সাহারীর আযান (الأذان في السحر) :
সাহারীর আযান দেওয়া সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায় তাহাজ্জুদ ও
সাহারীর আযান বেলাল (রাঃ) দিতেন এবং ফজরের আযান অন্ধ ছাহাবী আব্দুল্লাহ
ইবনে উম্মে মাকতূম (রাঃ) দিতেন। তাই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘বেলাল রাত্রি
থাকতে আযান দিলে তোমরা (সাহারীর জন্য) খানাপিনা কর, যতক্ষণ না ইবনে উম্মে
মাকতূম আযান দেয়। কেননা সে ফজর না হওয়া পর্যন্ত আযান দেয় না’।[27] তিনি আরও
বলেন, ‘বেলালের আযান যেন তোমাদেরকে সাহারী খাওয়া থেকে বিরত না করে। কেননা
সে রাত্রি থাকতে আযান দেয় এজন্য যে, যেন তোমাদের তাহাজ্জুদ গোযার মুছল্লীগণ
(সাহারীর জন্য) ফিরে আসে ও তোমাদের ঘুমন্ত ব্যক্তিগণ (তাহাজ্জুদ বা
সাহারীর জন্য) জেগে ওঠে’।[28] এটা কেবল রামাযান মাসের জন্য ছিল না। বরং
অন্য সময়ের জন্যও ছিল। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায় অধিক সংখ্যক
ছাহাবী নফল ছিয়াম রাখতেন।[29] আজও রামাযান মাসে সকল মসজিদে এবং অন্য মাসে
যদি কোন মসজিদের অধিকসংখ্যক প্রতিবেশী নফল ছিয়ামে যেমন আশূরার দু’টি ছিয়াম,
আরাফাহর একটি ছিয়াম, শাওয়ালের ছয়টি ছিয়াম ও তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হন, তাহ’লে
ঐ মসজিদে নিয়মিতভাবে উক্ত আযান দেওয়া যেতে পারে। যেমন মক্কা ও মদ্বীনায়
দুই হারামে সারা বছর দেওয়া হয়ে থাকে।
সুরূজী প্রমুখ কিছু সংখ্যক হানাফী বিদ্বান রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানার
উক্ত আযানকে সাহারীর জন্য লোকজনকে আহবান ও সরবে যিকর বলে দাবী করেছেন। ছহীহ
বুখারীর সর্বশেষ ভাষ্যকার হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেন, এই দাবী
‘মারদূদ’ বা প্রত্যাখাত। কেননা লোকেরা ঘুম জাগানোর নামে আজকাল যা করে, তা
সম্পূর্ণরূপে ‘বিদ‘আত’ যা ধর্মের নামে নতুন সৃষ্টি। উক্ত আযান-এর অর্থ
সকলেই ‘আযান’ বুঝেছেন। যদি ওটা আযান না হয়ে অন্য কিছু হ’ত, তাহ’লে লোকদের
ধোঁকায় পড়ার প্রশ্নই উঠতো না। আর রাসূল (ছাঃ)-কেও সাবধান করার দরকার পড়তো
না।[30]
[27] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৮০, ‘দেরীতে আযান’ অনুচ্ছেদ-৬; নায়ল
২/১২০। [28] . মুসলিম, মিশকাত হা/৬৮১; কুতুবে সিত্তাহর সকল গ্রন্থ তিরমিযী
ব্যতীত, নায়ল ২/১১৭-১৮। [29] . মির‘আত ২/৩৮২, হা/৬৮৫-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।
[30] . ফাৎহুল বারী শরহ ছহীহ বুখারী ‘ফজরের পূর্বে আযান’ অনুচ্ছেদ
২/১২৩-২৪।
সাহারির আযান, |
0 Comments