ফতোয়া: কুরবানী | কুরবানীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসআলা মাসায়েল।

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না ইনশাল্লাহ।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ফতোয়া: কুরবানী | কুরবানীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসআলা মাসায়েল।
ফতোয়া: কুরবানী | কুরবানীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসআলা মাসায়েল।

ফতোয়া নং: ৫১১০
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত বছর আমাদের কুরবানী পশুটির ট্রাক থেকে নামানোর সময় এক...

প্রশ্ন
গত বছর আমাদের কুরবানী পশুটির ট্রাক থেকে নামানোর সময় এক পায়ে আঘাত পেয়ে ফুলে যায়। যার ফলে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে একটু কষ্ট হত। এবং হাঁটাচলার সময় ঐ পাটি তুলনামূলক কম ব্যবহার করত। আমার প্রশ্ন হল, উক্ত পশু দ্বারা আমাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হয়েছে। তবে পশুর কোনো পা যদি একেবারে অচল হয়ে যায়, যার ফলে পশু হাঁটতেই পারে না সেক্ষেত্রে তা দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে না।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮০২; জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৪৯৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৬ আরো জানতে দেখুন : তাফসীরে তবারী ৭/৫৫৪; তাফসীরে কুরতুবী ১০/৪২-৪৩; তাফসীরে ফখরে রাযী ১৯/২২১; তাফসীরে রূহুল মাআনী ১৪/৮৭; তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন ৫/৩১৩
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৮৬
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি...

প্রশ্ন
আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি গরুর পায়ের নিচে পা পড়ে আমার পায়ের অগ্রভাগ মারাত্মক জখম হয়। ডাক্তার ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছেন। তিনি ব্যান্ডেজ খোলা ও সেখানে পানি লাগাতে নিষেধ করেছেন। এ অবস্থায় আমি কীভাবে অযু করব?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অযু-গোসলের জন্য ব্যান্ডেজের উপর মাসেহ করবেন এবং পায়ের অবশিষ্ট সুস্থ অংশটুকু সম্ভব হলে অন্যান্য অঙ্গের ন্যায় ধুয়ে নিবেন। আর যদি তা ধুতে গেলে ব্যান্ডেজ ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে পায়ের এ অংশও মাসেহ করতে পারবেন।
-সুনানে বায়হাকী ১/২২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯০; শরহুল মুনইয়া ১১৬-১১৭; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮৭
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০২০
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় কুরবানীর পশু সাধারণত ইমাম সাহেব বা অন্য কোনো...

প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় কুরবানীর পশু সাধারণত ইমাম সাহেব বা অন্য কোনো হুজুরকে দিয়ে জবাই করানো হয়। ইমাম সাহেব একটু কাটার পরই বাকিটুকু কসাই জবাই করে। এখানে আমার প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে উভয়কেই বিসমিল্লাহ বলতে হবে নাকি শুধু ইমাম সাহেব বললেই চলবে?
উত্তর
জবাইকারী একাধিক হলে প্রত্যেককে পৃথক পৃথক বিসমিল্লাহ বলতে হবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব জবাই সম্পন্ন না করে কসাই বা অন্য কাউকে দিয়ে দিলে দ্বিতীয় ব্যক্তিকেও বিসমিল্লাহ বলতে হবে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয়জন ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ না বললে জবাই সহীহ হবে না এবং এ পশুর গোশত খাওয়া যাবে না। কুরবানীর ও সহীহ হবে না। অবশ্য প্রথম ব্যক্তিই যদি জবাইয়ের মৌলিক পর্ব শেষ করে ফেলে (অর্থাৎ খাদ্যনালী, শ্বাসনালী এবং শাহরগের কোনো একটি কেটে ফেলে) তাহলে এরপর অন্য কেউ ছুরি চালালে তার বিসমিল্লাহ বলা জরুরি নয়, তবে বলে নেওয়া ভালো।
-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৫৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০১৯
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার একটা ছাগল আছে। সামনের ঈদে ১০/১১ মাস পূর্ণ হবে।...

প্রশ্ন
আমার একটা ছাগল আছে। সামনের ঈদে ১০/১১ মাস পূর্ণ হবে। আমার প্রশ্ন হল মোটাতাজা হওয়ার কারণে দেখতে ১ বছর ছাগলের মতো লাগলে। সামনের ঈদে কুরবানী দিতে পারব কি?
উত্তর
ছাগল কুরবানীর যোগ্য হওয়ার জন্য পূর্ণ এক বছর বয়স হওয়া জরুরি। এক বছরের কম বয়সের ছাগল মোটাতাজা হওয়ার কারণে দেখতে এক বছর বয়সী মনে হলেও তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না। অতএব প্রশ্নোক্ত ছাগল দ্বারা আগামী ঈদে কুরবানী সহীহ হবে না।
-সহীহ মুসলিম ২/১৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৬
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৮৬
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনাব,আমি কুরবানির সময় আমার মরহুম বাবার নামেও কুরবানি দিয়ে থাকি।...

প্রশ্ন
জনাব,আমি কুরবানির সময় আমার মরহুম বাবার নামেও কুরবানি দিয়ে থাকি। প্রশ্ন হচ্ছে, এ কুরবানির গোশত কি সদকা করে দিতে হবে?
উত্তর
না, সদকা করা জরুরি নয়। মৃত ব্যক্তির ছওয়াবের উদ্দেশ্যে যে নফল কুরবানি করা হয় তার গোশত সাধারণ কুরবানির মতোই। নিজেরাও খেতে পারবেন এবং অন্যকেও দিতে পারবেন।
-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫২; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৮৫
তারিখ: ২৭/১০/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনাব, আমি কুরবানির সময় সফরে ছিলাম। সে সময় আমার নির্দেশেই...

প্রশ্ন
জনাব, আমি কুরবানির সময় সফরে ছিলাম। সে সময় আমার নির্দেশেই বাড়িতে কুরবানি করা হয়। ঈদের দ্বিতীয় দিনে আমি সফর থেকে ফিরে আসি। স্থানীয় এক আলেমের কাছে শুনলাম, সফর অবস্থায় কুরবানি ওয়াজিব নয়, কিন্তু কুরবানির সময়ের ভিতরে মুকীম হলে (আর্থিক সঙ্গতি থাকলে) কুরবানি ওয়াজিব হয়। জানতে চাই, সফরে থাকা অবস্থায় যে কুরবানী দেওয়া হয়েছে তা ধারা আমার ওয়াজিব কুরবানি আদায় হয়েছে কি না?
উত্তর
হাঁ, সফরে থাকা অবস্থায় যে কুরবানি করা হয়েছে তা দ্বারা আপনার ওয়াজিব কুরবানি আদায় হয়ে গেছে। তাই পুনরায় কুরবানি করা জরুরি নয়।
-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১২, ৩১৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৮১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯২
উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৭৩
তারিখ: ৯/৯/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

নবীজী সাঃ এর পক্ষ থেকে কুরবানী করা৷

প্রশ্ন
হযরত! আমাদের এলাকায় দেখা যায় অনেকেই আমাদের নবীজী সাঃ এর নামে কুরবানী করেন ৷ জানার বিষয় হল, এটা কতটুকু শরীয়তসম্মত?
উত্তর
সামর্থ্যবান ব্যক্তির রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নামে কুরবানী করা উত্তম। এটি বড় সৌভাগ্যের বিষয়ও। হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, নবী কারীম সাঃ হযরত আলী রা.কে তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানী করার ওসিয়্যত করেছিলেন। তাই তিনি প্রতি বছর নিজের কুরবানীর পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পক্ষ থেকেও কুরবানী দিতেন।
-সুনানে আবু দাউদ ২/২৯, ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৭২
তারিখ: ১/৯/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুতে আকীকার অংশ নেওয়া ৷

প্রশ্ন
হযরত আমার জানার বিষয় হল, কুরবানীর পশুতে আকীকার নাম দেয়া যাবে কিনা? যদি দেয়া যায় তাহলে উক্ত গোশতের হুকুম কি?
উত্তর
গরু, মহিষ ও উটের মধ্যে কুরবানী সাথে আকীকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কুরবানী ও আকীকা উভয়টিই সহীহ হবে। দুটির গোশতের হুকুমও একই ৷
-রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২; তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৭১
তারিখ: ১/৯/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গোশত কতদিন জমিয়ে রেখে খেতে পারবে?

প্রশ্ন
হুজুর! কুরবানীর গোশত কতদিন পর্যন্ত রেখে খাওয়া যাবে? কেউ বলে তিনদিন কেউ বলে সাতদিন৷ আবার অনেককেই দেখা যায় ফ্রীজে বহুদিন যাবৎ রেখে খায় ৷ এ বিষয়ে শরীয়তের সঠিক বিধান জানতে চাই৷
উত্তর
কুরবানীর গোশত যতদিন ইচ্ছা ততদিন জমিয়ে রেখে খাওয়া জায়েয ৷
তিনদিন সাতদিন এমন কোনো নির্দিষ্ট সময় নেয় যার পর আর খাওয়া যাবে না ৷ বরং সাত দিনেরও অধিক জমিয়ে রেখে খাওয়া জায়েয।
-সহীহ মুসলিম ২/১৫৯, ইলাউস সুনান ১৭/২৭০বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৭০
তারিখ: ১/৯/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানী করা ৷

প্রশ্ন
মুফতী সাহেব! মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানী দেয়ার হুকুম কি? এবং উক্ত গোশতের বিধান কি?
উত্তর
মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানী করা জায়েয। মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তাহলে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে। এমতাবস্থায় কুরবানীর অন্য গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয় স্বজনকেও দিতে পারবে। তবে যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তাহলে উক্ত গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব- মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।
-মুসনাদে আহমদ ১/১০৭, হাদীস ৮৪৫, ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮, কাযীখান ৩/৩৫২; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৯
তারিখ: ১/৯/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর দুধ দোহন করা বা তা দ্বারা হালচাষ করা৷

প্রশ্ন
কুরবানীর পশুর দুধ দোহন করা বা তা দ্বারা হালচাষ করার বিধান কি? যদি এমন করে ফেলে তাহলে করনীয় কি? জানালে উপকৃত হব
উত্তর
কুরবানীর পশু কেনার পর বা নির্দিষ্ট করার পর তা থেকে কোনো ধরনের উপকৃত হওয়া জায়েয নয়। যেমন হালচাষ করা, দুধ দোহন করা আরোহণ করা, পশম কাটা ইত্যাদি। সুতরাং কুরবানীর পশু দ্বারা এসব করা যাবে না। যদি করে তাহলে দুধের বা তার মুল্য, হালচাষের মূল্য ইত্যাদি সদকা করে দিতে হবে।
-ইলাউস সুনান ১৭/২৭৭, কাযীখান ৩/৩৫৪, আলমগীরী ৫/৩০০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৮
তারিখ: ১/৯/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কোনো অংশীদারের শুধু গোশত খাওয়ার নিয়ত হলে, অথবা কারো উপার্জন হারাম হলে কুরবানীর হুকুম৷

প্রশ্ন
হুজুর! কুরবানীর পশুতে কোনো অংশীদারের নিয়ত যদি হয় গোশত খাওয়া অথবা শরীকদের কারো উপার্জন হারাম হলে, তার ও অন্য শরীকের কুরবানীর হুকুম কি?
উত্তর
যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না৷ এমন ব্যক্তিকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তেমনিভাবে শরীকদের কারো পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয় তাহলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে।
-কাযীখান ৩/৩৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৭
তারিখ: ৩১/৮/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কেমন পশু দ্বারা কুরবানী করা উত্তম?

প্রশ্ন
হযরত! আমার একটি প্রশ্ন, আজকাল মানুষ কুরবানীর পশু ক্রয় করতে গিয়ে কেউ সুন্দর দেখে কেউ বড় খুজে ৷ জানার বিষয় শরীয়তে কেমন পশু দ্বারা কুরবানী করা উত্তম?
উত্তর
উট গরু মহিষ, ভেড়া দুম্বা ছাগলের মধ্যে যেকোনো পশু দিয়েই কুরবানী জায়েয ৷ তবে কুরবানীর পশু হৃষ্টপুষ্ট হওয়া দেখতে সুন্দর হওয়া যার প্রতি মুহাব্বত সৃষ্টি হয় এমন হওয়া উত্তম।
-মুসনাদে আহমদ,৬/১৩৬, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩; আলমগীরী ৫/৩০০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৬
তারিখ: ৩১/৮/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

ক্রয়ের পর পানাহার ছেড়ে দেয়ার কারণে দুর্বল হয়ে যাওয়া পশুর কুরবানী৷

প্রশ্ন
হুজুর গত চার দিন আগে কুরবানীর জন্য গরু ক্রয় করেছি ৷ কিন্তু কিনে আনার পর বাড়িতে গরুটি কিছু খাচ্ছে না ৷ না খেয়ে খেয়ে শুকিয়ে গেছে এবং খুব দুর্বল হয়ে যাচ্ছে ৷ জানার বিষয় হল, উক্ত গরু দ্বারা কুরবানী করতে কোনো সমস্যা আছে কি না?
উত্তর
এমন শুকনো দুর্বল পশু, যা জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার গরুটি যদি কুরবানীর দিন এমন দুর্বল হয়ে যায় যে, হেঁটে জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত যেতে অক্ষম, তাহলে তা দ্বারা ওয়াজিব কুরবানী জায়েয হবে না ৷ এমন দুর্বল না হলে কুরবানী করতে কোনো সমস্যা নেই৷
-জামে তিরমিযী ১/২৭৫,বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪; আলমগীরী ৫/২৯৭৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৫
তারিখ: ৩১/৮/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর জন্য নির্দিষ্ট পশুতে পরে কাউকে শরীক করা৷

প্রশ্ন
আমার বাবা গত এক বছর যাবত একা কুরবানী দেয়ার জন্য একটি গরু পালন করেছিল, পরে সেই গরুতে দুই চাচাকে শরীক করতে চাচ্ছে৷ জানার বিষয় হলো, এভাবে শরীক করলে কুরবানী সহীহ হবে কি?
উত্তর
হ্যা, কুরবানী সহীহ হবে, তবে উত্তম ছিল কুরবানীর জন্য নির্ধারন করার আগে কিংবা ক্রয় করার আগে শরীক নির্ধারন করা।
-হেদায়া ৪/৩৪৫; ফতওয়া খানিয়া ৩/২৯০; ফতওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৪৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৪
তারিখ: ৩১/৮/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু কুরবানীর সময়ের পুর্বে বাচ্চা জন্ম দিলে করনীয় ৷

প্রশ্ন
আমার বাবা ও চাচা মিলে কুরবানী দেয় ৷ বাবার উপর কুরবানী ওয়াজিব ৷ কিন্তু চাচার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় ৷ তারা দুজন শরীক হয়ে একটি গাভী ক্রয় করেছে। গাভীটি একটি বাছুর জন্ম দেয়। জানার বিষয় হলো, বাছুর কি গাভীর সাথে কুরবানী দিবে, নাকি রেখে দিবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাছুরটি গাভীর সাথে কুরবানী দিয়ে দিবে। এবং তার গোশত সদকা করে দিবে৷
-আল মাবসুত লিসসারাখসী ১২/১৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া, ৪/৩২২; মওসুয়াতুল ফিকহিয়া, ৪/৯৭৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৩
তারিখ: ৩১/৮/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর দিন হাঁস-মুরগী যবাই করার বিধান৷

প্রশ্ন
হযরত একটি প্রশ্ন ! লোকমুখে শোনা যায় কুরবানীর দিন হাস মুরগী যবাই করা যাবে ৷ আবা কেউ কুরবানী করতে সামর্থ না থাকায় কুরবানীর দিন মুরগী বা হাঁস যবাই করে থাকে৷ জানার বিষয় হল, কুরবানীর দিন হাঁস- মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয আছে কি?
উত্তর
কুরবানীর দিন কুরবানীর নিয়ত করে কিংবা কুরবানীর সাদৃশ্য অবলম্বনের উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী যবাই
করা বৈধ হবে না। তবে কুরবানীর নিয়ত ব্যতিত কেবল খাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয। এতে দোষের কিছু নেই।
-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৩/২৯০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬২
তারিখ: ৩১/৮/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু যবাই করে বিনিময় গ্রহন করা ৷ মাদরাসার পক্ষ থেকে পাঠালে উক্ত টাকার হকদার ৷

প্রশ্ন
আমি মাদরাসার ছাত্র ৷ কুরবানীর সময় এলাকায় মাদরাসার জন্য চামড়া কিংবা চামড়ার টাকা কালেকশন করতে হয় ৷ ঈদের দিন মাদরাসার পক্ষ থেকে প্রত্যেকের হাতে ছরি দেয়া হয় মহল্লায় গরু যবাই করার জন্য ৷ গরু যবাইয়ের পর মানুষ চামড়া কিংবা চামড়ার টাকা দেয়া ছাড়াও গরু যবাইয়ের বিনিময় হিসেবে এক/দুইশ টাকা করে আমাদের কে দেয় ৷ জানতে চাই, কুরবানীর পশু যবাই করে বিনিময় নেওয়া
জায়েয হবে কিনা? এবং উক্ত টাকার হকদার আমরা নাকি মাদরাসা?
উত্তর
কুরবানীর পশু যবাই করে এর বিনিময় নেওয়া জায়েয আছে। এবং উক্ত টাকার হকদার যবাই কারী নিজেই৷ তবে মাদরাসা যেহেতু আপনাকে ছরি দিয়েছে গরু যবাই করে মাদরাসার জন্য চামড়া কিংবা চামড়ার টাকা মাদরাসার জন্য কালেকশন করে আনার উদ্দেশ্যে৷ তাই সেই উদ্দেশ্য যেন পরিপুর্ন লক্ষ রাখা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ৷
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৬৪; কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৪৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬১
তারিখ: ২৮/৭/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কখন কার উপর ওয়াজিব হয়?

প্রশ্ন
হুজুর! কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? এবং
কি পরিমান ও কি ধরনের সম্পদ থাকলে কুরবানী ওয়াজিব হয়? জমি কিংবা ঘরের আসবাবপত্র কি কুরবানী নেসাবের অন্তর্ভোক্ত হবে? এ বিষয়ে স্ববিস্তারে জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
যে সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন, প্রাপ্তবয়ষ্ক, মুকীম মুসলমান নর-নারী ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বাসস্থান ব্যবহার্য দ্রব্যাদি ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। কুরবানী নেসাব হল, সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি স্বর্ন অথবা সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি রূপা অথবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তাহলে উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য পন্যের মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে।
উল্লেখ্য যে, স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত সবধরনের আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫ ৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬০
তারিখ: ২৮/৭/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরুর বিশেষ দুটি দাঁত না উঠলে কি কুরবানী হবে না?

প্রশ্ন
অনেক লোককে দেখা যায় কুরবানীর পশু ক্রয়ের সময় পশুর দাঁত দেখে ৷ বিশেষ দুই দাঁত থাকলে গরু দামধর করে নয়ত করে না৷ আমার জানার বিষয় হল, গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুটি দাঁত উঠা কি জরুরি? যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে,গরুর দুই বছর পুর্ন হয়েছে, কিন্তু এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করলে সহীহ হবে কি না?
উত্তর
গরু, মহিষ কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। বিশেষ দাঁত উঠা জরুরি নয়।
তবে যেহেতু স্বাধারনত বিশেষ দুটি দাঁত দুই বছর পূর্ণ হলেই উঠে থাকে তাই দুই দাঁত উঠাকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আলামত মনে করা হয়। এ কারণেই মানুষ কুরবানীর পশু কিনতে গেলে তা পরীক্ষা করে। এতে দোষের কিছু নেই।
অবশ্য যদি কোনো গরুর ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, দুই বছর পূর্ণ হয়ে গেছে কিন্তু বিশেষ দুটি দাঁত এখনো উঠেনি তাহলে সেই গরু দ্বারা কুরবানী হয়ে যাবে।
-মুসলিম শরীফ ২/১৫৫; ফাতাওয়ায়ে খানিয়া ৩/৩৪৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬১১৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৫১
তারিখ: ১৪/৭/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কার উপর কি পরিমান মাল থাকলে হজ্ব ফরয হয়?

প্রশ্ন
হুজুর আমার কাছে প্রায় তিন লক্ষ টাকা আছে ৷ আমি যাকাত আদায় করি, কুরবানী দেই৷ এছাড়া আমার ঘর বাড়ি ও কিছু চাষী জমি ছাড়া আর কিছুই নেই ৷ চাকরির বেতন সাংসারিক কাজে ব্যয় হয়ে যায় ৷ জানার বিষয় হল, আমার উপর হজ্ব ফরয কি না? কার উপর কি পরিমান মাল থাকলে হজ্ব ফরয হয়? জানিয়ে বাধিত করবেন ৷
উত্তর
হজ্ব ফরয হয় এমন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ সবল ব্যক্তির উপর যার দৈনন্দিন নিত্য প্রয়জনীয় খরচ বাদে হজ্ব করতে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা আছে। যাকাতের মত হজ্বের নির্ধারিত পরিমান কোনো নেসাব নেই ৷
অতএব দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগে। সে পরিমান টাকা যদি আপনার নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত থাকে তাহলে আপনার উপর হজ্ব করা আবশ্যক হবে ৷ অন্যথায় আবশ্যক হবে না ৷
-সূরা আল ইমরান, আয়াত: নং ৯৭; সহীহ বুখারী, হাদীস নং; ৮; সহীহ মুসলিম হাদীস নং: ১৬; বাদায়েউস সানায়ে,২/২৯৭; রদ্দুল মুহতার, ৩/৪৬০; বাহরুর রায়েক ২/৫৪৪৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৪২
তারিখ: ২৭/৬/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

মু্ল্য দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করলে কি ফিতরা আদায় হবে না?

প্রশ্ন
হযরতজ্বী! আমাদের সমাজে কিছু সংখক লোক বলছে গম জব খিজুর ইত্যাদির মু্ল্য দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করলে নাকি আদায় হবে না ৷ অথচ আমরা সারা জীবন মুল্য দ্বারা ই আদায় করে আসছি ৷ এ বিষয়ে দলিল সহ জানালে উপকৃত হব৷
উত্তর
সদকাতুল ফিতর যেমনভাবে গম,জব, খিজুর, কিসমিস ইত্যাদি দ্বারা আদায় করা যায়, তেমনি তার মু্ল্য দ্বারাও আদায় করা যায় ৷ কারণ সদকাতুল ফিতরে নির্ধারিত বস্তু উদ্দেশ্য নয়৷ যেমন কুরবানীতে নির্দিষ্ট প্রানী উদ্দেশ্য৷ বরং খাদ্য উদ্দেশ্য ৷ কেননা আল্লাহ তায়ালা কফ্ফারা সম্পর্কে কুরআনে ইরশাদ করেন,
ﻣِﻦْﺃَﻭْﺳَﻂِ ﻣَﺎ ﺗُﻄْﻌِﻤُﻮﻥَ ﺃَﻫْﻠِﻴﻜُﻢ
অনুবাদ: যা তোমরা তোমাদের পরিজনদেরকে খেতে দাও৷
সূরা মায়েদা, আয়াত:৮৯৷
আর খাদ্য যেমনভাবে উল্যেখিত বস্তুও হতে পারে অন্য বস্তুও হতে পারে৷
অন্যত্রে ইরশাদ করেছেন,
ﺧُﺬْ ﻣِﻦْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟِﻬِﻢْ ﺻَﺪَﻗَﺔً ﺗُﻄَﻬِّﺮُﻫُﻢْ ﻭَﺗُﺰَﻛِّﻴﻬِﻢْ ﺑِﻬَﺎ
অনুবাদ: তুমি তাদের ধন-সম্পদ হতে সাদাকাহ গ্রহণ কর, যার দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশোধিত করে দেবে।
সূরা তওবা, আয়াত:১০৩৷
মাল বা ধন-সম্পদ দ্বারা শুধু গম, খিজুর ই নির্দিষ্ট নয়৷ বরং স্বর্ন-রুপা, টাকা পয়সা মাল, ধন-সম্পদ৷
হাদীস শরীফে নবী করীম সাঃ ইরশাদ করেছেন, ﺃﻏﻨﻮﻫﻢ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﻓﻲ ﻣﺜﻞ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻴﻮﻡ
এই দিনে (ঈদুল ফিতর) তাদেরকে অন্যের নিকট হাত পাতা থেকে অমুখাপেক্ষি করে দাও৷
সুনানে দারাকুতনি, ২/১৫২; নসবুর রায়া, ২/৪৩১৷
আর মানুষ তখনি অমুখাপেক্ষি হবে যখন তাকে এমন জিনিষ দেয়া হবে যা দিয়ে তার সরল প্রকার প্রয়োজন পুরন করতে পারবে ৷ যেমন টাকা-পয়সা ৷ টাকা-পয়সা দিয়ে মানুষ তার সবধরনের প্রয়োজন পুরন করতে পারে৷ খাদ্যের প্রয়জোন হলে খাদ্য কিনে খেতে পারবে৷ পোশাকের প্রয়োজন হলে, পোশাক কিনতে পারবে৷ বাসস্থানের প্রয়োজন হলে তারও ব্যবস্থা করতে পারবে৷
আতা রহঃ উমর রাঃ থেকে বর্ণনা করেন,
ﻋَﻦْ ﻋَﻄَﺎﺀٍ ؛ ﺃَﻥَّ ﻋُﻤَﺮَ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺄْﺧُﺬُ ﺍﻟْﻌُﺮُﻭﺽَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪَﻗَﺔِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻮَﺭِﻕِ ﻭَﻏَﻴْﺮِﻫَﺎ
অনুবাদ: উমর রাঃ সদকার ক্ষেত্রে টাকা ইত্যাদি গ্রহণ করতেন।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদীস:১০৫৩৯৷
প্রসিদ্ধ তাবেয়ী হাসান বসরী রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন:
ﻋﻦ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻗﺎﻝ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺃﻥ ﺗﻌﻄﻰ ﺍﻟﺪﺭﺍﻫﻢ ﻓﻲ ﺻﺪﻗﺔ ﺍﻟﻔﻄﺮ
অনুবাদ: সদকায়ে ফিতর দিরহাম দ্বারা প্রদান করতে কোন সমস্যা নেই।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, ১০৪৭১৷
যোবায়ের রঃ থেকে বর্নিত তিনি বলেন, আমি আবু ইসহাককে বলতে শুনেছি,
ﺃﺩﺭﻛﺘﻬﻢ ﻭﻫﻢ ﻳﻌﻄﻮﻥ ﻓﻲ ﺻﺪﻗﺔ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺍﻟﺪﺭﺍﻫﻢ ﺑﻘﻴﻤﺔ ﺍﻟﻄﻌﺎﻡ
অনুবাদ: আমি সাহাবায়ে কেরামকে পেয়েছি, তারা রমযানের সদকাতে খাদ্যের মূল্য পরিমাণ দিরহাম আদায় করেছেন।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদীস: ১০৪৭২৷
অতএব গম, জব খিজুর ইত্যাদি দিয়েই সদকা আদায় করা জরুরী নয়৷ তার মুল্য দিয়েও আদায় করা যাবে ৷
অবশ্য হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাঃ যেসব বস্তু নির্ধারন করেছেন তা শুধু তাদের সহজতার জন্য ছিল৷ নির্দিষ্ট করার লক্ষে নয় ৷ তবে যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাঃ গম খেজুর ইত্যাদির পরিমান নির্ধারন করেছেন ৷ মু্ল্যের কোনো পরিমান নির্ধারন করা হয় নি৷ তাই মু্ল্যের পরিমান নির্ধারন করার ক্ষেত্রে সেসব বস্তু দ্বারা নির্ধারন করতে হবে, যেসব বস্তু দ্বারা নবীজী সাঃ নির্ধারন করেছেন৷ যেমন গম, আটা জব খেজুর ইত্যাদি৷
-বাদায়েউস সানায়ে,২/২০৫; আল বাহরুর রায়েক, ২/৪৪৩; রদ্দুল মুহতার, ২/২৮৬; ফতহুল কদীর, ২/২১৯৷ ফতওয়া মাহমুদীয়া, ১৫/১৭১; ফতওয়া রহীমীয়া, ৬/৩০৬৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৩৯
তারিখ: ২৭/৬/২০১৭
বিষয়: কুরবানী

বিক্রির উদ্দেশ্যে পালিত গরুর যাকাতের বিধান ৷

প্রশ্ন
হুজুর! গত বছর কুরবানীর আগে আমি তিনটি গরু কিনেছিলাম বিক্রি করার জন্য ৷ গত বছর দুইটি বিক্রি করেছি ৷ একটি বিক্রি করতে পারি নাই৷ ঈদের পরও আর বিক্রি করি নাই৷ আগামি কুরবানীর ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে পালতে থাকি ৷ গরুর মু্ল্য বর্তমানে এক লক্ষাধিক হবে ৷ জানার বিষয় হল, আমার উক্ত গরুর যাকাত দিতে হবে কি না?
উত্তর
সাধারনত গৃহপালিত পশুর যাকাত আসে না ৷ কিন্তু তা যদি ক্রয় করা হয় ব্যবসার উদ্দেশ্যে ৷ তাহলে তা অন্যান্য ব্যবসায়িক পন্যের মত হয়ে তার যাকাত দেয়া আবশ্যক হয়ে যায় ৷ সুতরাং প্রশ্নে বর্নিত সুরতে আপনার গরুর যাকাত দিতে হবে ৷ গরুর বর্তমান মুল্য হিসাব করে উক্ত মু্ল্যের শতকরা আড়াই পার্সেন্ট যাকাত আদায় করতে হবে ৷
-বাদায়েউস সানায়ে ২/১২৬ ; ফাতহুল কাদীর, ২/১৮০; আল বাহরুর রায়েক, ২/৩৭২; আদ দররুল মুখতার, ৩/১৯৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৭
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কান বা লেজ কাটা পশু দিয়ে কুরবানি৷

প্রশ্ন
কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা কাটা থাকলে এর দ্বারা কুরবানী সহীহ হয় না?
উত্তর
কুরবানীর পশুর কান বা লেজ অর্ধেক বা এরচেয়ে বেশি না থাকলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ নয়। যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি অংশ থাকে তাহলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ
হবে।
-শরহু মাআনিল আছার ২/২৭১; কিতাবুল আসল ২/৪৯৪; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; ইলাউস সুনান ১৭/২৪০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৬
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

অন্ধ বা এক চোখ নষ্ট পশু দ্বারা কোরবানি৷

প্রশ্ন
বরাবর, মাননী মুফতী সাহেব৷ আমাদের ঘরে পালিত একটি গরু আছে৷ আমরা চেয়ছিলাম এ বছর গরুটি কুরবানি দিতে৷ কিন্তু গরুটির একটি চোখ নষ্ট৷ তাই মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চাই, এই গরুটি দিয়ে কুরবানি শুদ্ধ হবে কিনা?
উত্তর
যে পশুর দুটি চোখই অন্ধ বা এক চোখ পুরো নষ্ট সে পশু কুরবানী করা
জায়েয নয়। অতএব প্রশ্নে বর্নিত গরুটি দিয়ে
আপনার কুরবানি শুদ্ধ হবে না৷ -জামে তিরমিযী ১/২৭৫, কাযীখান ৩/৩৫২, আলমগীরী ২৯৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৫
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

ভাঙ্গা শিং বিশিষ্ট পশু দিয়ে কুরবানি৷

প্রশ্ন
আমি এ বছর কুরবানির জন্য যে গরুটি কিনেছি তার শিং বড়৷ হাট থেকে কিনে আনার সময় এক গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে একটি শিংয়ের অর্ধেক ভেঙ্গে গেছে৷ মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হলো, উক্ত গরু দিয়ে কুরবানি শুদ্ধ হবে কিনা?
উত্তর
যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙ্গে গেছে, যে কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে পশুর কুরবানী জায়েয নয়। পক্ষান্তরে যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙ্গে গেছে বা শিং একেবারে উঠেইনি সে পশু কুরবানী করা জায়েয।
অতএব প্রশ্নে বর্নিত গরু দিয়ে কুরবানি জায়েয হবে৷
জামে তিরমিযী ১/২৭৬, সুনানে আবু দাউদ ৩৮৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৪, আলমগীরী ৫/২৯৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৪
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

শরিকে কুরবানীতে এক অংশ নিয়ে টাকা কম দেয়া ও নেয়া৷

প্রশ্ন
আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। বড় ভাই এক ভাগ আর আমরা দুই ভাই তিন অংশ করে মোট ছয় ভাগ নিয়েছি। আমরা দুই ভাই সমান সমান টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু বড়ভাই আমাদের মধ্যে তুলনামূলক অসচ্ছল হওয়ায় তিনি তার অংশের পুরো টাকা দেন না। আমরা দুই ভাই বলেছি, আপনি যা পারেন দেন, বাকিটা আমরা দুজনে দিয়ে দিব। অবশ্য গোশত সকলের অংশ হারেই বণ্টন করা হয়। টাকা কম- বেশির কারণে তাতে ব্যবধান করা হয় না; বরং ধরে নেওয়া হয় যে, আমরা ছোট দুই ভাই বড় ভাইয়ের টাকার আংশিক আদায় করে দিই। জানতে চাই, উল্লেখিত পদ্ধতিতে আমাদের কুরবানী কি সহীহ হচ্ছে?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। গরু-মহিষে শরিকে কুরবানী দেওয়ার জন্য শর্ত হল, কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হওয়া। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বড় ভাই যদিও তার অংশের চেয়ে কম দিচ্ছেন কিন্তু অন্য দুই ভাই তার অংশের বাকিটা দিয়ে দিবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তাই বড় ভাইয়ের অংশ এক সপ্তমাংশের কম হয় না। -ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৩
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব৷

প্রশ্ন
কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক
মুসলমান নর-নারী মুকীম ব্যক্তি, যে ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। নেসাব হল : স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর
অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন
ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার
কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তবে স্বর্ণ-রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন- অতিরিক্ত অন্য বস্ত্তর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে। স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, নগদ অর্থ, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্র-এ সবই কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬,আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া
১৭/৪০৫৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬২
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পত্বি থাকলে কুরবানি ওয়াজিব হবে কিনা?

প্রশ্ন
খালিদ বিশ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে, যার দ্বারা তার সংসার চলে। গত কয়েকদিন পূর্বে তার আম্মা ইন্তেকাল করেন। পিতা আগেই মারা গেছেন। মায়ের মৃত্যুর পর তার মামারা তার আম্মার পৈত্রিক সম্পত্তি (৬ শতাংশ জমি, যার প্রতি শতাংশের মূল্য প্রায় এক লক্ষ টাকা) তার ও তার তিন বোনের নামে ১.৫ শতাংশ করে সমানভাবে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। এছাড়া খালিদের উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদ নেই। বর্তমানে তার কাছে ত্রিশ হাজার টাকা নগদ জমা আছে৷ জানার বিষয় হল, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় খালিদের উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে কি না?
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী খালিদ মীরাস সূত্রে ১.৫ শতাংশ জমির মালিক হয়েছে তা যেহেতু তার প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ এবং তার মূল্যও নেসাব পরিমাণের বেশি (অর্থাৎ প্রায় এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা) তাই তার উপর কুরবানী ওয়াজিব। ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৮৬; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯ প্রকাশ থাকে যে, মায়ের সম্পত্তি তার ছেলেমেয়ের মাঝে সমানহারে বণ্টন করা বৈধ হয়নি। কুরআন মজীদের হুকুম হল, মেয়ের তুলনায় ছেলে দ্বিগুণ মীরাসের
হকদার।
-সূরা নিসা ৪ : ১১৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬১
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরুর বিশেষ দাত না উঠলে কুবরানী৷

প্রশ্ন
কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে। যদি বিশেষ দুটি দাঁত উঠে তাহলে পছন্দ হলে কেনে, অন্যথায় ঐ গরু কেনে না। তারা মনে করে, বিশেষ দুই দাঁত না উঠলে সেই গরু দিয়ে কুরবানী করা যায় না। এখন আমার জানার বিষয় হল, গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুটি দাঁত উঠা কি জরুরি? আর যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায়, কোনো একটি গরুর দুই বছর হয়েছে, কিন্তু এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করলে সহীহ হবে কি না?
উত্তর
গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। বিশেষ দাঁত উঠা জরুরি নয়। তবে যেহেতু বিশেষ দুটি দাঁত দুই বছর বয়স পূর্ণ হলেই উঠে থাকে তাই সাধারণত দুই দাঁত উঠাকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আলামত মনে করা হয়। এ কারণেই মানুষ কুরবানীর পশু কিনতে গেলে তা পরীক্ষা করে। এতে আপত্তির কিছু নেই। তবে যদি কোনো গরুর ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, দুই বছর পূর্ণ হলেও এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে সেই গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে। -সহীহ মুসলিম ২/১৫৫; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬১১-১৩৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬০
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর জন্য ক্রয়কৃত পশুর বাচ্চা হলে করনীয়৷

প্রশ্ন
আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী ক্রয় করেছি। কুরবানীর আগে সেই গাভীটির একটি বাচ্চা হয়েছে। জানার বিষয় হল, এ বাচ্চাটির ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম
কী?
উত্তর
উক্ত বাচ্চাটি সদকা করে দিতে হবে। অবশ্য জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি জবাই করে দেয় তবে তার গোশত সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব হবে। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৯
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানির নিয়তে পশু ক্রয় করে পরবর্তিতে শরীক করা৷

প্রশ্ন
প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ বছরও কুরবানীর এক সপ্তাহ আগে ৫জন মিলে একটি গরু ক্রয় করি। কুরবানীর আগের দিন আমাদের এক প্রতিবেশী তাতে শরিক হতে চাইলে আমরা তাকে শরিক করে নিই। জানার বিষয় হল, এভাবে শরিক করার কারণে আমাদের কুরবানী আদায়ে কোনো ত্রুটি হয়েছে কি না? জানালে উপকৃত হব। উল্লেখ্য, কুরবানী দাতা প্রত্যেক শরিকই সচ্ছল এবং নেসাব পরিমাণ মালের মালিক।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে। তবে পাঁচ জনে মিলে কুরবানী দেওয়ার নিয়তে পশু ক্রয়ের পর নতুন করে শরিক নেওয়া অনুত্তম হয়েছে। এক্ষেত্রে ঐ শরিক থেকে প্রাপ্য টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। অবশ্য সদকা না করলেও কোনো সমস্যা নেই। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১৭; মাবসূত, সারাখসী ১২/১৫৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৮
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুতে আকীকা৷

প্রশ্ন
আমি এ বছর একা একটি গরু কিনে আমার এক নাম আমার স্ত্রীর এক নাম ও এক ছেলের এক নাম কুরবানীর জন্য দিয়ে, এক ছেলের আকীকার দুই নাম দিতে চাই৷ জানার বিষয় হলো, কুরবানীর পশু অংশ দিয়ে আকীকা করা যাবে কিনা? এবং তার গোস্তের বিধান কি?
উত্তর
কুরবানীর গরু, মহিষ ও উটের অংশ দিয়ে আকীকা করা যাবে৷ এতে কুরবানী ও আকীকা দুটোই সহীহ হবে। এবং কুরবানী ও আকীকার গোস্তের একই বিধান৷ -তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৭
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

ছয়জন মিলে মৃত বাবার পক্ষ থেকে এক ভাগ দিয়ে কুরবানী৷

প্রশ্ন
প্রতি বছর আমরা ছয় ভাই একটি গরু কুরবানী করি। একটি গরুতে যেহেতু সাতজন শরিক হতে পারে তাই এবার আমরা পশুর ৭ম ভাগটি ইছালে ছওয়াবের উদ্দেশে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী দিতে চাচ্ছি। এভাবে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা সহীহ হবে কি এবং ঐ অংশের গোশত কি আমরা খেতে পারব?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ৬ জন মিলে ৭ম অংশ পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা সহীহ হবে এবং আপনারা ঐ অংশের গোশত খেতে পারবেন। তবে এটি উত্তম পদ্ধতি নয়। এক্ষেত্রে উত্তম হল, সবাই মিলে এক অংশের টাকা এক ভাইকে মালিক বানিয়ে দিবে। আর ঐ ভাই পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করবে। এতে কাজটি নিয়মসম্মত হবে এবং সকলে সওয়াবও পেয়ে যাবে। আর এ অবস্থায়ও মৃত পিতার পক্ষ থেকে দেওয়া অংশের গোশত কুরবানীদাতার হবে। সে তা নিজেও খেতে পারবে, সদকাও করবে পারবে এবং অন্য শরিককে হাদিয়াও দিতে পারবে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তারসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৬
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্বেও ক্রয় না করা বা পশু ক্রয় করে 12 যিলহজ্বের ভিতরে জবাই না করলে৷

প্রশ্ন
এক ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে তা কুরবানী করতে পারেনি। এখন তার কী করণীয়? আর কেউ যদি পশু ক্রয়ই না করে এবং কুরবানীর সময় শেষ হয়ে যায় তখন তার কী করণীয়?
উত্তর
কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে কুরবানী করতে না পারলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে। আর কোনো
ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও
যদি সে কুরবানীর পশু ক্রয় না করে এবং কুরবানীও না করে থাকে তাহলে এভাবে কুরবানীর সময় শেষ হয়ে গেলে তার উপর কুরবানীর যোগ্য একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব। আর উভয় ব্যক্তি যথাসময়ে কুরবানী না করার কারণে তাওবা- ইস্তিগফার করবে।
-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; তুহফাতুল ফুকাহা ৩/৮৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৫
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

শরীকে কুরবানীতে এক অংশ নিয়ে এক সপ্তমাংশের কম টাকা দেওয়া ও অন্য শরীক বাকি টাকা আদায় করে দেওয়া ৷

প্রশ্ন
আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। বড় ভাই এক ভাগ আর আমরা দুই ভাই তিন অংশ করে মোট ছয় ভাগ নিয়েছি।
আমরা দুই ভাই সমান সমান টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ
করি। কিন্তু বড়ভাই আমাদের মধ্যে তুলনামূলক
অসচ্ছল হওয়ায় তিনি তার অংশের পুরো টাকা দেন না। আমরা দুই ভাই বলেছি, আপনি যা পারেন দেন, বাকিটা আমরা দুজনে দিয়ে দিব। অবশ্য গোশত সকলের অংশ হারেই বণ্টন করা হয়। টাকা কম-বেশির কারণে তাতে ব্যবধান করা হয় না; বরং ধরে নেওয়া হয় যে, আমরা ছোট দুই ভাই বড় ভাইয়ের টাকার আংশিক আদায় করে দিই। জানতে চাই, উল্লেখিত পদ্ধতিতে আমাদের কুরবানী কি সহীহ হচ্ছে?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। গরু-মহিষে শরিকে কুরবানী দেওয়ার জন্য শর্ত হল, কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হওয়া। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বড় ভাই যদিও তার অংশের চেয়ে কম
দিচ্ছেন কিন্তু অন্য দুই ভাই তার অংশের বাকিটা
দিয়ে দিবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তাই বড় ভাইয়ের অংশ এক সপ্তমাংশের কম হয় না।
-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; আলমুহীতুল বুরহানী
৮/৪৭৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৪
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানী৷

প্রশ্ন
আমাদের পরিবারে আম্মু এবং আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর পর সম্পদ বণ্টন করা হয়নি। ছোট ভাইদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের সকল আয়-ব্যয় অভিন্ন। এমন অবস্থায় আমাদের সকলের পক্ষ থেকে কি একটি ছাগল কুরবানী যথেষ্ট হবে নাকি প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব?
উত্তর
একটি ছাগল দ্বারা এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা যায়। একাধিক ব্যক্তি বা পরিবারের সকল সদস্যের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানী দিলে তা যথেষ্ট হবে না। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যৌথ সম্পত্তি যদি এ পরিমাণ হয় যে, বণ্টন করলে প্রত্যেক সদস্য প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে যায় তাহলে প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। অবশ্য আপনাদের কেউ নেসাব থেকে কম সম্পদের মালিক হলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। তদ্রূপ কেউ অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার উপরও কুরবানী ওয়াজিব নয়। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৪২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৭৫৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৪৯
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু নর হওয়া উত্তম নাকি মাদি হওয়া উত্তম?

প্রশ্ন
কুরবানীর পশু নর হওয়া উত্তম নাকি মাদি হওয়া উত্তম?
উত্তর
‎ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ নর ও মাদী জানোয়ারের মাঝে যদি উভয়টির দাম একই হয়,তাহলে এক্ষেত্রে নর প্রাণীর চেয়ে মাদী জানোয়ার কুরবানী দেয়া উত্তম।
‎ﻭَﺍﻟْﺄُﻧْﺜَﻰ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺈِﺑِﻞِ ﻭَﺍﻟْﺒَﻘَﺮِ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺣَﺎﻭِﻱٌّ . ﻭَﻓِﻲ
‎ﺍﻟْﻮَﻫْﺒَﺎﻧِﻴَّﺔِ ﺃَﻥَّ ﺍﻟْﺄُﻧْﺜَﻰ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺬَّﻛَﺮِ ﺇﺫَﺍ ﺍﺳْﺘَﻮَﻳَﺎ
‎ﻗِﻴﻤَﺔً، ﻭَﺍَﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻋْﻠَﻢُ . ‏( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ
‎ﺍﻻﺿﺤﻴﺔ - 9/467 ، ﻗﺎﺿﻲ ﺧﺎﻥ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ - 3/349 ، ‎ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻻﺿﺤﻴﺔ، ﺍﻟﺒﺎﺏ ‎ﺍﻟﺨﺎﻣﺲ - 5/299 উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৪৮
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর দিন পশু জবাই করার আগ পর্যন্ত রোজা রাখা৷

প্রশ্ন
একজন মহিলাকে বলতে শুনেছি , কুরবানীর দিন পশু জবাই করার আগ পর্যন্ত রোযা রাখতে হয়। শরীয়তে এরূপ কিছু আছে কি না?
উত্তর
কুরবানী দিনের অংশ বিশেষে রোযা রাখতে হবে এ কথা ঠিক নয়। ঈদের দিনে রোযা রাখার বিধান নেই। তবে এক্ষেত্রে মাসআলা হল, কুরবানীর দিন কুরবানীর গোশত দিয়ে
খাবার শুরু করা মুস্তাহাব। তাই এর আগ পর্যন্ত
যথাসম্ভব খানাপিনা থেকে বিরত থাকা উত্তম।
হযরত বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন , ঈদুল
আযহার দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কুরবানীর গোশত খাওয়ার আগ পর্যন্ত অন্য কিছু খেতেন না।
মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ১১২৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩২৪; আলবাহরুর রায়েক
২/১৬৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন৷
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন

ফতোয়া নং: ৪৫৪৭
তারিখ: ১/৯/২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু ক্রয় করে জবাই করার আগেই মালিক মারা গেলে করনীয়৷

প্রশ্ন
আমার পিতা একজন মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। তার কুরবানী করার সামার্থ্য ছিলো। গত ঈদে তিনি কুরবানীর জন্য একটি গরুও কিনেছিলেন। কিন্তু সেটি কুরবানী করার সুযোগ তার আর হয়নি। ঈদের নামায পড়ে আসার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় ইন্তেকাল হয়। তার মৃত্যুতে পরিবারের সকলে শোকাহত ছিল। তাই কুরবানীর তিনদিনের ভেতর গরুটি আর কুরবানী করা হয়নি। এখন আমরা ঐ গরুটি কী করব? সেটি কি সদকা করে দিতে হবে? অথবা আগামী কুরবানীর ঈদে যবেহ করার জন্য রেখে দিতে হবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতা যেহেতু
কুরবানীর সময় (১২ যিলহজ্ব) শেষ হওয়ার আগেই ইন্তেকাল করেছেন, তাই এ বছরের কুরবানী তার উপর ওয়াজিব থাকেনি। সুতরাং তার ক্রয়কৃত ঐ পশুটিরও কুরবানী করা বা সদকা করা লাগবে না। বরং এই পশু এখন তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তি হিসাবে ধর্তব্য হবে। ওয়ারিশরা চাইলে সেটা বিক্রি করে দিয়ে এর মূল্য সকলের অংশ অনুযায়ী ভাগ করে নিতে পারেন। আবার
চাইলে যবেহ করে এর গোশতও বণ্টন করে নিতে পারেন আর যদি সকল ওয়ারিশ বালেগ হয় এবং তারা একমত হয় তাহলে তারা গরুটি বা এর মূল্য সদকাও করে দিতে পারবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; আদ দুররুল মুখতার
৬/৩১৯৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন


◈ ━━━━━━ ⸙ ━━━━━━ ◈
 

 প্রতিদিন কমপক্ষে নিম্নের আমলগুলো করুন।

>>নিম্নের লিংক ক্লিক করে ফজিলত সম্পর্কে জেনে নিন<<

১/ নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামায পড়ুন এবং অন্যকেও পড়তে উৎসাহিত করুন।

২/ প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করুন। না পারলে কয়েকটি সূরা হলেও পড়ুন। 

৩/ যত বেশি সম্ভব  أَسْتَغْفِرُالله ( আস্তাগফিরুল্লা-হ) পড়ুন। দিনে কমপক্ষে ১০০ বার পড়ুন।

৪/ লা ইলাহা ইল্লালল্লাহ - জিকিরটি বেশি বেশি করুন।

৫/ বেশি বেশি দুরুদ শরীফ (প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ বার) পাঠ করুন।

৬/ প্রতিদিন কিছু না কিছু দান-সদকাহ করার চেষ্টা করুন। সদকায়ে জারিয়া চালু করুন।

 

'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 

প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]


ইসলামিক বাংলা টিভি (Islamic Bangla Tv) - এর সঙ্গেই থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আল্লাহ্‌ সুবনাহু ওয়া তায়ালা আমাদের সবাইকে তার আদেশ নিষেধ মেনে চলার তৌফিক দান করুক। আমিন, ছুম্মা আমিন।
#ibtv
#ibtv99

Post a Comment

0 Comments