দুনিয়াবাসীর পক্ষ থেকে কবরবাসীর জন্য উপহার।

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না ইনশাল্লাহ।

বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহীম
দুনিয়াবাসীর পক্ষ থেকে কবরবাসীর জন্য উপহার।
দুনিয়াবাসীর পক্ষ থেকে কবরবাসীর জন্য উপহার।

পৃথিবীতে মানুষ যত দিন বেঁচে থাকে- ততদিন সে মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন পরিবৃত অবস্থায় থাকে। মা-বাবাদের জীবিত অবস্থায় আমরা তাদের সেবা-যত্ন করি।

পৃথিবীতে মানুষ যত দিন বেঁচে থাকে- ততদিন সে মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন পরিবৃত অবস্থায় থাকে। মা-বাবাদের জীবিত অবস্থায় আমরা তাদের সেবা-যত্ন করি। যতদিন মানুষ বেঁচে থাকে ততদিন ইবাদত-বন্দেগিতে সময় কাটায়। কিন্তু যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়, তখন তার সব ধরনের আমল করার শক্তি শেষ হয়ে যায়। মৃত ব্যক্তি মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ে দুনিয়ায় ছেড়ে যাওয়া আত্মীয়-স্বজন কিংবা ছেলে-মেয়েদের পক্ষ থেকে তার জন্য দোয়ার প্রতি।

জীবিত ব্যক্তিরা মৃত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে পারেন না বটে। কিন্তু তাদের জন্য উপহার পাঠাতে পারেন। এ উপহার মানুষের পক্ষ থেকে সবচেয়ে উত্তম উপহার। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত,  হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কবরস্থ মৃতের উদাহরণ ওই ব্যক্তির ন্যায়, যে নদীতে ডুবে যাচ্ছে এবং সাহায্যের জন্য চিৎকার করে। (কবরস্থ ব্যক্তি ) অপেক্ষা করে যে, মা-বাপ, ভাই অথবা অন্য কোনো আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকে রহমত ও মাগফিরাতের দোয়া পৌঁছবে। যখন কারো পক্ষ থেকে তার কাছে দোয়ার উপহার পৌঁছে তখন তাকে দুনিয়া থেকে বেশি ভালোবাসে। দুনিয়াবাসীদের দোয়ার কারণে মৃত ব্যক্তি আল্লাহর কাছ থেকে এত বেশি সওয়াব পায় যার উদাহরণ একমাত্র পাহাড় দ্বারা দেওয়া যায়। মৃতের জন্য জীবিতদের পক্ষ থেকে বিশেষ হাদিয়া হলো, তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা।’

চির নির্জন,  চির আন্ধকার যেখানে কিছুই দেখার নেই, শোনার নেই সেখানে অনন্ত যাত্রার পথে দোয়াই তাদের পাথেয়। কোরআনে কারিমে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ‘আপনি নিজের এবং সাধারণ  মুমিন পুরুষ ও মুমিন স্ত্রীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা (অর্থাৎ আল্লাহর দরবারে ক্ষমা ও মাগফিরাত কামনা) করুন।’

মা-বাবার মৃত্যুর পরে সন্তান-সন্ততির প্রতি বড় দাবি তাদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা। মৃত্যুর পরে তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার বিশেষ পন্থা তাদের জন্য দোয়া করা।

মা-বাবার জন্য সুসন্তান সদকায়ে জারিয়া। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যখন মারা যায়- তখন তিন রকমের আমল ব্যতীত তার সব আমল বন্ধ হয়ে হয়ে যায়। ক. সদকায়ে জারিয়া, খ. জনহিতকর শিক্ষা ও গ. এমন সুসন্তান- যে তার জন্য দোয়া করতে থাকে।’ –সহিহ মুসলিম

সুসন্তানদের প্রতি মৃত পিতা-মাতার হক তাদের জন্য দোয়া করা। হজরত আবু উসাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমরা হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) দরবারে উপস্থিত ছিলাম। এমতাবস্থায় বনু সালমা গোত্রের এক জন লোক তার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা মাতার ইন্তেকালের পর আমার ওপর  তাদের এমন কোনো হক বাকি থাকে কি যা আমার পক্ষে আদায় করা দরকার? হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) উত্তরে বললেন, হ্যাঁ, তাদের জন্য দোয়া করো, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করো এবং তাদের বৈধ অসিয়তগুলো পূরণ করো। জীবিত থাকাকালীন সময় যাদের সঙ্গে পিতামাতার বন্ধুত্ব ও আত্মীয়তা ছিল তাদের সঙ্গে উত্তম সম্পর্ক বজায় রেখো এবং পিতা মাতার বন্ধু-বান্ধবগণকে সম্মান ও আপ্যায়ন করো।’ -আবু দাউদ

সন্তানের দোয়ায় মা-বাবা জান্নাতে উঁচু মর্যাদা লাভ করে থাকেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে বেহেশতে কোনো বান্দার এক স্তর মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়, তখন ওই জান্নাতি বান্দা জিজ্ঞেস করে, হে প্রভু! আমার এ মর্যাদার উন্নতি কি কারণে এবং কিভাবে হলো? উত্তর দেওয়া হয় যে, তোমার জন্য তোমার অমুক সন্তানের দোয়াই মাগফিরাতের কারণ। -মুসনাদে আহমদ

সন্তানদের দোয়ায় যেমন মা-বাবার জান্নাতে মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, তেমনি নেক মা-বাবার অনুসরণ করে দুনিয়ায় আমল করলে সন্তানদেরকেও আল্লাহ মা-বাবার সঙ্গে জান্নাতের উঁচু স্তরে স্থান দিয়ে ধন্য করবেন। এ বিষয়ে ইরশাদ হচ্ছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের সন্তান সন্ততি ঈমানের কোনো না কোনো স্তরে তাদের পদাংক অনুসরণ করে চলছে, তাদের সে সব সন্তানদেরকেও আমি তাদের সঙ্গে মিলিত করে দেবো। এতে করে তাদের আমলে কোনো ঘাটতি আমি হতে দেবো না।’ –সূরা তুর : ২১

তাই মুসলিম সমাজের কাছে ইসলামের দাবি, কোনো বিশেষ দিনে ঘটা করে নয় বরং প্রতিদিন সন্তানদের উচিত মা-বাবার জন্য আল্লাহ কাছে মাগফিরাত কামনা করা। আর এটাই হলো কবরবাসী মা-বাবার জন্য সন্তানদের পক্ষ থেকে উত্তম উপহার। আল্লাহতায়ালা সবাইকে তওফিক দান করুন। আমিন।


◈ ━━━━━━ ⸙ ━━━━━━ ◈
 

 প্রতিদিন কমপক্ষে নিম্নের আমলগুলো করুন।

>>নিম্নের লিংক ক্লিক করে ফজিলত সম্পর্কে জেনে নিন<<

১/ নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামায পড়ুন এবং অন্যকেও পড়তে উৎসাহিত করুন।

২/ প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করুন। না পারলে কয়েকটি সূরা হলেও পড়ুন। 

৩/ যত বেশি সম্ভব  أَسْتَغْفِرُالله ( আস্তাগফিরুল্লা-হ) পড়ুন। দিনে কমপক্ষে ১০০ বার পড়ুন।

৪/ লা ইলাহা ইল্লালল্লাহ - জিকিরটি বেশি বেশি করুন।

৫/ বেশি বেশি দুরুদ শরীফ (প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ বার) পাঠ করুন।

৬/ প্রতিদিন কিছু না কিছু দান-সদকাহ করার চেষ্টা করুন। সদকায়ে জারিয়া চালু করুন।

 

'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক' 

প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]


ইসলামিক বাংলা টিভি (Islamic Bangla Tv) - এর সঙ্গেই থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আল্লাহ্‌ সুবনাহু ওয়া তায়ালা আমাদের সবাইকে তার আদেশ নিষেধ মেনে চলার তৌফিক দান করুক। আমিন, ছুম্মা আমিন।
#ibtv
#ibtv99

Post a Comment

0 Comments