বাংলা উচ্চারণসহ দুরুদ শরীফ এবং দুরুদ শরীফের ফযিলত | IBTV


বাংলা উচ্চারণসহ দুরুদ শরীফ এবং দুরুদ শরীফের ফযিলত | IBTV
বাংলা উচ্চারণসহ দুরুদ শরীফ এবং দুরুদ শরীফের ফযিলত | IBTV

সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যাকে কেন্দ্র করেই তামাম পৃথিবীর সৃষ্টি। তার দরুদ শরীফ পাঠ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার প্রিয় হাবীব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর ওপর দরুদ পড়তে স্বয়ং মহান আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ্) স্বয়ং এবং আমার ফেরেস্তাগণ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরুদ পাঠ পূর্বক সালাম প্রেরণ করিয়া থাকি; হে মুমিনগণ তোমরাও তাঁহার ওপর দরুদ পাঠ কর এবং সালাম প্রেরণ কর।’ (পবিত্র কোরআন: ২২ পারা, সূরা: আহযাব, রুকু: ৭, আয়াত: ৫৬)

পবিত্র কোরআন ছাড়াও হাদিস শরীফে দরুদ শরীফ পাঠের গুরুত্ব ও বিশদ বিবরণ রয়েছে। দরুদ শরীফ পাঠে অশেষ সাওয়াব, রহমত, বরকত পাওয়া যায়। রাসূল (সাঃ) এর প্রতি মুহাব্বাত নিয়ে দরুদ পাঠ করা উত্তম ইবাদত। রাসূল (সাঃ) নিজেও দরুদ পাঠ করার জন্য তাঁর উম্মতদের বলেছেন, রাসূল (সাঃ) দরুদ পাঠের ফজিলত ও মাহাত্ন্য উম্মতদের জানিয়ে দিয়েছেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পড়ে, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর দশবার রহমত বর্ষণ করেন।’ (সহিহ মুসলিম)

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের নাম শোনার পর দরুদ শরীফ পাঠ করা ওয়াজিব। রাসূল (সা.) নাম মুবারক উচ্চারণ অথবা শোনার পর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এই দরুদ বলা ওয়াজিব। যদি সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম পড়া না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে গুনাহগার হতে হবে। কোনো আলোচনায় বা মাহফিলে যদি নবীজি (সাঃ) এর নাম নেয়া হয় তবে প্রথমবার সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলা ওয়াজিব। এরপর যতবার নবীজি (সাঃ) এর নাম নেয়া হবে ততবার সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলা মুস্তাহাব। তবে, একবারও যদি দরুদ-সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম না পড়া হয় সেক্ষেত্রে গুনাহগার হতে হবে। 

তাই কোনো আলোচনায় রাসূল (সাঃ) এর নাম  যতবার নেয়া হবে ততবার সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম পড়ে মুস্তাহাব সাওয়াব পাওয়া যায়। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘যার কাছে আমার নাম উল্লেখ করা হয় সে যেন তৎক্ষণাৎ আমার ওপর দরুদ শরিফ পড়ে।’

দরুদ শরীফ পাঠ করলে সহজে দোয়া কবুল হয়ে যায়। হজরত ওমর বিন খাত্তাব (রা.) বলেন, নিশ্চয় বান্দার দোয়া-মোনাজাত আসমান ও জমিনের মাঝখানে ঝুলানো থাকে, তার কোনো কিছু আল্লাহপাকের নিকট পৌঁছে না যতক্ষণ না বান্দা তার নবীর প্রতি দরুদ পাঠ করবে। (তিরমিজী শরিফ)।


মহান আল্লাহ তায়ালা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামকে রহমত স্বরূপ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআন শরীফে উল্লেখ করেছেন, ‘আমি আপনাকেই শুধুমাত্র সমগ্র বিশ্ব জাহানের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ (সূরা: আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭ )

তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালোবাসা জানাতে বারবার দরুদ পাঠ করা হয়। দরুদ শরীফ পাঠে পাঠকারীর দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, দশটি নেকী হাসিল হয় এবং দশটি করে গুনাহ মুছে যায়।
 
পবিত্র জুমার দিনে দরুদ শরীফ পাঠের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দরুদ শরীফের আমল কাল কিয়ামতের পুলসিরাতের অন্ধকারে আলোর কাজ করবে। যে ব্যক্তি জুমার দিন আমার প্রতি ৮০ বার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহপাক তার ৮০ বছরের সগিরা গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম আরো বলেন , ‘কেয়ামতের দিন আমার সুপারিশের নিকটবর্তী সেই ব্যক্তি হবে যে আমার প্রতি অধিক মাত্রায় দরুদ পাঠ করবে। (তিরমিজি) 

মহান আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর ভালবাসায় সিক্ত হওয়ার জন্য দরুদ শরীফ বারংবার পাঠ একটি উত্তম মাধ্যম। অন্তর পরিশুদ্ধির জন্য অন্যান্য ইবাদতের মতো দরুদ শরীফ পাঠ উত্তম আমল।
সালাতের মধ্যে দরুদে ইব্রাহিম পাঠ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। দরুদে ইব্রাহিম বেশ ফজিলতপূর্ণ। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে এই দরুদ পড়া হয়। সালাত ছাড়াও অন্যান্য যেকোনো সময় এই দরুদ শরীফ পাঠে রয়েছে মুস্তাহাব সাওয়াব।
বাংলা উচ্চারণসহ দুরুদ শরীফ এবং দুরুদ শরীফের ফযিলত | IBTV

 >>চলুন দরুদ শরীফ পাঠের ফযিলত সংক্রান্ত কয়েকটি হাদিস জেনে নেই<<


১।মেশকাত শরীফ এর হাদীস- রাসূলে পাক (দঃ) এরশাদ করেন, ''যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ্ পাক তার উপর দশটি রহমত অবতীর্ণ করবেন।



২।নাসায়ী শরীফের হাদীস- আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, হযরত রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন, ''যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ প্রেরণ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাহার প্রতি দশবার রহমত নাযিল করবেন এবং তাহার দশটি গোনাহ মাফ করা হবে, আর তাহার মর্যাদা দশগুণ উচ্চ করা হবে।



৩। নাসাঈ শরীফের অপর বর্ণনায় আছে- হযরত আবু দারদা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন যে, রাসূলে করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমার উম্মতের যে কোনো লোক যদি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ্ পাক তার প্রতি দশটি রহমত নাজিল করেন, দশটি উচ্চ মর্যাদা দান করন, আমলনামায় দশটি নেকি লেখা হয় এবং দশটি গুনাহ মাফ করে দেন।



৪। বায়হাকী শরীফের হাদীস- হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার কবরের নিকট আমার উপর দরুদ পাঠ করবে, আমি তা নিজ কানে শুনবো, আর যে ব্যক্তি আমার উপর গায়েবানা (অর্থাৎ দূরে থেকে) দরুদ পাঠ করবে, তা আমার নিকট পৌঁছে দেয়া হবে।



৫।নাসায়ী ও দারমী শরীফের হাদীস- হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেন, ''আল্লাহ্ তায়ালার বহু ফেরেশতা যমীনে ভ্রাম্যমাণ রয়েছে, যারা আমার নিকট আমার উম্মতের পক্ষ থেকে তাদের সালাম পৌঁছে দেয়।



৬।মুয়াত্তা শরীফের হাদীস- হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন, মহানবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ''কোনো ব্যক্তি দরুদ শরীফ পড়া মাত্র একজন ভ্রাম্যমাণ ফেরেশতা আমার দরবারে উপনীত হয়ে খবর দেয়, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! অমুকের সন্তান অমুক আপনার উপর এত মোর্তবা দরুদ শরীফ পাঠ করেছেন। অমনি আমি ও তার ওপর ঠিক তত মোর্তবা দরুদ পাঠ করি। অতঃপর সেই ফেরেশতা আল্লাহর দরবারে আরজি পেশ করে- হে মাবুদ! অমুকের সন্তান অমুক আপনার হাবীবের ওপর এত মর্তবা দরুদ পাঠ করেছেন। তৎক্ষণাৎ আল্লাহ্ পাক তাকে জানিয়ে দেন, ''উত্তম কিরামান ও কাতেবীনকে বলে দাও, তার প্রত্যেক মোর্তবা দরুদ পাঠের পরিবর্তে যেন তার আমলনামা থেকে দশটি করে গোনাহ্ কেটে দেয় এবং আমার তরফ থেকে প্রত্যেক কাটা স্থানে দশটি করে নেকী লিখে রাখে।



৭। তিরমিযি শরীফের হাদীস- হযরত আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ''সেই ব্যক্তি কৃপণ, যার সম্মুখে আমার নাম উল্লেখ হয়, অথচ সে আমার নামে দরুদ পাঠ করে না। 

৮।তাবারানী শরীফের হাদীস- হযরত আবু দাররা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন যে, রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ''যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা আমার ওপর দশবার দরুদ পড়বে সে কেয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভ করবে।
 

৯।মুসলিম শরীফের হাদীস- হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো ব্যক্তি ওযু করে আদবের সাথে বসে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করলে, আল্লাহ্তায়ালা তাহার ওপর দশবার দরুদ  প্রেরণ করেন। যদি আমার ওপর কেউ দশবার দরুদ পাঠ করেন তবে আল্লাহ্তায়ালা তার ওপর একশতবার দরুদ প্রেরণ করেন। কেউ একশত বার আমার ওপর দরুদ পাঠ করলে আল্লাহ্পাক তার উপর একহাজার বার দরুদ শরীফ প্রেরণ করেন এবং তার জন্য বেহেশত হালাল ও দোযখ হারাম করে দেন।



১০।(তিরমিযী শরীফের হাদীস হযরত ইবনে মাস্উদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার উপর সর্বাধিক দরুদ পাঠকারী কিয়ামতের দিন লোকদের মধ্যে আমার সর্বাধিক নিকটবর্তী হবে।



১১।তিরমিযি শরীফের হাদীস হযরত উবাই ইবনে কা'ব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদা আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি আপনার নামে অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করি; অতএব দরুদ পাঠের জন্য আমি কতটুকু সময় নির্দিষ্ট করব?
_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''যতটুকু তুমি চাও। আমি বললাম, ''এক চতুর্থাংশ সময়। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''যতটুকু তুমি চাও; আর যদি আরও বেশি কর, তবে তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম, অর্ধেক সময়? আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও' আর যদি আরও বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম_ তবে দুই তৃতীয়াংশ সময়। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও আর যদি আরও বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম, আমি আপনার উপর দরুদ পাঠের জন্য আমার সমুদয় সময় নির্দিষ্ট করব। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তবে তোমার যাবতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার দ্বীন ও দুনিয়ার সকল উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে আর তোমার সমস্ত গোনাহ্ মাফ হবে। (তিরমিযী)



১২। মুসলিম শরীফের হাদীস- রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার সুপারিশের পূর্বে কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না কিন্তু যারা আমার ওপর সব সময় দরুদ শরীফ পাঠ করেছে, তারা আমার সুপারিশের পূর্বেই জান্নাতে চলে যাবে। তাদের জন্য আমার কিছুমাত্র সুপারিশের প্রয়োজন হবে না। (মুসলিম শরীফ)।



১৩। অপর এক হাদীসে আছে- নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন যদি তুমি কোন কিছু ভুলে যাও তাহলে আমার উপর দরুন পাঠ কর ইনশা আল্লাহ সে ভুলে যাওয়া জিনিষ তোমার মনে পড়ে যাবে।

আপনারা নিজেরাই পূণ বিশ্বাসের সাথে এ হাদীসের উপর আমল করতে পারেন, ধরুন আপনি ঘরে কোন কিছু কোথাও রেখেছেন পরে ভুলে গেছেন তখন আপনি আন্তরিকতার সাথে দরুদে পাক পাঠ করতে থাকুন দেখবেন আপনার মনে হবে কেউ যেন আপনার কানে কানে এসে বলে দিল যে তুমি অমুক জায়গায় বস্তুটি রেখেছ।

তেমনিভাবে যে সব ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষার্থী তারা পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্ন আসার সাথে সাথে ১১ অথবা ১২ বার দরুদ পাঠ করলে এবং পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ১১/১২ বার দরুন পাঠ করলে ইনশা আল্লাহ পরীক্ষা ভাল হবে। অনেকে পরীক্ষার হলে গিয়ে মুখস্থ পড়া ভুলে যায় সে সমস্যাও ইনশা আল্লাহ দরুদে পাকের বরকতে সমাধান হয়ে যাবে।

১৪। অভাব দুর করার জন্য সবচেয়ে আফযল অজিফা হল দরুদে পাক পাঠ করা। নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন যে ব্যক্তি প্রতিদিন আমার উপর ৫০০ বার দরুন পাঠ করবে তাঁর সকল অভাব অনটন দুর হয়ে যাবে।
 

১৫। অপর এক রেওয়ায়েতে আছে নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন যখনই তোমাদের কোন পেরেশানি আসে তখন তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরুদ পাঠ কর তাহলে আল্লাহ তাবারাকা ওয়াতায়ালা তোমাদের পেরেশানি দুর করে দিবেন। আর বেশী দরুদ এর সংখ্যার ব্যপারে ওলামায়ে কেরাম বলেন ৩০০ বার অথবা ৩১৩ বার। অথ্যাৎ কেহ দিনে ৩ শত বা ৩১৩ বার দরুদ পাঠ করে তাহলে সে অধিক দরুদ পাঠকারী হিসেবে গণ্য হবে। 

১৬। অপর এক রেওয়ায়েতে আছে নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন- যে ব্যক্তি প্রতিদিন হাজার বার দরুদ পাঠ করে সে ততক্ষন মৃত্যু বরণ করবে না যতক্ষন নিজের স্থান জান্নাতে দেখতে না পাবে। হাদীসের ব্যখ্যাকারী গণ বলেন এটা মুলত জান্নাতে প্রবেশের সুসংবাদ। 

১৭। অপর এক রেওয়ায়েতে আছে নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন- আমি স্বপ্নে দেখলাম আমার এক উম্মত পুলসিরাতে এসেছে। আর সে পুলসিরাত পার হচ্ছিল হঠাৎ তার পা কেঁপে উঠল। এমন সময় সে পুলসিরাত থেকে জাহান্নামে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হল। এমন সময় সে দুনিয়ায় মহব্বতের সাথে আমার উপর যে দরুদ পাঠ করেছিল সে দরুদ এসে উপস্থিত হয়ে গেল আর সে উম্মতের হাত ধরে তাঁকে পুলসিরাত পার করে দিল।

১৮। ইমাম কস্তুলানি (রহঃ) যিনি সহিহ বুখারীর শরাহ লিখেছেন তাঁর প্রসিদ্ধ কিতাব মাওয়াহেবে লুদুন্নিয়া নামক কিতাবে তিনি একটি চমৎকার হাদীস নকল করেন তা হল

একদা রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববীতে বসেছিলেন। এ সময় চারজন প্রধান ফেরেশতা এসে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় দেখে প্রশ্ন করলেন, ''হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কী চিন্তা করছেন? রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''আমার উম্মতের চিন্তা করছি, কীভাবে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচিয়ে জান্নাতে নেওয়া যায়। এই কথা শুনে

প্রথম ফেরেশতা আজরাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ''আপনার ওই উম্মত যে সকালে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার আপনার প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করবে, আমি মৃত্যুর সময় তার জান সম্মান ও ইজ্জতের সাথে সহজে কবজ করব।

দ্বিতীয় ফেরেশতা ইসরাফিল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপনার যে উম্মত সকাল-সন্ধ্যা দশবার করে আপনার উপর দরুদ ও সালাম ভেজবে, আমি তার জন্য হাশরের ময়দানে আল্লাহর আরশের নিচে সেজদারত অবস্থায় তার জন্য গুনাহ মাফির জন্য প্রার্থনা করব এবং প্রার্থনা কবুল না হওয়া পর্যন্ত সেজদা থেকে মাথা তুলব না।

 তৃতীয় ফেরেশতা মিকাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপনার যে উম্মত প্রাতে দশবার এবং সন্ধ্যায় দশবার আপনার প্রতি দরুদ ও সালাম জানাবে, আমি হাশরের ময়দানে তাকে নিজ হাতে হাউজে কাউসারের পানি পান করাব।

চতুর্থ ফেরেশতা জিব্রাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাসূলে পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাহু ধরে বললেন, অনুরূপ দরুদ পাঠকারীকে আমি এভাবে পুলসিরাত পার করে জান্নাতে পৌঁছে দেবো।

মোটকথা হাদীস শরীফের দ্বারা সংক্ষেপে দরুদ পাঠের যে সব ফযিলত চোখে পড়ার মত তা হল-
দরুদ শরীফ পাঠে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। সর্বাবিধ বিপদ-আপদ দূরীভূত হয়। দেহ রোগমুক্ত থাকে। স্বাস্থ্য অটুট হয়। হায়াত বৃদ্ধি পায়। যাবতীয় অভাব-অভিযোগ মোচন হয়। ইহকাল এবং পরকালের কল্যাণসহ দ্বীন-দুনিয়ার সকল মক্বসূদ হাসিল হয়। নিয়মিত বেশি বেশি দরুদ পাঠকারীর হাশরের মাঠে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুপারিশ প্রাপ্তি ও মুক্তি লাভের আশা করা যায়। দরুদ শরীফ পাঠের সর্বাপেক্ষা স্বাদের ও মধুর বিশেষত্ব এই যে, দরুদ শরীফ পাঠের উছিলায় পাঠক উন্নতির পথে অগ্রসর হয়। তার সমগ্র জীবনের সকল প্রকার গুনাহ্ মাফ হয়ে যায় এবং স্বপ্নযোগে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দীদার নছিব হয়। অর্থাৎ জিয়ারত বা দর্শন লাভ হয়। আর সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তির জন্য দোযখ হারাম এবং বেহেস্ত অনিবার্য হয়ে যায়।

>>চলুন কয়েকটি দুরুদ শরীফ শিখে নেই<<


সাইয়্যেদা ফাতিমা (রা:) রচিত দুরূদ শরীফ:

আরবি:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ مَنْ رُوْحُهُ مِحْرَابُ الْأَرْوَاحِ وَالْمَلٰئِكَةِ وَالْكَوْنِ- اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ مَنْ هُوَ اِمَامُ اْلاَنْبِيَاءِ وَالُمُرْسَلِيْنَ- اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ مَنْ هُوَ اِمَامُ اَهْلِ الْجَنَّةِ عِبَادَ اللهِ الْمُؤْمِنِيْنَ

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা মান রুহুহু মিহরাবুল আরওয়াহি ওয়াল মলাইকাতি ওয়াল কাউনি। আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা মানহুয়া ইমামুল আম্বিয়ায়ি ওয়াল মুরসালীনা। আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা মানহুয়া ইমামু আহ্লিল জান্নাতি ইবাদিল্লাহিল মু’মিনীন।





দুরূদে নারিয়া বা সালাতে নারিয়া:

 আরবি:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ صَلٰوةً كَامِلَةً وَسَلِّمْ سَلَامًا تَامًّا عَليٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدِنِ الَّذِيْ تَنْحَلُّ بِهِ الْعُقَدُ وَتَنْفَرِجُ بِهِ الْكُرَبُ وَتُقْضىٰ بِهِ الْحَوَائِجُ وَتُنَالُ بِهِ الرَّغَائِبُ وَحُسْنُ الْخَوَاتِمِ وَيُسْتَسْقَي الْغَمَامُ بِوَجْهِهٖ الْكَرِيْمِ وَعَليٰ اٰلِهٖ وَصَحْبِهٖ فِي كُلِّ لَمْحَةٍ وَّنَفَسٍ بِعَدَدِ كُلِّ مَعْلُوْمٍ لَكَ

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা ছাল্লি ছালাতান কামিলাতান ওয়া সাল্লিম সালামান তাম্মান আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিনিল্লাযী তানহাল্লু বিহীল উক্বাদু ওয়া তানফারিজু বিহীল কুরাবু ওয়া তুক্বদ-বিহীল হাওয়ায়িজু ওয়া তুনালু বিহীর রাগাইবু ওয়া হুসনুল খওয়াতিমু ওয়া ইউস্ তাস্কাল গামামু বিওয়াজ হিহিল কারীম, ওয়া আ’লা আলিহী ওয়া ছাহবিহী ফী কুল্লি লাম্হাতিন ওয়া নাফাসিম বিআদাদি কুল্লি মা’লুমল্লাক্

ফযিলত:-
দুরারোগ্য, বালা-মুছিবত, চাকুরী লাভে, ব্যবসার উন্নতি ও যে কোন আশা পূরণে এবং বিবাহ হওয়ার জন্য ৪৪৪৪ বার পাঠ করলে নিশ্চয়ই সফল হবে।

দুনিয়াতে জান্নাত দেখার দুরূদ শরীফ:

 আরবি:-
صَلَّى اللهُ عَليٰ حَبِيْبِهٖ مُحَمَّدٍ وَاٰلِهٖ وَسلَّمَ

বাংলা উচ্চারণ:-
ছাল্লাল্লাহু আলা হাবীবিহী মুহাম্মাদিন ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লিম।

ফযিলত:-
যে ব্যক্তি এই দুরূদ শরীফ একাধারে এক হাজার বার পাঠ করবে, তার মৃত্যুর পূর্বে সে অবশ্যই জান্নাতে তার স্থান ও জান্নাতের ঘর দেখতে পাবে।

দোজখের আযাব মাফ হওয়ার দুরূদ শরীফ:

আরবি:-
اَللّٰهُمَّ اِنِّي اَصْبَحْتُ اَشْهَدُكَ وَاَشْهَدُ حَمَلَةِ عَرْشِكَ وَمَلٰئِكَتِكَ وَجَمِيْعِ خَلْقِكَ اِنَّكَ اَنْتَ اللهُ لَااِلَهَ اِلاَّ اَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ وَاَنَّ مُحَمَّدً عَبْدَكَ وَرَسُوْلُكَ

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা ইন্নি আস্বাহতু আশহাদুকা ওয়া আশহাদু হামালাতি আরশিকা, ওয়া মলাইকাতিকা, ওয়া জামী-’ই খলক্বিকা ইন্নাকা আন্তাল্লাহু লা- ইলাহা ইল্লা আন্তা, ওয়াহ্দাকা লা-শারীকালাকা, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুকা ওয়া রাসূলুকা।

ফযিলত:-
হযরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম (দ:) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি এই দুরূদ শরীফ সকালে বা সন্ধ্যায় ১বার পাঠ করবে, আল্লাহ তার এক চতুর্থাংশ দোজখের আজাব মাফ করবেন এবং দুইবার পাঠ করলে অর্ধেক আজাব মাফ করবেন এবং তিনবার পাঠ করলে তিন চতুর্থাংশ এবং ৪বার পাঠ করলে আল্লাহ তা’আলা তাকে সম্পূর্ণ দোযখের আযাব থেকে রেহাই দেবেন।

দুরূদে ফাতিহ:


আরবি:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ وَبَارِكْ عَلىٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ اَلْفَاتِحِ لِمَا اَغْلَقَ وَالْخَاتِمِ لِمَا سَبَقَ وَالنَّاصِرِ الْحَقِّ بِا لْحَقِّ وَالْهَادِيْ اِلىٰ صِرَاطِكَ الْمُسْتَقِيْمِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَعَلىٰ اٰلِهٖ وَاَصْحَابِهِ حَقَّ قَدْرِهٖ وَمُقَدَّرِهٖ العَظِيْمِ

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা ছাল্লি ওয়াসাল্লিম ওয়া বারিক আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিন, আল ফাতিহি লিমা আগ্লাক্বা ওয়াল খাতিমি লিমা সাবাক্বা, ওয়ান্ না-ছিরিল হাক্কি বিল হাক্কি ওয়াল হাদী ইলা সিরাতিক্বাল্ মুসতাক্বীম। সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া আছহাবিহী হাক্কা ক্বাদরিহী ওয়া মিক্বদারিহিল আযীম

ফযিলত:-
এই দুরূদ শরীফ জীবনে একবার পড়লে তান জন্য জাহান্নাম হারাম হয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার রাতে ১০০ বার পড়লে ৪০০ বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। ভীষণ মুছিবতে পডলে ৫ওয়াক্ত নামাজ বা’দ এই দুরূদ শরীফ ১০০ বার এবং ‘ইয়া লাত্বীফু’ ১০০ বার পাঠ করলে ইন্শাআল্লাহ যত বড় বিপদই হোক বিপদ মুক্ত হবে। একবার এই দুরূদ শরীফ পড়লে ৬ লক্ষ দুরূদ পড়ার ছাওয়াব পাওয়া যাবে। সৌভাগ্যবান ব্যক্তি হজ্জ- ওমরাহ যিয়ারতে গিয়ে পবিত্র মক্কা শরীফে ১ বার পাঠ করেন তবে আল্লাহর রহমত পাওয়া যাবে ৬০ হাজার কোটি, নেকী পাওয়া যাবে ৬০ হাজার কোটি, বেহেশতের মর্তবা পাবে ৬০ হাজার কোটি, গুনাহ মাফ হবে ৬০ হাজার কোটি, ৬০ হাজার কোটি গোলাম আযাদের সম পরিমান সাওয়াব পাবে, এবং ১২০ হাজার কোটি অর্জন হবে। “সুবহানাল্লাহ”। আর মদীনা শরীফে পড়ার সাওয়াব লিখা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। (আমলে আলো ৫ম খন্ড)

 দুরূদে জাওহারূল কামাল:

আরবি:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَليٰ عَيْنِ الرَّحْمَةِ الرَّبَّانِيَّةِ وَالْيَاقُوْتَةِ المُتَحَقِّقَةِ الْحَائِطَةِ بِمَرْكَزِ الْفُهُوْمِ وَالْمَعَانِيُّ نُوْرِ الْاَكْوَانِ الْمُتَكَوِّنَةِ الْأَدَمِيِّ صَاحِبُ الْحَقِّ الرَّبَّانِيِّ الْبَرْقُ الْاَسْطَحُ بِمَزْنِ الْاَرْيَاحِ الْمَائِلَةِ لِكُلِّ مُتَعَرِّضٍ مِّنَ الْبُحُوْرِ وَالْاَوَانِىْ نُوْرِكَ اللَّامِعُ الَّذِيْ مَلَائَةِ الْمَكَانِ- اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّم عَليٰ عَيْنِ الْحَقِّ الَّتِي تَتَجَلىّٰ مِنْهَا عُرُوْسُ الْحَقَائِقِ عَيْنِ الْمَعَارِفِ الْاَقْدَمِ صِرَاطُكَ التَّامُّ اَقْوَمُ-اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلىٰ طَلَعَةِ الْحَقِّ بِالْحَقِّ الْكَنْزِ الْاَعْظَمِ اَفَاضَتْكَ مِنْكَ اِلَيْكَ اَحَاطَةَ النُّوْرِ الْمُسْطَلَمِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَعَلىٰ اٰلِهٖ صَلَاةَ تَعْرِفُنَا بِهَا اِيَّاهُ

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা ছাল্লি ওয়াসাল্লিম আলা আইনির রাহমাতির রাব্বানিয়াতি। ওয়াল ইয়াকু-তাতিল মুতাহাক্বাক্বাতিল হা-য়িত্বাতি বিমারকাজিল ফুহুমি ওয়াল মা’আনী, নূরিল আকওয়ানিল মুতাকাওয়ানাতিল আদিমি সাহিবিল হাক্কির রাব্বানী। আল বারক্বুল আস্ত্বাহি বিমান্যিল আরইয়াহিল মায়িলাতি লিকুল্লি মুতাআররিদ্বিম মিনাল বুহুরি ওয়াল আওয়ানি নুরিকাল ল্লামিউ ল্লাযী মালাআত্ বিহি কাওনুকাল হায়িত্বু বিআম্কানাতিল মাকান।
আল্লাহুম্মা ছাল্লি ওয়াসাল্লিম আলা আইনিল হাক্কিল্লাতী তাতাজাল্লামিনহা উরুসূল হাক্বায়িক্বি আইনুল মাআরিফিল আক্বদামি সিরাত্বুক্বাত্ তাম্মু আক্বওয়াম।
আল্লাহুম্মা ছাল্লি ওয়াসাল্লিম আলা ত্বালআতিল হাক্কি বিল হাক্কিল্ কানাযিল আ’যমি আফাদ্বাতক্বা মিনক্বা ইলাইকা ইহাতাতিন্ নূরিল মুত্বালসামি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আ’লা আলিহী ছালাতান তা’রিফুনা বিহা ইয়্যাহু।

ফযিলত:-
যে ব্যাক্তি এই দুরূদ শরীফ অন্তঃকরণে ৭ বার পাঠ করবে, পাঠ কালীন অধিকাংশ সময় তার নিকট স্বয়ং হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর বিশিষ্ট চার সাহাবী রূহানি ভাবে উপস্থিত থাকবেন। এবং যে ব্যক্তি ৭ বারের অধিক পাঠ করবেন তাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাস ভাবে মহব্বত করবেন। আউলিয়ার দরজা লাভ করে দুনিয়া থেকে যাবেন। এবং যে নিদ্রার পূর্বে ৭ বার পড়ে পাক বিছানায় ঘুমাবে সে স্বপ্নে পেয়ারা নবীর দীদার নসীব হবে। “সুবহানাল্লাহ”


 দুরূদে ইব্রাহীমী:

আরবি:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلىٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَعَلىٰ اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ كَاَِ صَلَّيْتَ عَلىٰ سَيِّدِنَا اِبْرَاهِيْمَ وَعَلىٰ اٰلِ سَيِّدِنَا اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلىٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَعَلىٰ اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ كَاَِ بَارَكْتَ عَلىٰ سَيِّدِنَا اِبْرَاهِيْمَ وَعَلىٰ اٰلِ سَيِّدِنَا اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিন ওয়ালা আ-লি সয়্যিদিনা মাওলানা মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লাইতা আ’লা সাইয়্যিদিনা ইব্রাহীমা ওয়ালা আ-লি সয়্যিদিনা ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিন ওয়ালা আ-লি সয়্যিদিনা মাওলানা মুহাম্মাদিন কামা বারাক্তা আ’লা সাইয়্যিদিনা ইব্রাহীমা ওয়ালা আ-লি সয়্যিদিনা ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।


বরকতময় দুরূদ শরীফ:

আরবি:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلىٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَعَلىٰ اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلٰوةً دَائِمَةً مَّقْبُوْلَةً تُوَدِّيْ بِهَا اَنَّ حَقَّهُ الْعَظِيْمِ

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিন ছালাতান্ দায়িমাতান মাক্ববুলাতান তুওয়াদ্দী বিহা আন্না হাক্কাহুল আযীম


 দুরূদে তাজ:

আরবি:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلىٰ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ صَاحِبِ التَّاجِ وَالْمِعْرَاجِ وَالْبُرَاقِ وَالْعَلَمِ دَافِعِ الْبَلَاءِ وَالْوَبَاءِ وَالْقَحَطِ وَالْمَرَضِ وَالاَلَمِ اِسْمُهُ مَكْتُوْبٌ مَرْفُوْعٌ مَشْفُوْعٌ مَنْقُوْشٌ فِي اللَّوْحِ وَالْقَلَمِ سَيِّدِ الْعَرَبِ وَالْعَجَمِ جِسْمُهُ مُقَدَّسٌ مُعَطَّرٌ مُطَهَّرٌ مُنَوَّرٌ فِي الْبَيْتِ وَالْحَرَمِ شَمْسِ الضُّحىٰ بَدْرِ الدَّجىٰ صَدْرِ الْعُلىٰ نُوْرِ الْهُدٰى كَهْفِ الْوَرٰى مِصْبَاحِ الظُّلَمِ جَمِيْلِ الشِّيَمِ شَفِيْعِ الْاُمَمِ صَاحِبِ الْجُوْدِ وَالْكَرَمِ وَاللهُ عَاصِمُهُ وَجِبْرِيْلُ خَادِمُهُ وَالْبُرَاقُ مَرْكَبُهُ وَالْمِعْرَاجُ سَفَرُهُ وَسِدْرَةُ الْمُنْتَهٰى مَقَامُهُ وَقَابَ قَوْسَيْنِ مَطْلُوْبُهُ وَالْمَطْلُوْبُ مَقْصُوْدُهُ وَالْمَقْصُوْدُ مَوْجُوْدُهُ سَيِّدِ الْمُرْسَلِيْنَ خَاتَمِ النَّبِيّيْنَ شَفِيْعِ الْمُذْنَبِيْنَ اَنِيْسِ الْغَرِيْبِيْنَ رَحْمَةً لِلْعٰلَمِيْنَ رَاحَةً الْعَاشِقِيْنَ مُرَادِ الْمُشْتَاقِيْنَ شَمْسِ الْعَارِفِيْنَ سِرَاجِ السَّالِكِيْنَ مِصْبَاحِ الْمُقَرَّبِيْنَ مُحِبِّ الْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِيْنَ سَيِّدِ الثَّقْلَيْنِ نَبِيِّ الْحَرَمَيْنِ اِمَامِ الْقِبْلَتَيْنِ وَسِيْلَتِنَا فِي الدَّارَيْنِ صَاحِبِ قَابَ قَوْسَيْنِ مَحْبُوْبِ رَبِّ الْمَشْرِقَيْنِ وَالْمَغْرِبَيْنِ جَدِّ الْحَسَنِ وَالْحُسَيْنِ مَوْلَانَا وَمَوْلىٰ الثَّقْلَيْنِ اَبِى الْقَاسِمِ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ نُوْرٍ مِنْ نُوْرِ اللهِ يَا اَيُّهَا الْمُشْتَاقُوْنَ بِنُوْرِ جَمَالِهٖ صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيْمًا

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা সায়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিন, সাহিবিত্ তাজি ওয়াল মি’রাজি ওয়াল বুরাক্বি ওয়াল আলাম। দা-ফিয়িল বালায়ি, ওয়াল ওবায়ি, ওয়াল ক্বাহাতি, ওয়াল মারাদ্বি, ওয়াল আলাম। ইসমুহু মাক্বতুবুন, মারফুউন, মাশফুউন, মানকূশুন, ফিল-লাওহি ওয়াল ক্বালাম। সায়্যিদিল আরাবি ওয়াল আজম। জিসমুহু মুক্বাদ্দাসুন, মুয়াত্তারুন, মতাহ্হারুন, মুনাও-ওয়ারুন, ফিল বাইতি ওয়াল হারাম। শাসছিদ্দুহা, বদরিদ্দুজা, সাদরিল-উলা, নু-রিল হুদা, কাহফিল ওয়ারা, মিসবাহিয্ যুলাম। জামীলিশ্ শিয়ামি শাফিয়িল উমামি, সা-হিবিল জু-দি ওয়াল কারাম। ওয়াল্লাহু আছিমুহু, ওয়া জিব্রীলু খাদিমুহু, ওয়াল বুরাক্বু মারকাবুহু, ওয়াল মি’রাজু ছাফারুহু, ওয়া সিদরাতুল মুন্তাহা মাক্বামুহু ওয়া ক্বাবা ক্বাওসাইনি, মাতলুবুহু ওয়াল মাতলুবু, মাক্বসুদহু ওয়াল মাক্বসুদু মাওজুদুহু, সায়্যিদিল মুরসালীনা, খা-তামিন নাবিইয়্যীনা, শাফিয়িল মুযনিবীনা, আনীছিল গারীবীনা রহ্মাতাল-লিল আ’লামীনা, রহাতিল আ-শিক্বীনা, মুরাদিল মুশ্তাক্বীনা, শামছিল আ-রিফীনা, সিরাজিছ্ ছা-লিকিনা, মিছবাহিল্ মুর্ক্বারাবীনা, মুহিব্বিল্ ফোক্বারায়ি ওয়াল গোরাবায়ি, ওয়াল মাছাকীনা, সয়্যিদিছ্ ছাক্বলায়নি, নাবিয়্যিল হারামায়নি, ইমামিল ক্বিবলাতাইনি, ওয়াসীলাতিনা ফিদ্দারায়নি, ছাহিবি ক্বা-বা ক্বাওছাইনি, মাহ্বূবি রাব্বিল মাশরিকায়নি ওয়াল মাগরিবাইনি, জাদ্দিল হাসানি ওয়াল হুসাইনি (রাদ্বিআল্লাহু আন্হুমা) মাওলানা ওয়া মাওলাছ্ সাক্বলাইনি, আবিল ক্বাছিম মুহাম্মদ বিন আব্দিল্লাহি নূরিম মিন নূরিল্লাহ। ইয়া আয়য়ূহাল মুশতাকুনা বিনূরি জামালিহী সাল্লু আলায়হি ওয়া সাল্লিামূ তাসলীমা

ফযিলত:-
মনের পবিত্রতা লাভের জন্য ফজরের নামাযের পর ৭বার, আছরের নামাযের পর ৩বার, ইশার নামাযের পর ৩ বার পড়তে হয়। এই দুরূদ শরীফ সর্বদা পড়লে মনের বাসনা পূর্ণ হয়। জুমআর রাতে এ’শার নামায শেষে এই দুরূদ শরীফ ১৮০ বার পাঠ কওে শুলে ইন্শাআল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর জিয়ারত নসীব হবে। ১১ দিন এই আমল করলে মনের আশা পূর্ণ হবে।


 হযরত আলী (রাঃ) এর দুরূদ শরীফ:

আরবি:-
صَلَوَاتُ اللهِ وَمَلَائِكَتِهٖ وَأَنْبِيَائِهٖ وَرَسُلِهٖ وَجَمِيْعِ خَلْقِهٖ عَلىٰ مُحَمَّدٍ وَاٰلِ مُحَمَّدٍ وَعَلَيْهِ وَعَلَيْهِمْ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ

বাংলা উচ্চারণ:-
সালাওয়াতুল্লাহি ওয়া মালাইকাতিহি ওয়া আম্বিয়ায়িহি ওয়া রাসূলিহি ওয়া জামীয়-ই খলকিহি আ’লা মুহাম্মাদিন্ ওয়া আলায়হি ওয়া আলায়হিম আস্সালামু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।


 হযরত মুসা আলায়হিস সালামের দুরূদ শরীফ:

আরবি:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلىٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ خَاتِمِ الْأَنْبِيَاءِ وَمَعْدَنِ الْأَسْرَارِ وَمَنْۢبَعِ الْأَنْوَارِ وَجَمَالِ الْكَوْنَيْنِ وَشَرَفَ الدَّارَيْنِ وَسَيِّدَ الثَّقْلَيْنِ الْمَخْصُوْصِ بِقَابَ قَوْسَيْنِ

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা সায়্যিদিনা মুহাম্মাদিন খাতামুল্ আম্বিয়া-ই ওয়া মা’দানিল আসরারি ওয়া মানবাইল আনওয়ারি ওয়া জামালিল কাওনায়নি ওয়া শরাফাদ্ দা-রায়নি ওয়া সায়য়াদাস্ সাক্বলায়নিল মাখসুসি বিক্বাবা কাওসায়নি।



হাউজে কাউসারের পানি পান করার দুরূদ শরীফ:

আরবি:-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلىٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَعَلىٰ اٰلِهٖ وَاَصْحَابِهٖ وَاَوْلَادِهٖ وَاَزْوَاجِهٖ وَذُرِّيَّتِهٖ وَاَهْلِ بَيْتِهٖ وَاَصْحَارِهٖ وَاَنْصَارِهٖ وَاَشْيَاعِهٖ وَمُحِبِّهٖ وَاُمَّتِهِ وَعَلَيْنَا مَعَهُمْ اَجْمٰعِيْنَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ

বাংলা উচ্চারণ:-
আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা সয়্যিদিনা মাওলানা মুহাম্মাদিন ওয়া আ’লা আ-লিহি ওয়া আসহাবিহি ওয়া আওলাদিহি ওয়া আযওয়াজিহি ওয়া যুররিয়াতিহি ওয়া আহলি বায়তিহি ওয়া আসহারিহি ওয়া আরসারিহি ওয়া আশইয়ায়িহি ওয়া মুহিব্বিহি ওয়া উম্মাতিহি ওয়া আলায়না মা’আহুম আজমাঈন ইয়া আরহামার রাহিমীন।

ফযিলত:-
হযরত হাসান বসরী (রাঃ) বলেন, আল্লাহর যে বান্দা এবং রাসূলের যে উম্মত হাউযে কাউসারের পানি পরিতৃপ্ত সহকারে পান করতে চায়, সে যেন এই দুরূদ শরীফটি পাঠ করে।




রাসূল (সা.) আমাদের ভালোবাসেন। আমাদের গুনাহ মাফের জন্য সবসময় মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। কাজেই রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) প্রতি মুহাব্বত দেখিয়ে আমাদেরও বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করা অবশ্যই উচিত। 
আমরা যখন মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করবো এবং আমাদের গুনাহ মাফের জন্য দোয়া চাইবো তখন দরুদ শরীফ পাঠ করবো। কারণ, মহান আল্লাহর দরবারে মুক্তি ও মাফ চেয়ে মুনাজাত ধরলে, দোয়া করলে তা দুরূদ শরীফ পাঠের উসিলায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের প্রতি রহমত ও সালাম পেশের দরুণ সেই দোয়া কবুল হয়ে যায়। (সুবহানাল্লাহ)

আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার বন্ধুর উপর বেশি বেশি দুরুদ শরীফ পাঠ করার তৌফিক দান করুক। আমিন। ছুম্মা আমিন।




◈ ━━━━━━ ⸙ ━━━━━━ ◈
 

 প্রতিদিন কমপক্ষে নিম্নের আমলগুলো করুন।

>>নিম্নের লিংক ক্লিক করে ফজিলত সম্পর্কে জেনে নিন<<

১/ নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামায পড়ুন এবং অন্যকেও পড়তে উৎসাহিত করুন।

২/ প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করুন। না পারলে কয়েকটি সূরা হলেও পড়ুন। 

৩/ যত বেশি সম্ভব  أَسْتَغْفِرُالله ( আস্তাগফিরুল্লা-হ) পড়ুন। দিনে কমপক্ষে ১০০ বার পড়ুন।

৪/ লা ইলাহা ইল্লালল্লাহ - জিকিরটি বেশি বেশি করুন।

৫/ বেশি বেশি দুরুদ শরীফ (প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ বার) পাঠ করুন।

৬/ প্রতিদিন কিছু না কিছু দান-সদকাহ করার চেষ্টা করুন। সদকায়ে জারিয়া চালু করুন।

 

শেয়ার করুন, বন্ধুদের সাথে ইনশাল্লাহ! দ্বীনি কথা প্রচার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।

ইসলামিক বাংলা টিভি (Islamic Bangla Tv) - এর সঙ্গেই থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আল্লাহ্‌ সুবনাহু ওয়া তায়ালা আমাদের সবাইকে তার আদেশ নিষেধ মেনে চলার তৌফিক দান করুক। আমিন, ছুম্মা আমিন।
#ibtv
#ibtv99

Post a Comment

0 Comments