আল্লাহ্‌র পথে দাওয়াতের বিধান




৩৬। প্রশ্ন : আল্লাহ্‌র পথে দাওয়াত এবং ইসলামের জন্য কাজ করার বিধান কি ?
৩৬। উত্তর : আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়া প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। কুরআন-হাদীস কর্তৃক প্রত্যেকেই এর দায়িত্বপ্রাপ্ত। এর জন্য আল্লাহর সরাসরি নিদের্শও বিদ্যমান রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন :
اُدْعُ إِلَى سَبِيْلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ
"তুমি তোমার রবের পথে হিকমত ও উত্তম ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমে আহ্বান কর।" সূরা আন-নাহাল : ১২৫
আল্লাহ্‌ আরো বলেন :
وَجَاهِدُوْا فِيْ اللهِ حَقَّ جِهَادِهِ
"তোমরা আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ কর যেভাবে জিহাদ করা উচিত।" সূরা আল-হজ : ৭৮
অতএব, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত সার্বিকভাবে জিহাদে অংশ নেয়া। এবং সামর্থের সবটুকু উজাড় করে দেয়া।
বিশেষ করে বর্তমান যুগে ইসলামের কাজ করা, আল্লাহ্‌র পথে দাওয়াত ও তাঁর পথে জিহাদ করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে বরং প্রত্যেক মুসলমানের জন্য তা আবশ্যক হয়ে গেছে। অতএব, এর থেকে বিমুখ ব্যক্তি আল্লাহ্‌র দরবারে পাপী-গুনাহ্‌গার বলে বিবেচিত হবে।

৩৭। প্রশ্ন : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কবর বা অন্য নবী এবং সৎ ব্যক্তিদের কবর স্পর্শ করা এমনিভাবে মাকামে ইব্‌রাহীম, কাবা ঘরের দেয়াল-গেলাফ এবং দরজা স্পর্শ করার বিধান কি ?
৩৮। উত্তর : কবর স্পর্শ করার ব্যাপারে আবুল আব্বাস রাহেমাহুল্লাহ্‌ বর্ণনা করেন :
উলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা অন্য কোন নবী বা সৎ ব্যক্তিদের কবর যিয়ারত করার সময় হাত দিয়ে স্পর্শ কিংবা মুখ দিয়ে চুম্বন করা যাবে না। দুনিয়াতে জড় পদার্থের মধ্যে হজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) ব্যতীত কোন বস্তু চুম্বন দেয়া বৈধ নয়। বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু হজরে আসওয়াদকে উদ্দেশ্য করে বলেন : "আল্লাহ্‌র শপথ ! নিশ্চয় আমি জানি যে, তুমি একটি পাথর মাত্র। তুমি ক্ষতিও করতে পারবে না উপকারও করতে পারবে না। অতএব, আমি যদি রাসূলুল্লাহকে চুম্বন দিতে না দেখতাম তবে আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না।" আর চুম্বন দেয়া ও স্পর্শ করা শুধুমাত্র বায়তুল্লাহ্‌র (কাবা শরীফের) কোণের জন্য নির্ধারিত। অতএব আল্লাহ্‌র ঘরের সাথে সৃষ্টি জীবের ঘরের তুলনা করা যাবে না।
ইমাম গায্‌যালী রাহেমাহুল্লাহ্‌ বলেন : "কবর স্পর্শ করা ইহুদী ও খৃষ্টানদের অভ্যাস।"
মাকামে ইব্‌রাহীমের ব্যাপারে কাতাদা বলেন : "মাকামে ইব্‌রাহীমের নিকট নামায পড়ার জন্য আদেশ করা হয়েছে তা স্পর্শ করার জন্য আদেশ করা হয়নি।"
ইমাম নবভী বলেন : "মাকামে ইব্‌রাহীম চুম্বন ও স্পর্শ করা যাবে না, এটা বিদআত।"
কাবা ঘরের অন্যান্য অংশ সম্পর্কে আবুল আব্বাস বর্ণনা করেন: চার ইমাম ও অন্যান্য ইমামদের মতে রুকনে ইয়ামানীকে শুধু হাত দিয়ে স্পর্শ এবং হজরে আসওয়াদকে মুখ দিয়ে চুম্বন ও হাত দিয়ে স্পর্শ করা যাবে। এ ছাড়া অবশিষ্ট দুই কোণ বা কাবা শরীফের অন্যান্য অংশ চুম্বন কিংবা স্পর্শ করা যাবে না। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকনে ইয়ামানী ও হজরে আসওয়াদ ব্যতীত অন্য কিছু স্পর্শ করেননি।
অতএব, যেখানে উক্ত দুই কোণ ব্যতীত কাবার অন্য কোন অংশ স্পর্শ ও চুম্বন জায়েয নেই, অথচ তা বাইতুল্লাহর অংশ, সেখানে কাবা শরীফের গেলাফ, দরজা ও মক্কা-মদীনা মসজিদের দরজাসমূহ স্পর্শ ও চুম্বন করার বৈধতার প্রশ্নই আসে না।

Post a Comment

0 Comments