গরিবের মর্যাদা , দরিদ্রের গুনাবলী, দরিদ্ররা ধনিদের ৫০০ বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে।



মানুষকে মানুষ ভাবুন, কাউকে দেখে অহংকার করিয়েন না
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَٱصۡبِرۡ نَفۡسَكَ مَعَ ٱلَّذِينَ يَدۡعُونَ رَبَّهُم بِٱلۡغَدَوٰةِ وَٱلۡعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجۡهَهُۥۖ وَلَا تَعۡدُ عَيۡنَاكَ عَنۡهُمۡ تُرِيدُ زِينَةَ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۖ ﴾ [الكهف: ٢٨]  
অর্থাৎ “তুমি নিজেকে তাদেরই সংসর্গে রাখ যারা সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপালককে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আহ্বান করে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা করে তাদের দিক হতে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ো না।” (সূরা কাহফ ২৮ আয়াত)
আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘গরীব মু’মিনরা ধনীদের পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’’ (তিরমিযী, সহীহ)  [1]
[1] তিরমিযী ২৩৫৩, ২৩৫৪, ইবনু মাজাহ ৪১২২, আহমাদ ৭৮৮৬, ৮৩১৬, ২৭৭৯৩, ১০২৭৬, ১০২৫২ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হারেসাহ ইবন আহাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘বহু এমন লোকও আছে যার মাথা উষ্কখুষ্ক ধুলোভরা, যাদেরকে দরজা থেকে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। (কিন্তু সে আল্লাহর নিকট এত প্রিয় যে) সে যদি আল্লাহর উপর কসম খায়, তাহলে আল্লাহ তা পূর্ণ করে দেন।’’ (মুসলিম)  [1]
[1] মুসলিম ২৬২২, ২৮৫৪ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘জান্নাত ও জাহান্নামের বিবাদ হল। জাহান্নাম বলল, ‘আমার মধ্যে উদ্ধত ও অহংকারী লোকেরা।’ আর জান্নাত বলল, ‘আমার ভিতরে দুর্বল ও দরিদ্র ব্যক্তিদের বসবাস।’ অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের মধ্যে ফায়সালা করলেন যে, ‘তুমি জান্নাত আমার রহমত, তোমার দ্বারা আমি যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করব। আর তুমি জাহান্নাম আমার শাস্তি, তোমার দ্বারা আমি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেব। আর তোমাদের উভয়কেই পরিপূর্ণ করা আমার দায়িত্ব।’’ (মুসলিম)  [1]
[1] সহীহুল বুখারী ৪৮৪৯, ৪৮৫০, ৭৪৪৯, মুসলিম ২৮৪৬,২৮৪৭, তিরমিযী ২৫৫৭, ২৫৬১, আহমাদ ৭৬৬১, ২৭৩৮১, ২৭২২৪, ১০২১০। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
মুসআব ইবনু সা‘দ ইবনু আবী অক্কাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু (তাঁর পিতা) সা‘দ ধারণা করলেন যে, তার চেয়ে নিম্নশ্রেণীর লোকের উপর তাঁর মর্যাদা রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তোমাদেরকে দুর্বলদের কারণেই সাহায্য করা হয় এবং রুযী দেওয়া হয়।[1] (বুখারী মুরসাল সূত্রে, যেহেতু মুসআব ইবনু সা‘দ তাবেঈ। তবে হাফেয আবূ বকর বারক্বানী তাঁর সহীহ গ্রন্থে ‘মুস‘আব নিজ পিতা হতে’ মুত্তাসিল সূত্রে বর্ণনা করেছেন।)
[1] সহীহুল বুখারী ২৮৯৬, নাসায়ী ৩১৭৮, আহমাদ ১৪৯৬ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
উসামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আমি জান্নাতের দরজায় দাঁড়ালাম। অতঃপর দেখলাম যারা জান্নাতে প্রবেশ করেছে তাদের অধিকাংশ গরীব-মিসকীন মানুষ। আর ধনবানদেরকে (তখনও হিসাবের জন্য) আটকে রাখা হয়েছে। পক্ষান্তরে (অন্যান্য) জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আর আমি জাহান্নামের দরজায় দাঁড়িয়ে দেখলাম যে, যারা তাতে প্রবেশ করেছে তাদের বেশীর ভাগই নারীর দল। (বুখারী ও মুসলিম)  [1]
[1] সহীহুল বুখারী ৫১৯৬, ৬৫৪৭, মুসলিম ২৭৩৬, আহমাদ ২১২৭৫, ২১৩১৮ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
আবূ আব্বাস সাহ্‌ল ইবনু সা‘দ সায়েদী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পাশ দিয়ে পার হয়ে গেল, তখন তিনি তাঁর নিকট উপবিষ্ট একজনকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘এ ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার মন্তব্য কী?’’ সে বলল, ‘এ ব্যক্তি তো এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোক।  আল্লাহর কসম! সে কোথাও বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে এবং কারো জন্য সুপারিশ করলে তা কবুল করা হবে।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আর এক ব্যক্তি পার হয়ে গেল। তিনি ঐ (উপবিষ্ট) লোকটিকে বললেন, ‘‘এ লোকটির ব্যাপারে তোমার অভিমত কী?’’ সে বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! এ তো একজন দরিদ্র মুসলিম। সে এমন ব্যক্তি যে, সে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না, কারো জন্য সুপারিশ করলে তা কবুল করা হবে না এবং সে কোনো কথা বললে, তার কথা শ্রবণযোগ্য হবে না।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘এ ব্যক্তি দুনিয়া ভর্তি ঐরূপ লোকদের চাইতে বহু উত্তম।’’ (বুখারী, মুসলিম)  [1]
[1] সহীহুল বুখারী ৫০৯১, ৬৪৪৭,ইবনু মাজাহ ৪১২০ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

Post a Comment

0 Comments