মহান আল্লাহ বলেন,
﴿ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنٗا وَبِذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ
وَٱلۡيَتَٰمَىٰ وَٱلۡمَسَٰكِينِ وَٱلۡجَارِ ذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡجَارِ
ٱلۡجُنُبِ وَٱلصَّاحِبِ بِٱلۡجَنۢبِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتۡ
أَيۡمَٰنُكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ مَن كَانَ مُخۡتَالٗا فَخُورًا
٣٦ ﴾ [النساء : ٣٦]
অর্থাৎ পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, আত্মীয়
ও অনাত্মীয় প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত
দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার কর। নিশ্চয় আল্লাহ আত্মম্ভরি দাম্ভিককে
ভালবাসেন না। (সূরা নিসা ৩৬ আয়াত)
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য
শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সে তাকে বেঁধে রেখেছিল এবং অবশেষে সে মারা গিয়েছিল,
পরিণতিতে মহিলা তারই কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করল। সে যখন তাকে বেঁধে
রেখেছিল, তখন তাকে আহার ও পানি দিত না এবং তাকে ছেড়েও দিত না যে, সে
কীট-পতঙ্গ ধরে খাবে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
[1] সহীহুল বুখারী ২৩৬৫, ৩৩১৮, ৩৪৮২, মুসলিম ২২৪২, দারেমী ২৮১৪ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
২/১৬০৯। উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি একবার
কুরাইশ বংশের কতিপয় নবযুবকের নিকট দিয়ে অতিক্রম করার সময় লক্ষ্য করলেন যে,
তারা একটি পাখীকে বেঁধে [হাতের নিশানা ঠিক করার মানসে তার উপর নির্দয়-ভাবে]
তীর মারছে। তারা পাখীর মালিকের সাথে এই চুক্তি করেছিল যে, প্রতিটি
লক্ষ্যভ্রষ্ট তীর তার হয়ে যাবে। সুতরাং যখন তারা ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু
আনহু-কে দেখতে পেল, তখন ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে গেল। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু
আনহু বললেন, ‘এ কাজ কে করেছে? যে এ কাজ করেছে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ।
নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই ব্যক্তির উপর
অভিশাপ করেছেন, যে কোন এমন জিনিসকে [তার তীর-খেলার] লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত
করে, যার মধ্যে প্রাণ আছে।’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
[1] সহীহুল বুখারী ৫৫১৪, ৫৫১৫, মুসলিম ১৯০৮, নাসায়ী ৪৪৪১,
৪৪৪২, আহমাদ ৪৬০৮, ৪৯৯৮, ৫২২৫, ৫৫৬২, ৫৬৪৯, ৫৭৬৭, ৬২২৩, দারেমী ১৯৭৩
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীব-জন্তুদের বেঁধে রেখে [তীর বা বন্দুকের
নিশানা ঠিক করার ইচ্ছায়] হত্যা করতে নিষেধ করেছেন।’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
[1] সহীহুল বুখারী ৫৫১৩, মুসলিম ১৯৫৬, নাসায়ী ৪৪৩৯, আবূ দাউদ
২৮১৬,ইবনু মাজাহ ৩১৮৬, আহমাদ ১১৭৫১, ১২৩৩৫, ১২৪৫১, ১২৫৭০ হাদিসের মানঃ সহিহ
(Sahih)
আবূ মাসঊদ বাদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমি একদা আমার একটি গোলামকে চাবুক মারছিলাম। ইত্যবসরে পিছন থেকে এই শব্দ
শুনতে পেলাম ‘জেনে রেখো, হে আবূ মাসঊদ!’ কিন্তু ক্রোধান্বিত অবস্থায়
শব্দটা বুঝতে পারলাম না। যখন সেই [শব্দকারী] আমার নিকটবর্তী হল, তখন সহসা
দেখলাম যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি
বলছিলেন, ‘জেনে রেখো আবূ মাসঊদ! ওর উপর তোমার যতটা ক্ষমতা আছে, তোমার উপর
আল্লাহ তা‘আলা আরও বেশি ক্ষমতাবান।’ তখন আমি বললাম, ‘এরপর থেকে আমি আর কখনো
কোন গোলামকে মারধর করব না।’
এক বর্ণনায় আছে, তাঁর ভয়ে আমার হাত থেকে চাবুকটি পড়ে গেল। আমি
বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে ওকে
স্বাধীন করে দিলাম।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
‘‘শোন! তুমি যদি তা না করতে, তাহলে জাহান্নামের আগুন তোমাকে অবশ্যই দগ্ধ
অথবা স্পর্শ করত।’’ (মুসলিম) [1]
[1] মুসলিম ১৬৫৯, তিরমিযী ১৯৪৮, আবূ দাউদ ৫১৫৯, আহমাদ ১৬৬৩৮, ২১৮৪৫, ২১৮৪৯ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হিশাম ইবনে হাকীম ইবনে হিযাম রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
সিরিয়ায় এমন কিছু চাষী লোকের নিকট দিয়ে তাঁর যাত্রা হচ্ছিল, যাদেরকে রোদে
দাঁড় করিয়ে তাদের মাথার উপর তেল ঢেলে দেওয়া হচ্ছিল। তিনি প্রশ্ন করলেন,
‘ব্যাপার কি?’ বলা হল, ‘ওদেরকে জমির কর [আদায় না দেওয়ার] জন্য সাজা দেওয়া
হচ্ছে।’ অন্য বর্ণনায় আছে যে, ‘রাজসব [আদায় না করার] কারণে ওদেরকে বন্দী
করা হয়েছে।’ হিশাম বললেন, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা
সেসব লোকদেরকে কষ্ট দেবেন, যারা লোকদেরকে কষ্ট দেয়।’’ অতঃপর হিশাম আমীরের
নিকট গিয়ে এ হাদিসটি শোনালেন। তিনি তাদের সম্পর্কে নির্দেশ জারি করলেন এবং
তাদেরকে মুক্ত করে দিলেন। (মুসলিম)[1]
[1] মুসলিম ২৬১৩, আবূ দাউদ ৩০৪৫, আহমাদ ১৪৯০৬, ১৪৯১০, ১৫৪১৯ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন একটি গাধা দেখতে পেলেন,
যার চেহারা দাগা হয়েছিল। তা দেখে তিনি অত্যধিক অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। অতঃপর
বললেন, ‘‘আল্লাহর কসম! আমি ওর চেহারা থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী অঙ্গে দাগব।
[আগুনের ছ্যাঁকা দিয়ে চিহ্ন দেব।]’’ অতঃপর তিনি নিজ গাধা সম্পর্কে নির্দেশ
করলেন এবং তার পাছায় দাগা হল। সুতরাং তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি [গাধার]
পাছা দেগেছিলেন। (মুসলিম) [1]
[1] মুসলিম ২১১৮ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
0 Comments