হা-মীম। [ সুরা মু’মিন ৪০:১ ]
تَنزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে, যিনি পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ। [ সুরা মু’মিন ৪০:২ ]
غَافِرِ الذَّنبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيدِ الْعِقَابِ ذِي الطَّوْلِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ إِلَيْهِ الْمَصِيرُ
পাপ ক্ষমাকারী, তওবা কবুলকারী, কঠোর শাস্তিদাতা ও
সামর্থ?বান। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।
তাঁরই দিকে হবে প্রত্যাবর্তন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩ ]
তাঁরই দিকে হবে প্রত্যাবর্তন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩ ]
مَا يُجَادِلُ فِي آيَاتِ اللَّهِ إِلَّا الَّذِينَ كَفَرُوا فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِي الْبِلَادِ
কাফেররাই কেবল আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে।
কাজেই নগরীসমূহে তাদের বিচরণ যেন আপনাকে বিভ্রান্তিতে না ফেলে। [ সুরা
মু’মিন ৪০:৪ ]
كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَالْأَحْزَابُ مِن
بَعْدِهِمْ وَهَمَّتْ كُلُّ أُمَّةٍ بِرَسُولِهِمْ لِيَأْخُذُوهُ
وَجَادَلُوا بِالْبَاطِلِ لِيُدْحِضُوا بِهِ الْحَقَّ فَأَخَذْتُهُمْ
فَكَيْفَ كَانَ عِقَابِ
তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায় মিথ্যারোপ করেছিল, আর
তাদের পরে অন্য অনেক দল ও প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ পয়গম্বরকে আক্রমণ
করার ইচ্ছা করেছিল এবং তারা মিথ্যা বিতর্কে প্রবৃত্ত হয়েছিল, যেন
সত্যধর্মকে ব্যর্থ করে দিতে পারে। অতঃপর আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম। কেমন
ছিল আমার শাস্তি। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫ ]
وَكَذَلِكَ حَقَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ عَلَى الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّهُمْ أَصْحَابُ النَّارِ
এভাবে কাফেরদের বেলায় আপনার পালনকর্তার এ বাক্য সত্য হল যে, তারা জাহান্নামী। [ সুরা মু’মিন ৪০:৬ ]
الَّذِينَ يَحْمِلُونَ الْعَرْشَ وَمَنْ حَوْلَهُ
يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيُؤْمِنُونَ بِهِ وَيَسْتَغْفِرُونَ
لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَّحْمَةً وَعِلْمًا
فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ
الْجَحِيمِ
যারা আরশ বহন করে এবং যারা তার চারপাশে আছে, তারা
তাদের পালনকর্তার সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করে, তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন
করে এবং মুমিনদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে, হে আমাদের পালনকর্তা,
আপনার রহমত ও জ্ঞান সবকিছুতে পরিব্যাপ্ত। অতএব, যারা তওবা করে এবং আপনার
পথে চলে, তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭ ]
رَبَّنَا وَأَدْخِلْهُمْ جَنَّاتِ عَدْنٍ الَّتِي
وَعَدتَّهُم وَمَن صَلَحَ مِنْ آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ
وَذُرِّيَّاتِهِمْ إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
হে আমাদের পালনকর্তা, আর তাদেরকে দাখিল করুন চিরকাল
বসবাসের জান্নাতে, যার ওয়াদা আপনি তাদেরকে দিয়েছেন এবং তাদের বাপ-দাদা,
পতি-পত্নী ও সন্তানদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে তাদেরকে। নিশ্চয় আপনি
পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [ সুরা মু’মিন ৪০:৮ ]
وَقِهِمُ السَّيِّئَاتِ وَمَن تَقِ السَّيِّئَاتِ يَوْمَئِذٍ فَقَدْ رَحِمْتَهُ وَذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
এবং আপনি তাদেরকে অমঙ্গল থেকে রক্ষা করুন। আপনি যাকে
সেদিন অমঙ্গল থেকে রক্ষা করবেন, তার প্রতি অনুগ্রহই করবেন। এটাই মহাসাফল্য।
[ সুরা মু’মিন ৪০:৯ ]
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يُنَادَوْنَ لَمَقْتُ
اللَّهِ أَكْبَرُ مِن مَّقْتِكُمْ أَنفُسَكُمْ إِذْ تُدْعَوْنَ إِلَى
الْإِيمَانِ فَتَكْفُرُونَ
যারা কাফের তাদেরকে উচ্চঃস্বরে বলা হবে, তোমাদের
নিজেদের প্রতি তোমাদের আজকের এ ক্ষোভ অপেক্ষা আল্লার ক্ষোভ অধিক ছিল, যখন
তোমাদেরকে ঈমান আনতে বলা হয়েছিল, অতঃপর তোমরা কুফরী করছিল। [ সুরা মু’মিন ৪০:১০ ]
قَالُوا رَبَّنَا أَمَتَّنَا اثْنَتَيْنِ
وَأَحْيَيْتَنَا اثْنَتَيْنِ فَاعْتَرَفْنَا بِذُنُوبِنَا فَهَلْ إِلَى
خُرُوجٍ مِّن سَبِيلٍ
তারা বলবে হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি আমাদেরকে দু'বার
মৃত্যু দিয়েছেন এবং দু' বার জীবন দিয়েছেন। এখন আমাদের অপরাধ স্বীকার
করছি। অতঃপর এখন ও নিস্কৃতির কোন উপায় আছে কি? [ সুরা মু’মিন ৪০:১১ ]
ذَلِكُم بِأَنَّهُ إِذَا دُعِيَ اللَّهُ وَحْدَهُ
كَفَرْتُمْ وَإِن يُشْرَكْ بِهِ تُؤْمِنُوا فَالْحُكْمُ لِلَّهِ الْعَلِيِّ
الْكَبِيرِ
তোমাদের এ বিপদ এ কারণে যে, যখন এক আল্লাহকে ডাকা হত,
তখন তোমরা কাফের হয়ে যেতে যখন তার সাথে শরীককে ডাকা হত তখন তোমরা বিশ্বাস
স্থাপন করতে। এখন আদেশ তাই, যা আল্লাহ করবেন, যিনি সর্বোচ্চ, মহান। [ সুরা মু’মিন ৪০:১২ ]
هُوَ الَّذِي يُرِيكُمْ آيَاتِهِ وَيُنَزِّلُ لَكُم مِّنَ السَّمَاء رِزْقًا وَمَا يَتَذَكَّرُ إِلَّا مَن يُنِيبُ
তিনিই তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান এবং তোমাদের
জন্যে আকাশ থেকে নাযিল করেন রুযী। চিন্তা-ভাবন া তারাই করে, যারা আল্লাহর
দিকে রুজু থাকে। [ সুরা মু’মিন ৪০:১৩ ]
فَادْعُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
অতএব, তোমরা আল্লাহকে খাঁটি বিশ্বাস সহকারে ডাক, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। [ সুরা মু’মিন ৪০:১৪ ]
رَفِيعُ الدَّرَجَاتِ ذُو الْعَرْشِ يُلْقِي الرُّوحَ مِنْ أَمْرِهِ عَلَى مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ لِيُنذِرَ يَوْمَ التَّلَاقِ
তিনিই সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী, আরশের মালিক, তাঁর
বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা তত্ত্বপূর্ণ বিষয়াদি নাযিল করেন, যাতে সে
সাক্ষাতের দিন সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করে। [ সুরা মু’মিন ৪০:১৫ ]
يَوْمَ هُم بَارِزُونَ لَا يَخْفَى عَلَى اللَّهِ مِنْهُمْ شَيْءٌ لِّمَنِ الْمُلْكُ الْيَوْمَ لِلَّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ
যেদিন তারা বের হয়ে পড়বে, আল্লাহর কাছে তাদের কিছুই
গোপন থাকবে না। আজ রাজত্ব কার? এক প্রবল পরাক্রান্ত আল্লাহর। [ সুরা মু’মিন
৪০:১৬ ]
الْيَوْمَ تُجْزَى كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ لَا ظُلْمَ الْيَوْمَ إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
আজ প্রত্যেকেই তার কৃতকর্মের প্রতিদান পাবে। আজ যুলুম নেই। নিশ্চয় আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। [ সুরা মু’মিন ৪০:১৭ ]
وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ الْآزِفَةِ إِذِ الْقُلُوبُ
لَدَى الْحَنَاجِرِ كَاظِمِينَ مَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ حَمِيمٍ وَلَا
شَفِيعٍ يُطَاعُ
আপনি তাদেরকে আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করুন, যখন
প্রাণ কন্ঠাগত হবে, দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। পাপিষ্ঠদের জন্যে কোন বন্ধু
নেই এবং সুপারিশকারীও নেই; যার সুপারিশ গ্রাহ্য হবে। [ সুরা মু’মিন ৪০:১৮ ]
يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ
চোখের চুরি এবং অন্তরের গোপন বিষয় তিনি জানেন। [ সুরা মু’মিন ৪০:১৯ ]
وَاللَّهُ يَقْضِي بِالْحَقِّ وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِهِ لَا يَقْضُونَ بِشَيْءٍ إِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
আল্লাহ ফয়সালা করেন সঠিকভাবে, আল্লাহর পরিবর্তে তারা
যাদেরকে ডাকে, তারা কিছুই ফয়সালা করে না। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন,
সবকিছু দেখেন। [ সুরা মু’মিন ৪০:২০ ]
أَوَ لَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ
كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ كَانُوا مِن قَبْلِهِمْ كَانُوا هُمْ أَشَدَّ
مِنْهُمْ قُوَّةً وَآثَارًا فِي الْأَرْضِ فَأَخَذَهُمُ اللَّهُ
بِذُنُوبِهِمْ وَمَا كَانَ لَهُم مِّنَ اللَّهِ مِن وَاقٍ
তারা কি দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করে না, যাতে দেখত তাদের
পূর্বসুরিদের কি পরিণাম হয়েছে? তাদের শক্তি ও কীর্তি পৃথিবীতে এদের
অপেক্ষা অধিকতর ছিল। অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে তাদের গোনাহের কারণে ধৃত
করেছিলেন এবং আল্লাহ থেকে তাদেরকে রক্ষাকারী কেউ হয়নি। [ সুরা মু’মিন ৪০:২১ ]
ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَانَت تَّأْتِيهِمْ رُسُلُهُم
بِالْبَيِّنَاتِ فَكَفَرُوا فَأَخَذَهُمُ اللَّهُ إِنَّهُ قَوِيٌّ شَدِيدُ
الْعِقَابِ
এর কারণ এই যে, তাদের কাছে তাদের রসূলগণ সুস্পষ্ট
নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করত, অতঃপর তারা কাফের হয়ে যায়, তখন আল্লাহ তাদের
ধৃত করেন। নিশ্চয় তিনি শক্তিধর, কঠোর শাস্তিদাতা। [ সুরা মু’মিন ৪০:২২ ]
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَى بِآيَاتِنَا وَسُلْطَانٍ مُّبِينٍ
আমি আমার নিদর্শনাবলী ও স্পষ্ট প্রমাণসহ মূসাকে প্রেরণ করেছি। [ সুরা মু’মিন ৪০:২৩ ]
إِلَى فِرْعَوْنَ وَهَامَانَ وَقَارُونَ فَقَالُوا سَاحِرٌ كَذَّابٌ
ফেরাউন, হামান ও কারুণের কাছে, অতঃপর তারা বলল, সে তো জাদুকর, মিথ্যাবাদী। [ সুরা মু’মিন ৪০:২৪ ]
فَلَمَّا جَاءهُم بِالْحَقِّ مِنْ عِندِنَا قَالُوا
اقْتُلُوا أَبْنَاء الَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ وَاسْتَحْيُوا نِسَاءهُمْ
وَمَا كَيْدُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ
অতঃপর মূসা যখন আমার কাছ থেকে সত্যসহ তাদের কাছে
পৌঁছাল; তখন তারা বলল, যারা তার সঙ্গী হয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তাদের
পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা কর, আর তাদের নারীদেরকে জীবিত রাখ। কাফেরদের
চক্রান্ত ব্যর্থই হয়েছে। [ সুরা মু’মিন ৪০:২৫ ]
وَقَالَ فِرْعَوْنُ ذَرُونِي أَقْتُلْ مُوسَى
وَلْيَدْعُ رَبَّهُ إِنِّي أَخَافُ أَن يُبَدِّلَ دِينَكُمْ أَوْ أَن
يُظْهِرَ فِي الْأَرْضِ الْفَسَادَ
ফেরাউন বলল; তোমরা আমাকে ছাড়, মূসাকে হত্যা করতে দাও,
ডাকুক সে তার পালনকর্তাকে! আমি আশংকা করি যে, সে তোমাদের ধর্ম পরিবর্তন
করে দেবে অথবা সে দেশময় বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। [ সুরা মু’মিন ৪০:২৬ ]
وَقَالَ مُوسَى إِنِّي عُذْتُ بِرَبِّي وَرَبِّكُم مِّن كُلِّ مُتَكَبِّرٍ لَّا يُؤْمِنُ بِيَوْمِ الْحِسَابِ
মূসা বলল, যারা হিসাব দিবসে বিশ্বাস করে না এমন
প্রত্যেক অহংকারী থেকে আমি আমার ও তোমাদের পালনকর্তার আশ্রয় নিয়ে
নিয়েছি। [ সুরা মু’মিন ৪০:২৭ ]
وَقَالَ رَجُلٌ مُّؤْمِنٌ مِّنْ آلِ فِرْعَوْنَ
يَكْتُمُ إِيمَانَهُ أَتَقْتُلُونَ رَجُلًا أَن يَقُولَ رَبِّيَ اللَّهُ
وَقَدْ جَاءكُم بِالْبَيِّنَاتِ مِن رَّبِّكُمْ وَإِن يَكُ كَاذِبًا
فَعَلَيْهِ كَذِبُهُ وَإِن يَكُ صَادِقًا يُصِبْكُم بَعْضُ الَّذِي
يَعِدُكُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ كَذَّابٌ
ফেরাউন গোত্রের এক মুমিন ব্যক্তি, যে তার ঈমান গোপন
রাখত, সে বলল, তোমরা কি একজনকে এজন্যে হত্যা করবে যে, সে বলে, আমার
পালনকর্তা আল্লাহ, অথচ সে তোমাদের পালনকর্তার নিকট থেকে স্পষ্ট প্রমাণসহ
তোমাদের নিকট আগমন করেছে? যদি সে মিথ্যাবাদী হয়, তবে তার মিথ্যাবাদিতা তার
উপরই চাপবে, আর যদি সে সত্যবাদী হয়, তবে সে যে শাস্তির কথা বলছে, তার
কিছু না কিছু তোমাদের উপর পড়বেই। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারী,
মিথ্যাবাদীকে পথ প্রদর্শন করেন না। [ সুরা মু’মিন ৪০:২৮ ]
يَا قَوْمِ لَكُمُ الْمُلْكُ الْيَوْمَ ظَاهِرِينَ فِي
الْأَرْضِ فَمَن يَنصُرُنَا مِن بَأْسِ اللَّهِ إِنْ جَاءنَا قَالَ
فِرْعَوْنُ مَا أُرِيكُمْ إِلَّا مَا أَرَى وَمَا أَهْدِيكُمْ إِلَّا
سَبِيلَ الرَّشَادِ
হে আমার কওম, আজ এদেশে তোমাদেরই রাজত্ব, দেশময় তোমরাই
বিচরণ করছ; কিন্তু আমাদের আল্লাহর শাস্তি এসে গেলে কে আমাদেরকে সাহায্য
করবে? ফেরাউন বলল, আমি যা বুঝি, তোমাদেরকে তাই বোঝাই, আর আমি তোমাদেরকে
মঙ্গলের পথই দেখাই। [ সুরা মু’মিন ৪০:২৯ ]
وَقَالَ الَّذِي آمَنَ يَا قَوْمِ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُم مِّثْلَ يَوْمِ الْأَحْزَابِ
সে মুমিন ব্যক্তি বললঃ হে আমার কওম, আমি তোমাদের জন্যে
পূর্ববর্তী সম্প্রদায়সমূহের মতই বিপদসঙ্কুল দিনের আশংকা করি। [ সুরা
মু’মিন ৪০:৩০ ]
مِثْلَ دَأْبِ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَ وَالَّذِينَ مِن بَعْدِهِمْ وَمَا اللَّهُ يُرِيدُ ظُلْمًا لِّلْعِبَادِ
যেমন, কওমে নূহ, আদ, সামুদ ও তাদের পরবর্তীদের অবস্থা
হয়েছিল। আল্লাহ বান্দাদের প্রতি কোন যুলুম করার ইচ্ছা করেন না। [ সুরা
মু’মিন ৪০:৩১ ]
وَيَا قَوْمِ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ يَوْمَ التَّنَادِ
হে আমার কওম, আমি তোমাদের জন্যে প্রচন্ড হাঁক-ডাকের দিনের আশংকা করি। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩২ ]
يَوْمَ تُوَلُّونَ مُدْبِرِينَ مَا لَكُم مِّنَ اللَّهِ مِنْ عَاصِمٍ وَمَن يُضْلِلِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِنْ هَادٍ
যেদিন তোমরা পেছনে ফিরে পলায়ন করবে; কিন্তু আল্লাহ
থেকে তোমাদেরকে রক্ষাকারী কেউ থাকবে না। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার
কোন পথপ্রদর্শক নেই। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩৩ ]
وَلَقَدْ جَاءكُمْ يُوسُفُ مِن قَبْلُ بِالْبَيِّنَاتِ
فَمَا زِلْتُمْ فِي شَكٍّ مِّمَّا جَاءكُم بِهِ حَتَّى إِذَا هَلَكَ
قُلْتُمْ لَن يَبْعَثَ اللَّهُ مِن بَعْدِهِ رَسُولًا كَذَلِكَ يُضِلُّ
اللَّهُ مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ مُّرْتَابٌ
ইতিপূর্বে তোমাদের কাছে ইউসুফ সুস্পষ্ট প্রামাণাদিসহ
আগমন করেছিল, অতঃপর তোমরা তার আনীত বিষয়ে সন্দেহই পোষণ করতে। অবশেষে যখন
সে মারা গেল, তখন তোমরা বলতে শুরু করলে, আল্লাহ ইউসুফের পরে আর কাউকে
রসূলরূপে পাঠাবেন না। এমনিভাবে আল্লাহ সীমালংঘনকারী, সংশয়ী ব্যক্তিকে
পথভ্রষ্ট করেন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩৪ ]
الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ بِغَيْرِ
سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ كَبُرَ مَقْتًا عِندَ اللَّهِ وَعِندَ الَّذِينَ
آمَنُوا كَذَلِكَ يَطْبَعُ اللَّهُ عَلَى كُلِّ قَلْبِ مُتَكَبِّرٍ
جَبَّارٍ
যারা নিজেদের কাছে আগত কোন দলীল ছাড়াই আল্লাহর আয়াত
সম্পর্কে বিতর্ক করে, তাদের একজন আল্লাহ ও মুমিনদের কাছে খুবই অসন্তোষজনক।
এমনিভাবে আল্লাহ প্রত্যেক অহংকারী-স্ব ৈরাচারী ব্যক্তির অন্তরে মোহর এঁটে
দেন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩৫ ]
وَقَالَ فِرْعَوْنُ يَا هَامَانُ ابْنِ لِي صَرْحًا لَّعَلِّي أَبْلُغُ الْأَسْبَابَ
ফেরাউন বলল, হে হামান, তুমি আমার জন্যে একটি সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মাণ কর, হয়তো আমি পৌঁছে যেতে পারব। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩৬ ]
أَسْبَابَ السَّمَاوَاتِ فَأَطَّلِعَ إِلَى إِلَهِ
مُوسَى وَإِنِّي لَأَظُنُّهُ كَاذِبًا وَكَذَلِكَ زُيِّنَ لِفِرْعَوْنَ
سُوءُ عَمَلِهِ وَصُدَّ عَنِ السَّبِيلِ وَمَا كَيْدُ فِرْعَوْنَ إِلَّا
فِي تَبَابٍ
আকাশের পথে, অতঃপর উঁকি মেরে দেখব মূসার আল্লাহকে।
বস্তুতঃ আমি তো তাকে মিথ্যাবাদীই মনে করি। এভাবেই ফেরাউনের কাছে সুশোভিত
করা হয়েছিল তার মন্দ কর্মকে এবং সোজা পথ থেকে তাকে বিরত রাখা হয়েছিল।
ফেরাউনের চক্রান্ত ব্যর্থ হওয়ারই ছিল। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩৭ ]
وَقَالَ الَّذِي آمَنَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُونِ أَهْدِكُمْ سَبِيلَ الرَّشَادِ
মুমিন লোকটি বললঃ হে আমার কওম, তোমরা আমার অনুসরণ কর। আমি তোমাদেরকে সৎপথ প্রদর্শন করব। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩৮ ]
يَا قَوْمِ إِنَّمَا هَذِهِ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا مَتَاعٌ وَإِنَّ الْآخِرَةَ هِيَ دَارُ الْقَرَارِ
হে আমার কওম, পার্থিব এ জীবন তো কেবল উপভোগের বস্তু, আর পরকাল হচ্ছে স্থায়ী বসবাসের গৃহ। [ সুরা মু’মিন ৪০:৩৯ ]
مَنْ عَمِلَ سَيِّئَةً فَلَا يُجْزَى إِلَّا مِثْلَهَا
وَمَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ
فَأُوْلَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ يُرْزَقُونَ فِيهَا بِغَيْرِ حِسَابٍ
যে মন্দ কর্ম করে, সে কেবল তার অনুরূপ প্রতিফল পাবে,
আর যে, পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ
করবে। তথায় তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৪০ ]
وَيَا قَوْمِ مَا لِي أَدْعُوكُمْ إِلَى النَّجَاةِ وَتَدْعُونَنِي إِلَى النَّارِ
হে আমার কওম, ব্যাপার কি, আমি তোমাদেরকে দাওয়াত দেই
মুক্তির দিকে, আর তোমরা আমাকে দাওয়াত দাও জাহান্নামের দিকে। [ সুরা মু’মিন
৪০:৪১ ]
تَدْعُونَنِي لِأَكْفُرَ بِاللَّهِ وَأُشْرِكَ بِهِ مَا لَيْسَ لِي بِهِ عِلْمٌ وَأَنَا أَدْعُوكُمْ إِلَى الْعَزِيزِ الْغَفَّارِ
তোমরা আমাকে দাওয়াত দাও, যাতে আমি আল্লাহকে অস্বীকার
করি এবং তাঁর সাথে শরীক করি এমন বস্তুকে, যার কোন প্রমাণ আমার কাছে নেই।
আমি তোমাদেরকে দাওয়াত দেই পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল আল্লাহর দিকে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৪২ ]
لَا جَرَمَ أَنَّمَا تَدْعُونَنِي إِلَيْهِ لَيْسَ
لَهُ دَعْوَةٌ فِي الدُّنْيَا وَلَا فِي الْآخِرَةِ وَأَنَّ مَرَدَّنَا
إِلَى اللَّهِ وَأَنَّ الْمُسْرِفِينَ هُمْ أَصْحَابُ النَّارِ
এতে সন্দেহ নেই যে, তোমরা আমাকে যার দিকে দাওয়াত দাও,
হইকালে ও পরকালে তার কোন দাওয়াত নেই! আমাদের প্রত্যাবর্তন আল্লাহর দিকে
এবং সীমা লংঘকারীরাই জাহান্নামী। [ সুরা মু’মিন ৪০:৪৩ ]
فَسَتَذْكُرُونَ مَا أَقُولُ لَكُمْ وَأُفَوِّضُ أَمْرِي إِلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ
আমি তোমাদেরকে যা বলছি, তোমরা একদিন তা স্মরণ করবে।
আমি আমার ব্যাপার আল্লাহর কাছে সমর্পণ করছি। নিশ্চয় বান্দারা আল্লাহর
দৃষ্টিতে রয়েছে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৪৪ ]
فَوَقَاهُ اللَّهُ سَيِّئَاتِ مَا مَكَرُوا وَحَاقَ بِآلِ فِرْعَوْنَ سُوءُ الْعَذَابِ
অতঃপর আল্লাহ তাকে তাদের চক্রান্তের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করলেন এবং ফেরাউন গোত্রকে শোচনীয় আযাব গ্রাস করল। [ সুরা মু’মিন ৪০:৪৫ ]
النَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا غُدُوًّا وَعَشِيًّا وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ أَدْخِلُوا آلَ فِرْعَوْنَ أَشَدَّ الْعَذَابِ
সকালে ও সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের সামনে পেশ করা হয়
এবং যেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন আদেশ করা হবে, ফেরাউন গোত্রকে কঠিনতর
আযাবে দাখিল কর। [ সুরা মু’মিন ৪০:৪৬ ]
وَإِذْ يَتَحَاجُّونَ فِي النَّارِ فَيَقُولُ
الضُّعَفَاء لِلَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا إِنَّا كُنَّا لَكُمْ تَبَعًا فَهَلْ
أَنتُم مُّغْنُونَ عَنَّا نَصِيبًا مِّنَ النَّارِ
যখন তারা জাহান্নামে পরস্পর বিতর্ক করবে, অতঃপর
দূর্বলরা অহংকারীদেরকে বলবে, আমরা তোমাদের অনুসারী ছিলাম। তোমরা এখন
জাহান্নামের আগুনের কিছু অংশ আমাদের থেকে নিবৃত করবে কি? [ সুরা মু’মিন ৪০:৪৭ ]
قَالَ الَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا إِنَّا كُلٌّ فِيهَا إِنَّ اللَّهَ قَدْ حَكَمَ بَيْنَ الْعِبَادِ
অহংকারীরা বলবে, আমরা সবাই তো জাহান্নামে আছি। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ফয়সালা করে দিয়েছেন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৪৮ ]
وَقَالَ الَّذِينَ فِي النَّارِ لِخَزَنَةِ جَهَنَّمَ ادْعُوا رَبَّكُمْ يُخَفِّفْ عَنَّا يَوْمًا مِّنَ الْعَذَابِ
যারা জাহান্নামে আছে, তারা জাহান্নামের রক্ষীদেরকে
বলবে, তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে বল, তিনি যেন আমাদের থেকে একদিনের আযাব
লাঘব করে দেন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৪৯ ]
قَالُوا أَوَلَمْ تَكُ تَأْتِيكُمْ رُسُلُكُم
بِالْبَيِّنَاتِ قَالُوا بَلَى قَالُوا فَادْعُوا وَمَا دُعَاء
الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ
রক্ষীরা বলবে, তোমাদের কাছে কি সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ
তোমাদের রসূল আসেননি? তারা বলবে হঁ্যা। রক্ষীরা বলবে, তবে তোমরাই দোয়া কর।
বস্তুতঃ কাফেরদের দোয়া নিস্ফলই হয়। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫০ ]
إِنَّا لَنَنصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِينَ آمَنُوا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُومُ الْأَشْهَادُ
আমি সাহায্য করব রসূলগণকে ও মুমিনগণকে পার্থিব জীবনে ও সাক্ষীদের দন্ডায়মান হওয়ার দিবসে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫১ ]
يَوْمَ لَا يَنفَعُ الظَّالِمِينَ مَعْذِرَتُهُمْ وَلَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ
সে দিন যালেমদের ওযর-আপত্তি কোন উপকারে আসবে না, তাদের জন্যে থাকবে অভিশাপ এবং তাদের জন্যে থাকবে মন্দ গৃহ। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫২ ]
وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْهُدَى وَأَوْرَثْنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ الْكِتَابَ
নিশ্চয় আমি মূসাকে হেদায়েত দান করেছিলাম এবং বনী ইসরাঈলকে কিতাবের উত্তরাধিকারী করেছিলাম। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫৩ ]
هُدًى وَذِكْرَى لِأُولِي الْأَلْبَابِ
বুদ্ধিমানদের জন্যে উপদেশ ও হেদায়েত স্বরূপ। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫৪ ]
فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنبِكَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ
অতএব, আপনি সবর করুন নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য।
আপনি আপনার গোনাহের জন্যে ক্ষমা প্রর্থনা করুন এবং সকাল-সন্ধ্য ায় আপনার
পালনকর্তার প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করুন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫৫ ]
إِنَّ الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ
بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ إِن فِي صُدُورِهِمْ إِلَّا كِبْرٌ مَّا هُم
بِبَالِغِيهِ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
নিশ্চয় যারা আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে তাদের
কাছে আগত কোন দলীল ব্যতিরেকে, তাদের অন্তরে আছে কেবল আত্নম্ভরিতা, যা
অর্জনে তারা সফল হবে না। অতএব, আপনি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করুন।
নিশ্চয় তিনি সবকিছু শুনেন, সবকিছু দেখেন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫৬ ]
لَخَلْقُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ أَكْبَرُ مِنْ خَلْقِ النَّاسِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
মানুষের সৃষ্টি অপেক্ষা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের সৃষ্টি কঠিনতর। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বোঝে না। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫৭ ]
وَمَا يَسْتَوِي الْأَعْمَى وَالْبَصِيرُ وَالَّذِينَ
آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَلَا الْمُسِيءُ قَلِيلًا مَّا
تَتَذَكَّرُونَ
অন্ধ ও চক্ষুষ্মান সমান নয়, আর যারা বিশ্বাস স্থাপন
করে ও সৎকর্ম করে এবং কুকর্মী। তোমরা অল্পই অনুধাবন করে থাক। [ সুরা মু’মিন
৪০:৫৮ ]
إِنَّ السَّاعَةَ لَآتِيَةٌ لَّا رَيْبَ فِيهَا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يُؤْمِنُونَ
কেয়ামত অবশ্যই আসবে, এতে সন্দেহ নেই; কিন্ত অধিকাংশ লোক বিশ্বাস স্থাপন করে না। [ সুরা মু’মিন ৪০:৫৯ ]
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ
তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া
দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে
লাঞ্ছিত হয়ে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৬০ ]
اللَّهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِتَسْكُنُوا
فِيهِ وَالنَّهَارَ مُبْصِرًا إِنَّ اللَّهَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ
وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ
তিনিই আল্লাহ যিনি রাত্র সৃষ্টি করেছেন তোমাদের
বিশ্রামের জন্যে এবং দিবসকে করেছেন দেখার জন্যে। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের
প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না। [ সুরা মু’মিন ৪০:৬১ ]
ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ لَّا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَأَنَّى تُؤْفَكُونَ
তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা, সব কিছুর স্রষ্টা।
তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছ? [ সুরা
মু’মিন ৪০:৬২ ]
كَذَلِكَ يُؤْفَكُ الَّذِينَ كَانُوا بِآيَاتِ اللَّهِ يَجْحَدُونَ
এমনিভাবে তাদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৬৩ ]
اللَّهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ قَرَارًا
وَالسَّمَاء بِنَاء وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ وَرَزَقَكُم مِّنَ
الطَّيِّبَاتِ ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَتَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ
الْعَالَمِينَ
আল্লাহ, পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্যে বাসস্থান,
আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের
আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক। তিনি
আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা। বিশ্বজগতের পালনকর্তা, আল্লাহ বরকতময়। [ সুরা মু’মিন ৪০:৬৪ ]
هُوَ الْحَيُّ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব,
তাঁকে ডাক তাঁর খাঁটি এবাদতের মাধ্যমে। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের পালনকর্তা
আল্লাহর। [ সুরা মু’মিন ৪০:৬৫ ]
قُلْ إِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَعْبُدَ الَّذِينَ
تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ لَمَّا جَاءنِيَ الْبَيِّنَاتُ مِن رَّبِّي
وَأُمِرْتُ أَنْ أُسْلِمَ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
বলুন, যখন আমার কাছে আমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে স্পষ্ট
প্রমাণাদি এসে গেছে, তখন আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যার পূজা কর, তার এবাদত করতে
আমাকে নিষেধ করা হয়েছে। আমাকে আদেশ করা হয়েছে বিশ্ব পালনকর্তার অনুগত
থাকতে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৬৬ ]
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن
نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ يُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ
لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُونُوا شُيُوخًا وَمِنكُم مَّن
يُتَوَفَّى مِن قَبْلُ وَلِتَبْلُغُوا أَجَلًا مُّسَمًّى وَلَعَلَّكُمْ
تَعْقِلُونَ
তিনি তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা, অতঃপর
শুক্রবিন্দু দ্বারা, অতঃপর জমাট রক্ত দ্বারা, অতঃপর তোমাদেরকে বের করেন
শিশুরূপে, অতঃপর তোমরা যৌবনে পদর্পণ কর, অতঃপর বার্ধক্যে উপনীত হও। তোমাদের
কারও কারও এর পূর্বেই মৃত্যু ঘটে এবং তোমরা নির্ধারিত কালে পৌঁছ এবং তোমরা
যাতে অনুধাবন কর। [ সুরা মু’মিন ৪০:৬৭ ]
هُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ فَإِذَا قَضَى أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُن فَيَكُونُ
তিনিই জীবিত করেন এবং মৃত্যু দেন। যখন তিনি কোন কাজের আদেশ করেন, তখন একথাই বলেন, হয়ে যা'-তা হয়ে যায়। [ সুরা মু’মিন ৪০:৬৮ ]
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ أَنَّى يُصْرَفُونَ
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে, তারা কোথায় ফিরছে? [ সুরা মু’মিন ৪০:৬৯ ]
الَّذِينَ كَذَّبُوا بِالْكِتَابِ وَبِمَا أَرْسَلْنَا بِهِ رُسُلَنَا فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ
যারা কিতাবের প্রতি এবং যে বিষয় দিয়ে আমি
পয়গম্বরগণকে প্রেরণ করেছি, সে বিষয়ের প্রতি মিথ্যারোপ করে। অতএব, সত্বরই
তারা জানতে পারবে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭০ ]
إِذِ الْأَغْلَالُ فِي أَعْنَاقِهِمْ وَالسَّلَاسِلُ يُسْحَبُونَ
যখন বেড়িও শৃঙ্খল তাদের গলদেশে পড়বে। তাদেরকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭১ ]
فِي الْحَمِيمِ ثُمَّ فِي النَّارِ يُسْجَرُونَ
ফুটন্ত পানিতে, অতঃপর তাদেরকে আগুনে জ্বালানো হবে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭২ ]
ثُمَّ قِيلَ لَهُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ تُشْرِكُونَ
অতঃপর তাদেরকে বলা হবে, কোথায় গেল যাদেরকে তোমরা শরীক করতে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭৩ ]
مِن دُونِ اللَّهِ قَالُوا ضَلُّوا عَنَّا بَل لَّمْ نَكُن نَّدْعُو مِن قَبْلُ شَيْئًا كَذَلِكَ يُضِلُّ اللَّهُ الْكَافِرِينَ
আল্লাহ ব্যতীত? তারা বলবে, তারা আমাদের কাছ থেকে উধাও
হয়ে গেছে; বরং আমরা তো ইতিপূর্বে কোন কিছুর পূজাই করতাম না। এমনি ভাবে
আল্লাহ কাফেরদেরকে বিভ্রান্ত করেন। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭৪ ]
ذَلِكُم بِمَا كُنتُمْ تَفْرَحُونَ فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَبِمَا كُنتُمْ تَمْرَحُونَ
এটা একারণে যে, তোমরা দুনিয়াতে অন্যায়ভাবে আনন্দ-উল্লা স করতে এবং এ কারণে যে, তোমরা ঔদ্ধত্য করতে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭৫ ]
ادْخُلُوا أَبْوَابَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا فَبِئْسَ مَثْوَى الْمُتَكَبِّرِينَ
প্রবেশ কর তোমরা জাহান্নামের দরজা দিয়ে সেখানে চিরকাল বসবাসের জন্যে। কত নিকৃষ্ট দাম্ভিকদের আবাসস্থল। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭৬ ]
فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ فَإِمَّا
نُرِيَنَّكَ بَعْضَ الَّذِي نَعِدُهُمْ أَوْ نَتَوَفَّيَنَّكَ فَإِلَيْنَا
يُرْجَعُونَ
অতএব আপনি সবর করুন। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য।
অতঃপর আমি কাফেরদেরকে যে শাস্তির ওয়াদা দেই, তার কিয়দংশ যদি আপনাকে
দেখিয়ে দেই অথবা আপনার প্রাণ হরণ করে নেই, সর্বাবস্থায় তারা তো আমারই
কাছে ফিরে আসবে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭৭ ]
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِّن قَبْلِكَ مِنْهُم
مَّن قَصَصْنَا عَلَيْكَ وَمِنْهُم مَّن لَّمْ نَقْصُصْ عَلَيْكَ وَمَا
كَانَ لِرَسُولٍ أَنْ يَأْتِيَ بِآيَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ فَإِذَا
جَاء أَمْرُ اللَّهِ قُضِيَ بِالْحَقِّ وَخَسِرَ هُنَالِكَ الْمُبْطِلُونَ
আমি আপনার পূর্বে অনেক রসূল প্রেরণ করেছি, তাদের কারও
কারও ঘটনা আপনার কাছে বিবৃত করেছি এবং কারও কারও ঘটনা আপনার কাছে বিবৃত
করিনি। আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কোন নিদর্শন নিয়ে আসা কোন রসূলের কাজ নয়।
যখন আল্লাহর আদেশ আসবে, তখন ন্যায় সঙ্গত ফয়সালা হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে
মিথ্যাপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। [ সুরা মু’মিন ৪০:৭৮ ]
اللَّهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَنْعَامَ لِتَرْكَبُوا مِنْهَا وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ
আল্লাহ তোমাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছেন,
যাতে কোন কোনটিই বাহন হিসাবে ব্যবহার কর এবং কোন কোনটিকে ভক্ষণ কর। [ সুরা
মু’মিন ৪০:৭৯ ]
وَلَكُمْ فِيهَا مَنَافِعُ وَلِتَبْلُغُوا عَلَيْهَا حَاجَةً فِي صُدُورِكُمْ وَعَلَيْهَا وَعَلَى الْفُلْكِ تُحْمَلُونَ
তাতে তোমাদের জন্যে অনেক উপকারিতা রয়েছে আর এজন্যে
সৃষ্টি করেছেন; যাতে সেগুলোতে আরোহণ করে তোমরা তোমাদের অভীষ্ট প্রয়োজন
পূর্ণ করতে পার। এগুলোর উপর এবং নৌকার উপর তোমরা বাহিত হও। [ সুরা মু’মিন ৪০:৮০ ]
وَيُرِيكُمْ آيَاتِهِ فَأَيَّ آيَاتِ اللَّهِ تُنكِرُونَ
তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান। অতএব, তোমরা আল্লাহর কোন কোন নিদর্শনকে অস্বীকার করবে? [ সুরা মু’মিন ৪০:৮১ ]
أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ
كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ كَانُوا أَكْثَرَ مِنْهُمْ
وَأَشَدَّ قُوَّةً وَآثَارًا فِي الْأَرْضِ فَمَا أَغْنَى عَنْهُم مَّا
كَانُوا يَكْسِبُونَ
তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি? করলে দেখত, তাদের
পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছে। তারা তাদের চেয়ে সংখ্যায় বেশী এবং শক্তি
ও কীর্তিতে অধিক প্রবল ছিল, অতঃপর তাদের কর্ম তাদেরকে কোন উপকার দেয়নি। [
সুরা মু’মিন ৪০:৮২ ]
فَلَمَّا جَاءتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ
فَرِحُوا بِمَا عِندَهُم مِّنَ الْعِلْمِ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُوا بِهِ
يَسْتَهْزِئُون
তাদের কাছে যখন তাদের রসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ আগমন
করেছিল, তখন তারা নিজেদের জ্ঞান-গরিমা র দম্ভ প্রকাশ করেছিল। তারা যে বিষয়
নিয়ে ঠাট্টাবিদ্রুপ করেছিল, তাই তাদেরকে গ্রাস করে নিয়েছিল। [ সুরা মু’মিন ৪০:৮৩ ]
فَلَمَّا رَأَوْا بَأْسَنَا قَالُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَحْدَهُ وَكَفَرْنَا بِمَا كُنَّا بِهِ مُشْرِكِينَ
তারা যখন আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল, তখন বলল, আমরা এক
আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করলাম এবং যাদেরকে শরীক করতাম, তাদেরকে পরিহার
করলাম। [ সুরা মু’মিন ৪০:৮৪ ]
فَلَمْ يَكُ يَنفَعُهُمْ إِيمَانُهُمْ لَمَّا رَأَوْا
بَأْسَنَا سُنَّتَ اللَّهِ الَّتِي قَدْ خَلَتْ فِي عِبَادِهِ وَخَسِرَ
هُنَالِكَ الْكَافِرُونَ
অতঃপর তাদের এ ঈমান তাদের কোন উপকারে আসল না যখন তারা
শাস্তি প্রত্যক্ষ করল। আল্লাহর এ নিয়মই পূর্ব থেকে তাঁর বান্দাদের মধ্যে
প্রচলিত হয়েছে। সেক্ষেত্রে কাফেররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। [ সুরা মু’মিন ৪০:৮৫ ]
0 Comments