মেয়ে বিয়ে করতে হবে কি দেখে, মেয়ের যে চারটি গুন দেখে বিবাহ করতে হবে, বিবাহের ক্ষেত্রে মেয়ের গুন।


আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু 'আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,' 'চারটি গুণ দেখে মহিলাকে বিবাহ করা হয়; তার ধন-সম্পদ, তার বংশ মর্যাদা, তার রূপ-সৌন্দর্য এবং তার দ্বীন-ধর্ম দেখে। তুমি দ্বীনদার পাত্রী লাভ করে সফলকাম হও। (অন্যথায় তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।) '' (বুখারী)

* এর অর্থঃ লোকেরা সাধারণতঃ মহিলার এই চার গুণ দেখে বিবাহ করে থাকে। তুমি দ্বীনদার পেতে আগ্রহী হও, তাকে বিবাহ কর এবং তার সঙ্গ ও সাহচর্য পেয়ে ধন্য হও। [1]
[1] সহীহুল বুখারী 5090, মুসলিম 1466, নাসায়ী 3২30, আবূ দাউদ ২047, ইবনু মাজাহ 1858, আহমাদ 9২37, দারেমী ২170 হাদিসের মানঃ সহিহ (রহঃ)
مسدد حدثنا يحيى عن عبيد الله قال حدثني سعيد بن أبي سعيد عن أبيه عن أبي هريرة عن النبيصلى الله عليه وسلم قال تنكح المرأة لأ ÷ ربع لمالها ولحسبها وجمالها ولدينها فاظفر بذات الدين تربت يداك।
প্রকাশ্য ও গোপনীয় আমল (কর্ম) কথা ও অবস্থায় আন্তরিকতা ও বিশুদ্ধ নিয়ত জরুরী
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
) ومآ أمروا إلا ليعبدوا ٱلله مخلصين له ٱلدين حنفآء ويقيموا ٱلصلوة ويؤتوا ٱلزكوة وذلك دين ٱلقيمة 5 ([البينة: 5] 
 অর্থাৎ "তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং নামায কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে। আর এটাই সঠিক ধর্ম। "<صلى الله عليه وسلم মি> (<صلى الله عليه وسلم মি> সূরা বাইয়িনাহ্ 5 নং আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
) لن ينال ٱلله لحومها ولا دمآؤها ولكن يناله ٱلتقوى منكم ([الحج: 37] 
অর্থাৎ "আল্লাহর কাছে কখনোও ওগুলির গোশত পৌঁছে না এবং রক্তও না; বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাক্বওয়া (সংযমশীলতা)। "<صلى الله عليه وسلم মি> (<صلى الله عليه وسلم মি> সূরা হাজ্জ্ব 37 নং আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
) قل إن تخفوا ما في صدوركم أو تبدوه يعلمه ٱلله ([ال عمران: 29] 
অর্থাৎ "বল, তোমাদের মনে যা আছে তা যদি তোমরা গোপন রাখ কিংবা প্রকাশ কর, আল্লাহ তা অবগত আছেন।" <صلى الله عليه وسلم মি> (<صلى الله عليه وسلم মি> সূরা আলে ইমরান ২9 নং আয়াত)

1/1। উমার রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহু বলেন, "আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে,' 'যাবতীয় কার্য নিয়ত বা সংকল্পের উপর নির্ভরশীল। আর মানুষের জন্য তাই প্রাপ্য হবে, যার সে নিয়ত করবে। অতএব যে ব্যক্তির হিজরত (সবদেশত্যাগ) আল্লাহর (সন্তোষ লাভের) উদ্দেশ্যে ও তাঁর রাসূলের জন্য হবে; তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্যই হবে। আর যে ব্যক্তির হিজরত পার্থিব সম্পদ অর্জন কিংবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যেই হবে, তার হিজরত যে সংকল্প নিয়ে করবে তারই জন্য হবে। "<صلى الله عليه وسلم মি> [1]
এই হাদীসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইমাম শাফেয়ী রাহিমাহুল্লাহ ও ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল রাহিমাহুল্লাহ এটিকে 'এক তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধেক দ্বীন' বলে অভিহিত করেছেন।
এটিকে ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ তাঁর গ্রন্থ সহীহ বুখারীতে সাত জায়গায় বর্ণনা করেছেন। প্রত্যেক স্থানে এই হাদীসটি উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হল কর্মের বিশুদ্ধতা ও কর্মের প্রতিদান নিয়তের সাথে সম্পৃক্ত --- সে কথা প্রমাণ করা।

[1] সহীহুল বুখারী হাদীস নং 1, 54, ২5২9, 3898, 5070, 6689, 6953, মুসলিম 1907, তিরমিযী 1647, নাসায়ী 75, 3437, 3794, আবূ দাউদ ২২01, ইবনু মাজাহ 4২২7, আহমাদ 169, 30২। হাদিসের মানঃ সহিহ (রহঃ)
জাবির ইবনু 'আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বিয়ে করলে রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামআমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেমন মেয়ে বিয়ে করেছ? আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা মেয়েকে বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, কুমারী মেয়ে এবং তাদের কৌতুক তুমি চাও না? (রাবী মুহাজির বলেন) আমি এ ঘটনা 'আমর ইবনু দ্বীনার (রাঃ) -কে জানালে তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু' আবদুল্লাহ্ (রাঃ) -কে বলতে শুনেছি, নাবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামআমাকে বলেছেন, তুমি কেন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না, যার সাথে তুমি খেলা-কৌতুক করতে এবং সে তোমার সাথে খেলা-কৌতুক করত? [443] (বুখারি- 5080 আধুনিক প্রকাশনীঃ 4707, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ 4709)
হাদিসের মানঃ সহিহ (রহঃ)
বুখারি 5090
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা হয়ঃ তার সম্পদ , তার বংশমর্যাদা, তার সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী। সুতরাং তুমি দ্বীনদারীকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে [1] [মুসলিম 17/15, হাঃ 1466, আহমাদ 95২6] (আধুনিক প্রকাশনী- 4717, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- 4719)
[1] যে সব কারণে একজন পুরুষ বিশেষ একটি মেয়েকে স্ত্রীরূপে বরণ করার জন্য উৎসাহিত ও আগ্রহান্বিত হতে পারে তা হচ্ছে চারটি। (1) সৌন্দর্য (২) সম্পদ (3) বংশ (4) দীনদারী। এ গুণ চতুষ্টয়ের মধ্যে সর্বশেষে উল্লেখ করা হয়েছে দীনদারী ও আদর্শবাদিতার গুণ। আর এ গুণটিই ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বাগ্রগণ্য ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আলোচ্য নির্দেশের সার কথা হল- দীনদারীর গুণসম্পন্না কনে পাওয়া গেলে তাকেই যেন স্ত্রীরূপে বরণ করা হয়, তাকে বাদ দিয়ে অপর কোন গুণসম্পন্না মহিলাকে বিয়ে করতে আগ্রহী হওয়া উচিত নয়- (সুবুলুস সালাম)। চারটি গুণের মধ্যে দ্বীনদার হওয়ার গুণটি কেবল যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তা-ই নয়, এ গুণ যার নেই তার মধ্যে অন্যান্য গুণ যতই থাক না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে সে অগ্রাধিকার যোগ্য কনে নয়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস অনুযায়ী তো দ্বীনদারীর গুণ বঞ্চিতা নারী বিয়ে করাই উচিত নয়। তিনি স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন- তোমরা স্ত্রীদের কেবল তাদের রূপ-সৌন্দর্য দেখেই বিয়ে করো না- কেননা এরূপ সৌন্দর্যই অনেক সময় তাদের ধ্বংসের কারণ হতে পারে। তাদের ধন-মালের লোভে পড়েও বিয়ে করবে না, কেননা এ ধনমাল তাদের বিদ্রোহী ও অনমনীয় বানাতে পারে। বরং তাদের দ্বীনদারীর গুণ দেখেই তবে বিয়ে করবে। বস্ত্তত একজন দীনদার কৃষ্ণাঙ্গ দাসীও কিন্তু অনেক ভাল- (ইবনে মাজাহ, বায্যার, বাইহাকী)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- বিয়ের জন্য কোন্ ধরনের মেয়ে উত্তম? জবাবে তিনি বলেছিলেন- যে স্ত্রীকে দেখলে সে তার স্বামীকে আনন্দ দেয়, তাকে যে কাজের আদেশ করা হয় তা সে যথাযথ পালন করে এবং তার নিজের স্বামীর ধন মালের ব্যাপারে স্বামীর পছন্দের বিপরীত কোন কাজই করে না- (মুসনাদে আহমাদ)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন- দুনিয়ার সব জিনিসই ভোগ সামগ্রী আর সবচেয়ে উত্তম সামগ্রী হচ্ছে নেক চরিত্রের স্ত্রী- (মুসনাদে আহমাদ)। উপরে উদ্ধৃত হাদীসগুলো থেকে সে কথাটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে তা এই যে, ইসলামের দৃষ্টিতে তাকওয়া, পরহেযগারী, দীনদারী ও উন্নত চরিত্রই হচ্ছে জীবন সঙ্গিনী পছন্দ করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। হাদিসের মানঃ সহিহ (রহঃ)

Post a Comment

0 Comments