ছিনতাই করার ভয়াবহতা, লুটতরাজ ছিনতাই করার পরিনতি, লুটপাট করার ভয়াবহতা।

 ছিনতাই করার ভয়াবহতা, লুটতরাজ ছিনতাই করার পরিনতি, লুটপাট করার ভয়াবহতা।
 ছিনতাই করার ভয়াবহতা, লুটতরাজ ছিনতাই করার পরিনতি, লুটপাট করার ভয়াবহতা।


অন্যায়-অত্যাচার করা হারাম এবং অন্যায়ভাবে নেওয়া জিনিস ফেরৎ দেওয়া জরুরীঃ


মহান আল্লাহ বলেছেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ﴾ [ال عمران: ١٠٢]

অর্থাৎ “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে যথার্থভাবে ভয় কর।” (সূরা আলে ইমরান ১০২ আয়াত)

উক্ত আয়াতে যথার্থভাবে ভয় করার ব্যাখ্যা রয়েছে এই আয়াতে;

তিনি বলেন,


﴿ فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ مَا ٱسۡتَطَعۡتُمۡ ﴾ [التغابن: ١٦]

অর্থাৎ “তোমরা আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় কর।” (সূরা তাগাবুন ১৬ আয়াত)

তিনি আরো বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَقُولُواْ قَوۡلٗا سَدِيدٗا ٧٠ ﴾ [الاحزاب: ٧٠]

অর্থাৎ “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল।” (সূরা আহযাব ৭০ আয়াত)

তিনি অন্যত্র বলেন,

﴿ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ وَيَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَيۡثُ لَا يَحۡتَسِبُۚ ﴾ [الطلاق: ٢،  ٣]

অর্থাৎ “আর যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তার নিস্কৃতির পথ করে দিবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত উৎস হতে রুযী দান করবেন।” (সূরা ত্বালাক্ব ২-৩ আয়াত)

তিনি আরো বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِن تَتَّقُواْ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّكُمۡ فُرۡقَانٗا وَيُكَفِّرۡ عَنكُمۡ سَيِّ‍َٔاتِكُمۡ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡۗ وَٱللَّهُ ذُو ٱلۡفَضۡلِ ٱلۡعَظِيمِ ٢٩ ﴾ [الانفال: ٢٩]

অর্থাৎ “যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তিনি তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্যকারী শক্তি দেবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ অতিশয় অনুগ্রহশীল।” (সূরা আনফাল ২৯ আয়াত)
بَاب النَّهْيِ عَنْ النُّهْبَةِ حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا
يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ مَنِ انْتَهَبَ نُهْبَةً فَلَيْسَ مِنَّا ‏"‏ ‏.‏
ইমরান ইবনুল হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি ছিনতাই ও লুটতরাজ করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।[1]

بَاب النَّهْيِ عَنْ النُّهْبَةِ حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ حَمَّادٍ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ لاَ يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَسْرِقُ السَّارِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ أَبْصَارَهُمْ حِينَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ ‏"‏ ‏.‏
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যেনাকারী যখন যেনায় লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। মদ্যপ যখন মদ পানে লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। চোর যখন চৌর্যবৃত্তিতে লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। আর লুটতরাজ ও ছিনতাইকারী যখন লুটতরাজ ও ছিনতাই করে এবং লোকজন তার দিকে চোখ তুলে তাকায়, তখন সে মুমিন থাকে না।[2]

بَاب النَّهْيِ عَنْ النُّهْبَةِ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ ثَعْلَبَةَ بْنِ الْحَكَمِ، قَالَ أَصَبْنَا غَنَمًا لِلْعَدُوِّ فَانْتَهَبْنَاهَا فَنَصَبْنَا قُدُورَنَا فَمَرَّ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِالْقُدُورِ فَأَمَرَ بِهَا فَأُكْفِئَتْ ثُمَّ قَالَ ‏ "‏ إِنَّ النُّهْبَةَ لاَ تَحِلُّ ‏"‏ ‏.‏
সালামা ইবনুল হাকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা শত্রুপক্ষের মেষপালের নাগাল পেয়ে তা লুট করলাম। অতঃপর আমরা সেগুলোর গোশত পাতিলে করে রান্না করছিলাম। এমতাবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাতিলগুলো অতিক্রমকালে (সেগুলো উল্টে) ফেলে দেয়ার নির্দেশ দিলে তা উল্টে ফেলে দেয়া হলো। অতঃপর তিনি বলেনঃ লুটতরাজ করা হালাল নয়।[3]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿مَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ حَمِيمٖ وَلَا شَفِيعٖ يُطَاعُ ﴾ [غافر: ١٨]

অর্থাৎ “সীমালংঘনকারীদের জন্য অন্তরঙ্গ কোন বন্ধু নেই এবং এমন কোন সুপারিশকারীও নেই যার সুপারিশ গ্রাহ্য করা হবে।” (সূরা মুমিন ১৮ আয়াত)

﴿ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِن نَّصِيرٖ ﴾ [الحج: ٧١]

অর্থাৎ “যালেমদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা হাজ্জ ৭১ আয়াত)

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم قَالَ: «لَتُؤَدَّنَّ الحُقُوقُ إِلَى أهْلِهَا يَومَ القِيَامَةِ، حَتَّى يُقَادَ للشَّاةِ الجَلْحَاءِ مِنَ الشَّاةِ القَرْنَاءِ». رواه مسلمُ، إنَّ رَبَّكُمْ لَيْسَ بأعْوَرَ وإنَّهُ أعْوَر
জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমরা অত্যাচার করা থেকে বাঁচো, কেননা অত্যাচার কিয়ামতের দিন অন্ধকার স্বরূপ। (অর্থাৎ অত্যাচারী সেদিন আলো পাবে না)। আর তোমরা কৃপণতা থেকে দূরে থাকো। কেননা, কৃপণতা পূর্ববর্তী লোকেদেরকে ধ্বংস করেছে। এ কৃপণতা তাদেরকে নিজেদের রক্তপাত করার এবং হারামকে হালাল জানার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে।’’[4]

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم قَالَ: «لَتُؤَدَّنَّ الحُقُوقُ إِلَى أهْلِهَا يَومَ القِيَامَةِ، حَتَّى يُقَادَ للشَّاةِ الجَلْحَاءِ مِنَ الشَّاةِ القَرْنَاءِ». رواه مسلمُ، إنَّ رَبَّكُمْ لَيْسَ بأعْوَرَ وإنَّهُ أعْوَر
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন প্রত্যেক হকদারের হক অবশ্যই আদায় করা হবে। এমন কি শিংবিহীন ছাগলকে শিংযুক্ত ছাগলের নিকট থেকে বদলা দেওয়া হবে।’’[1]

وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ الله عَنهَا : أَنَّ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ ظَلَمَ قَيدَ شِبْرٍ مِنَ الأرْضِ، طُوِّقَهُ مِنْ سَبْعِ أرَضِينَ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি কারো জমি এক বিঘত পরিমাণ অন্যায়ভাবে দখল করে নেবে, (কিয়ামতের দিন) সাত তবক (স্তর) যমীন তার গলায় লটকে দেওয়া হবে।’’[6]

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عَنِ النَّبيّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ كَانَتْ عِنْدَهُ مَظْلمَةٌ لأَخِيه، مِنْ عِرضِهِ أَوْ مِنْ شَيْءٍ، فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ اليَوْمَ قبْلَ أنْ لاَ يَكُونَ دِينَار وَلاَ دِرْهَمٌ ؛ إنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلمَتِهِ، وَإنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيهِ». رواه البخاري
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি তার (কোন মুসলিম) ভাইয়ের উপর তার সম্ভ্রম অথবা কোন বিষয়ে যুলুম করেছে, সে যেন আজই (দুনিয়াতে) তার কাছে (ক্ষমা চেয়ে) হালাল করে নেয়, ঐ দিন আসার পূর্বে যেদিন দ্বীনার ও দিরহাম কিছুই থাকবে না। তার যদি কোন নেক আমল থাকে, তবে তার যুলুমের পরিমাণ অনুযায়ী তা হতে নিয়ে নেওয়া হবে। আর যদি তার নেকী না থেকে, তবে তার (মযলূম) সঙ্গীর পাপরাশি নিয়ে তার (যালেমের) উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।’’[7]

[1]তিরমিযী ১১২৩, মিশকাত ২৯৪৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ
[2]সহীহুল বুখারী ২৪৭৫, ৫৫৭৮, ৬৭৭২, ৬৮১০, মুসলিম ৫৭, তিরমিযী ২৬২৫, নাসায়ী ৪৮৭০, ৪৮৭১, ৪৮৭২, ৫৬৫৯, ৫৬৬০, আবূ দাউদ ৪৬৮৯, আহমাদ ২৭৪১৯, ৮৬৭৮, ৮৭৮১, ৯৮৫৯, দারেমী ১৯৯৪, ২১০৬, রাওদুন নাদীর ৭১৬, সহীহাহ ৩০০০, তাখরীজুল ঈমান লি ইবনু আবু শায়বাহ ৩৮-৪১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ
[3]সুনানে ইবনে মাজাহ,৩৯৩৮
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহীহাহ ১৬৭৩। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[4] মুসলিম ২৫৭৮, আহমাদ ১৪০৫২ হাদিসের মানঃ সহিহ
[5] মুসলিম ২৫৮২, তিরমিযী ২৪২০, আহমাদ ৭১৬৩, ৭৯৩৬, ৮০৮৯, ৮৬৩০ হাদিসের মানঃ সহিহ
[6] সহীহুল বুখারী ২৪৫৩, ৩১৯৫, মুসলিম ১৬১২, আহমাদ ২৩৮৩২, ২৫৬১২, ২৫৬৯২ হাদিসের মানঃ সহিহ
[7] সহীহুল বুখারী ২৪৪৯, ৬৫৩৪, আহমাদ ৯৩৩২, ১০১৯৫ হাদিসের মানঃ সহিহ

সূরা আল হাশর:7 - রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। সূরা মুহাম্মদ:33 - হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রসূলের (সাঃ) আনুগত্য কর এবং নিজেদের কর্ম বিনষ্ট করো না।

Post a Comment

0 Comments