জানাযার সালাতের দুআ।


জানাযার দো‘আ (دعاء الجنازة) :
অনেকগুলি দো‘আর মধ্যে নিম্নের দো‘আটি সুপরিচিত।-
1- اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا، اَللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الْإِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الْإِيْمَانِ، اَللَّهُمَّ لاَ تَحْرِمْنَا أَجْرَهُ وَلاَ تَفْتِنَّا بَعْدَهُ-
(১) উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগ্ফির লিহাইয়েনা ওয়া মাইয়েতেনা ওয়া শা-হেদেনা ওয়া গা-য়েবেনা ওয়া ছাগীরেনা ওয়া কাবীরেনা ওয়া যাকারেনা ওয়া উন্ছা-না, আল্লা-হুম্মা মান আই্য়াইতাহূ মিন্না ফাআহ্য়িহী ‘আলাল ইসলাম, ওয়া মান তাওয়াফ্ফায়তাহূ মিন্না ফাতাওফ্ফাহূ ‘আলাল ঈমান। আল্লা-হুম্মা লা তাহরিমনা আজরাহূ ওয়া লা তাফ্তিন্না বা‘দাহূ।
অনূবাদ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত এবং (এই জানাযায়) উপস্থিত-অনুপস্থিত আমাদের ছোট ও বড়, পুরুষ ও নারী সকলকে আপনি ক্ষমা করুন। যাকে আপনি বাঁচিয়ে রাখবেন, তাকে ইসলামের উপরে বাঁচিয়ে রাখুন এবং যাকে মারতে চান, তাকে ঈমানের হালতে মৃত্যু দান করুন। হে আল্লাহ! এই মাইয়েতের (জন্য দো‘আ করার) উত্তম প্রতিদান হ’তে আপনি আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না এবং তার পরে আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না’।[34]
(২) আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দো‘আ যা প্রথমটির সাথে যোগ করে পড়া যায় বিশেষভাবে মাইয়েতের উদ্দেশ্যে। যেমন-
2- اَللَّهُمَّ اغْفِرْلَهُ وَارْحَمْهُ وَعَافِهِ وَاعْفُ عَنْهُ وَأَكْرِمْ نُزُلَهُ وَوَسِّعْ مَدْخَلَهُ، وَاغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ، وَنَقِّهِ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّيْ الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، وَأَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِّنْ دَارِهِ وَأَهْلاً خَيْرًا مِّنْ أَهْلِهِ وَزَوْجًا خَيْرًا مِّنْ زَوْجِهِ، وَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَأَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَ مِنْ عَذَابِ النَّارِ-
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগ্ফির লা-হূ ওয়ারহামহু ওয়া ‘আ-ফিহি ওয়া‘ফু ‘আনহু ওয়া আকরিম নুযুলাহূ ওয়া ওয়াস্সি‘ মাদ্খালাহূ; ওয়াগ্সিলহু বিলমা-এ ওয়াছ্ছালজে ওয়াল বারাদে; ওয়া নাক্বক্বিহি মিনাল খাত্বা-য়া কামা ইউনাক্বক্বাছ্ ছাওবুল আবইয়াযু মিনাদ্ দানাসি; ওয়া আবদিলহু দা-রান খায়রান মিন দা-রিহী ওয়া আহলান খায়রাম মিন আহলিহী ওয়া যাওজান খায়রাম মিন যাওজিহী; ওয়া আদখিল্হুল জান্নাতা ওয়া আ‘ইয্হু মিন ‘আযা-বিল ক্বাবরে ওয়া মিন ‘আযা-বিন না-রে ।
অনুবাদ : হে আল্লাহ! আপনি এই মাইয়েতকে ক্ষমা করুন। তাকে অনুগ্রহ করুন। তাকে নিরাপদে রাখুন এবং তার গোনাহ মাফ করুন। আপনি তাকে সম্মানজনক আতিথেয়তা প্রদান করুন। তার বাসস্থান প্রশস্ত করুন। আপনি তাকে পানি দ্বারা, বরফ দ্বারা ও শিশির দ্বারা ধৌত করুন এবং তাকে পাপ হ’তে এমনভাবে মুক্ত করুন, যেমনভাবে সাদা কাপড় ময়লা হ’তে ছাফ করা হয়। আপনি তাকে দুনিয়ার গৃহের বদলে উত্তম গৃহ দান করুন। তার দুনিয়ার পরিবারের চাইতে উত্তম পরিবার এবং দুনিয়ার জোড়ার চাইতে উত্তম জোড়া দান করুন। তাকে আপনি জান্নাতে দাখিল করুন এবং তাকে কবরের আযাব হ’তে ও জাহান্নামের আযাব হ’তে রক্ষা করুন’।[35]
3- اَللَّهُمَّ إِنَّ فُلاَنَ بْنَ فُلاَنٍ فِيْ ذِمَّتِكَ وَحَبْلِ جِوَارِكَ، فَقِهِ مِنْ فِتْنَةِ الْقَبْرِ وَعَذَابِ النَّارِ، وَأَنْتَ أَهْلُ الْوَفَاءِ وَالْحَقِّ، اَللَّهُمَّ اغْفِرْلَهُ وَارْحَمْهُ، إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُوْرالرَّحِيْمُ-
(৩) উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্না ফুলা-নাবনা ফুলা-নিন ফী যিম্মাতিকা ওয়া হাবলি জিওয়া-রিকা; ফাক্বিহী মিন ফিৎনাতিল ক্বাবরি ওয়া ‘আযা-বিন্না-রি; ওয়া আন্তা আহলুল ওয়াফা-ই ওয়াল হাক্বক্বি। আল্লা-হুম্মাগফিরলাহূ ওয়ারহামহু, ইন্নাকা আন্তাল গাফূরুর রহীম ।
অনুবাদ : হে আল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার যিম্মায় ও আপনার তত্ত্বাবধানে আবদ্ধ। অতএব আপনি তাকে কবরের পরীক্ষা ও জাহান্নামের আযাব হ’তে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা ও সত্যের মালিক। হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন ও তাকে অনুগ্রহ করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।[36]
4- اَللَّهُمَّ عَبْدُكَ وَابْنُ أَمَتِكَ احْتَاجَ إِلَى رَحْمَتِكَ، وَأَنْتَ غَنِيٌّ عَنْ عَذَابِهِ، إِنْ كَانَ مُحْسِنًا فَزِدْ فِي حَسَنَاتِهِ، وَإِنْ كَانَ مُسِيْئًا فَتَجَاوَزْ عَنْهُ-
(৪) উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ‘আব্দুকা ওয়া ইবনু আমাতিকা, ইহতা-জা ইলা রহমাতিকা ওয়া আনতা গানিইয়ুন ‘আন ‘আযা-বিহী। ইন কা-না মুহসিনান ফাযিদ ফী হাসানা-তিহী; ওয়া ইন কা-না মুসীআন, ফাতাজা-ওয়ায ‘আনহু।
অনুবাদ : হে আল্লাহ! মাইয়েত আপনার বান্দা এবং সে আপনার এক বান্দীর সন্তান। সে আপনার রহমতের ভিখারী। আপনি তাকে শাস্তি দিতে বাধ্য নন। অতএব যদি সে সৎকর্মশীল হয়, তাহ’লে তার নেকী বাড়িয়ে দিন। আর যদি অন্যায়কারী হয়, তাহ’লে তাকে আপনি ক্ষমা করে দিন’।[37]
(৫) মাইয়েত শিশু হ’লে সূরা ফাতিহা, দরূদ ও জানাযার ১ম দো‘আটি পাঠের পর নিম্নোক্ত দো‘আ পড়বে-
5- اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا سَلَفًا وَّ فَرَطًا وَّ ذُخْرًا وَّ أَجْرًا ، رواه البخاريُّ تعليقًا-
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাজ‘আলহু লানা সালাফাওঁ ওয়া ফারাত্বাওঁ ওয়া যুখ্রাওঁ ওয়া আজরান’। ‘লানা’-এর সাথে ‘ওয়া লে আবাওয়াইহে’ (এবং তার পিতা-মাতার জন্য) যোগ করে বলা যেতে পারে।[38]
অনুবাদ : ‘হে আল্লাহ! আপনি এই শিশুকে আমাদের জন্য (এবং তার পিতা-মাতার জন্য) পূর্বগামী, অগ্রগামী এবং আখেরাতের পুঁজি ও পুরস্কার হিসাবে গণ্য করুন’! [39]

Post a Comment

0 Comments