্বীয় স্বত্ত্বায় সর্বস্থানে বিরাজমান। অথচ তা কুরআন বিরোধী। ইরশাদ হচ্ছে :
اَلرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى
"দয়াময় 'আরশে' সমাসীন।" (তা-হা : ৫) (এর ব্যাখ্যায় বুখারীর ভাষ্য অনুযায়ী তিনি ওপরে ও উচ্চে অধিষ্টিত।)
৩।
কতিপয় সূফীর বিশ্বাস, আল্লাহ্ তাআলা তাঁর সৃষ্টি জীবের ভিতরে অবতরণ
করেন। যেমন ভ্রান্ত সূফী সম্রাট ইব্নে আরাবী -যার কবর সিরিয়ার দামেস্কে-
বলেন :
"বান্দাই তো রব আর রবই তো বান্দা। হায়! কিছুই বুঝিনা, কে আমল করার জন্য আদিষ্ট?"
তাদের আরেক তাগুত বলে: "কুকুর হোক আর শুকর হোক, সেই তো আমাদের মা'বুদ।"
৪।
অধিকাংশ সূফীর ধারনা যে আল্লাহ্ তাআলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর জন্য দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন। অথচ এটা কুরআন বিরোধী আক্বীদা।
ইরশাদ হচ্ছে :
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالإِنْسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُوْنِ
"আমি জ্বিন ও মানুষকে ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।" সূরা আজ-জারিয়াত : ৫৬
অন্যত্র বলেন :
وَإِنَّ لَنَا لَلآخِرَةَ وَالأُوْلَى
"আমি তো পরকাল ও ইহ্কালের মালিক।" সূরা আল-লাইল : ১৩
৫।
অধিকাংশ সূফীর ধারণা আল্লাহ্ মুহাম্মাদকে স্বীয় নূর দ্বারা এবং
মুহাম্মাদের নূর দ্বারা সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, মুহাম্মাদই হচ্ছে আল্লাহ্র
প্রথম সৃষ্টি। তাদের এ ধারণা কুরআন বিরোধী।
৬।
সুফীদের ইসলাম বিরোধী আকীদার কতিপয় নমুনা। যেমন: অলীদের নামে মান্নত করা,
ওলীদের কবরের চারিপাশে তওয়াফ করা, কবরের ওপর নির্মাণ কার্য করা, আল্লাহ্
ও রাসূল থেকে বর্ণিত হয়নি এমন বিশেষ পন্থায় জিকির করা, জিকরের সময়
নাচা-নাচি, ধুমপান বা গাঁজা খাওয়া, তাবীজ-কবচ, জাদু, ভেল্কিবাজী, অন্যের
মাল-সম্পদ নানা প্রতারনায় ভক্ষণ এবং তাদের উপর বিভিন্ন ছলনা, বাহানা করা
প্রভৃতি অনেক ধরনের ভ্রান্ত আক্বীদা ও কার্যকলাপ দেখা যায় তাদের মধ্যে।
0 Comments